মূর্খোর্বর মস্তিষ্কের একজন শিক্ষক হিসেবে এখানে আমার আপাত প্রাপ্য কয়েকটা বিষয় উল্লেখ করলাম মাত্র।
তৃতীয় শ্রেণীর একজন সরকারী চাকর হিসেবে এরচে’ বেশী আর কী-ই বা চাইতে পারি-পেতে পারি ? হৃদয়-মনটা যেমন ছোট্ট, আশা-চাওয়া-পাওয়ার প্রস্থটাও তেমনি সংকোচিত।
জাতীয় শিক্ষা নীতি- ২০০৯ (চুড়ান্ত খসড়া) প্রণয়ন কমিটির সদয় অবগতির জন্য আমার নিম্নোক্ত দাবী সমূহ-
১। প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত সকল পর্যায়ের শিক্ষকদের প্রথম শ্রেণীর পদ মর্যাদা প্রদান এবং যোগ্যতা ভিত্তিক বেতন কাঠামো প্রণয়ন, এ লক্ষ্যে শিক্ষকদের স্বতন্ত্র পে-কমিশন গঠন করতে হবে।
২। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জনবল বৃদ্ধি করতে হবে (শিক্ষক, অফিস সহকারী, এম. এল. এস. এস, দপ্তরী, মালী)।
৩। সকল বিদ্যালয়ে শিক্ষক শিক্ষার্থী অনুপাত ১ ঃ ৪০ হতে হবে।
৪। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সকল স্তরে শিক্ষকদের মধ্যে থেকেই পদোন্নতি দিতে হবে।
৫। সি-ইন-এড. প্রশিক্ষণের পাশাপাশি বি.এড./এম.এড. প্রশিক্ষন বাধ্যতামূলক করতে হবে।
৬। জেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের পদমর্যদা আপগ্রেড করতে হবে।
৭। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষার সকল স্তরে যোগ্যতার ভিত্তিতে বিষয় ভিত্তিক নিয়োগ দান করতে হবে।
৮। সরকারী, বেসরকারী পর্যায়ের সকল প্রতিষ্ঠানে ম্যানেজিং কমিটি গঠনে নিম্নোক্ত নীতিমালা অনুসরন করতে হবে-
ক) প্রধান শিক্ষক- (সচিব)- ১জন।
খ) শিক্ষক প্রতিনিধি- ১ জন।
গ) ছাত্র প্রতিনিধি- ১ জন।
ঘ) অভিভাবক প্রতিনিধি- ৭ জন (কমপক্ষে ২ জন মহিলা)
ঙ) বিদ্যানুরাগী- ১ জন।
মোট- ১১ জন
(প্রধান শিক্ষক, বিদ্যানুরাগী, ব্যক্তি ছাড়া সকল প্রতিনিধিকে সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হতে হবে। অভিভাবক ৭ জন প্রতিনিধির মধ্যে যিনি সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত হবেন তিনিই হবেন কমিটির সভাপতি)
৯। ধর্মীয় শিক্ষা, কৃষি শিক্ষা ও তথ্য প্রযুক্তিতে যুগোপযোগী পাঠ্যক্রম তৈরী ও আবশ্যিক বিষয় অর্ন্তভূক্ত করতে হবে।
১০। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলক শিক্ষা ভ্রমণের ব্যবস্থা গ্রহন এবং বিনা ভাড়ায় রেল ভ্রমণের সুযোগ প্রদান করতে হবে।
১১। এনাম কমিশন রিপোর্ট অনুযায়ী শিক্ষক প্রশিক্ষণ মহা বিদ্যালয়গুলোকে বর্তমানে ইন্টারমিডিয়েট সমমান হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে, যাকে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট সমমানে উন্নীত করতে হবে।
১২। শিক্ষক প্রশিক্ষণ মহা বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ আবাসিক ব্যবস্থা করতে হবে।
১৩। বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বুনিয়াদী প্রশিক্ষণ সরকারী টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহন করতে হবে।
১৪। প্রাথমিক শিক্ষা থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত নৈতিক শিক্ষা গ্রহন অত্যাবশ্যক করতে হবে।
১৫। শিক্ষকদের প্রাইভেট পড়ানো এবং কোচিং সেণ্টারের সাথে সংশ্লিষ্টতা বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে।
১৬। প্রথম শ্রেণী থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত গাইড ও নোট বই নিষিদ্ধ করনে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে।
১৭। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজগুলোতে পদন্নোতির সঠিক দিক নির্দেশনা প্রদান করতে হবে।
১৮। শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তার শিক্ষা’র উপর অবশ্যই ডিপ্লোমা / ডিগ্রী গ্রহন করতে হবে।
১৯। চলমান শিক্ষা নীতিতে প্রথম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত চারু ও কারু কলা বিষয়টি বাধ্যতামূলক এবং নবম ও দশম শ্রেণীতে ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে অন্তর্ভূক্ত আছে। কিন্তু জাতীয় শিক্ষা নীতি- ২০০৯ (চুড়ান্ত খসড়া)- তে এ বিষয়ে কোন দিক নির্দেশনা নেই। এমতাবস্থায় উক্ত বিষয়টি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে সংযোজন করতে হবে।
২০। জাতীয় শিক্ষা নীতি- ২০০৯ (চুড়ান্ত খসড়া)- এ মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থায় পঠিতব্য বিষয়াবলী অভিন্ন হওয়ায় মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ধর্মীয় শিক্ষার প্রসার ব্যহত হতে পারে। তাই ধর্মীয় শিক্ষাকে যথাযথ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে।
২১। কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের আর্থিক সুবিধা ও অবকাঠামো বৃদ্ধি করতে হবে। কৃষি ডিপ্লোমাধারীদের উচ্চ শিক্ষা গ্রহনের সুযোগ প্রদান করতে হবে।
২২। তথ্য প্রযুক্তি শিক্ষাকে বাস্তবমূখী ও ফলপ্রসূ করার লক্ষ্যে প্রতিটি বিদ্যালয়ে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে হবে, তা-না হলে স্বপ্নের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন-স্বপ্নই রয়ে যাবে।
মন্তব্যঃ
লেখক বলেছেন:
ধন্যবাদ দিলাম
লেখাজোকা শামীম বলেছেন: ৮। সরকারী, বেসরকারী পর্যায়ের সকল প্রতিষ্ঠানে ম্যানেজিং কমিটি গঠনে নিম্নোক্ত নীতিমালা অনুসরন করতে হবে-
ক) প্রধান শিক্ষক- (সচিব)- ১জন।
খ) শিক্ষক প্রতিনিধি- ১ জন।
গ) ছাত্র প্রতিনিধি- ১ জন।
ঘ) অভিভাবক প্রতিনিধি- ৭ জন (কমপক্ষে ২ জন মহিলা)
ঙ) বিদ্যানুরাগী- ১ জন।
মোট- ১১ জন
……………………………………………………………………..
এই ১১ জনের মধ্যে যারা থাকবেন তারা প্রত্যেকে গ্রাজুয়েট হবেন।
লেখক বলেছেন:
হুমমম। এটা বড় আশার কথা। কিন্তু এরকম পাওয়াটা দুষ্কর। কারন-
গ) ছাত্র প্রতিনিধি- ১ জন।
ঙ) বিদ্যানুরাগী- ১ জন।
এখান থেকে গ্রাজুয়েট সবসময় না-ও পাওয়া যেতে পারে।
আর
ঘ) অভিভাবক প্রতিনিধি- ৭ জন (কমপক্ষে ২ জন মহিলা)
এর মধ্যেও সবসময় না-ও পাওয়া যেতে পারে। আর পাওয়া গেলেও কখনো কখনোও কিছু গ্রাজুয়েট মূর্খও থাকেত পারে।
মূর্খোর্বর মস্তিষ্কের একজন শিক্ষক হিসেবে এখানে আমার আপাত প্রাপ্য কয়েকটা বিষয়ের উল্লেখ করেছি মাত্র।
আপনার মতো গুণী ব্যক্তির সুচিন্তিত মন্তব্যে এই পেইজ ধন্য হউক।
ধন্যবাদ আপনাকে।
লেখক বলেছেন:
শুধু মূর্খই নয় কিছু কিছু ক্ষেত্রে গ্র্যাজুয়েট মূর্খও দেখতে পাই।
কী আর করার ? প্রশ্রয়তো আমরাই দেই, না-কি !
আই আনাম বলেছেন: বর্তমানে নিম্ন মাধ্যমিক শিক্ষাস্তরে কৃষি শিক্ষা বাধ্যতামূলক হলেও তা একেবারেই তত্ত্বীয়। এটি সম্পূর্ণ ব্যবহারিক হওয়া উচিৎ।
ধর্মীয় শিক্ষা নয় বরং ধর্ম শিক্ষাকে প্রাথমিক স্তরে বাধ্যতামূলক করা উচিৎ। সকল ধর্মের তুলনামূলক বিষয়গুলো সেখানে থাকবে।
জাতীয় শিক্ষা নীতি- ২০০৯ (চুড়ান্ত খসড়া)- এ মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থায় পঠিতব্য বিষয়াবলী মোটেও অভিন্ন নয়। প্রাথমিক শিক্ষায় একটি ধারা থাকলেও মাধ্যমিক স্তরে সাধারণ শিক্ষা, মাদ্রাসা শিক্ষা ও কারিগরি শিক্ষার কয়েকটি বিষয় নৈর্বাচনিক থাকবে যদিও বাংলা, ইংরেজি, গণিত, তথ্যপ্রযুক্তি ও বাংলাদেশ স্টাডিজ বিষয়ে অভিন্ন পাঠ্যক্রম থাকবে।
লেখক বলেছেন:
কৃষি শিক্ষা বিষয়ে আপনার সাথে একমত। আমি ওই কথা গুলোই বলতে চেয়েছি। হয়তো আপনার মতো বুঝাতে পারিনাই। তবে “কৃষি শিক্ষা বাধ্যতামূলক হলেও তা একেবারেই তত্ত্বীয়”- এখানে আমি বলতে চাই প্রথম শ্রেণী থেকেই তা বাধ্যতামূলক ও ব্যবহারিক হওয়া উচিত।
ধর্মীয় শিক্ষা বলতে বুঝিয়েছি যেকোন ধর্মের শিক্ষাকে। সংগে যোগ করা যায়- “সকল ধর্মের তুলনামূলক বিষয়গুলো সেখানে থাকবে।”
“জাতীয় শিক্ষা নীতি- ২০০৯ (চুড়ান্ত খসড়া)- এ মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থায় পঠিতব্য বিষয়াবলী অভিন্ন”- বলেছি এই কারনে যে বাধ্যতামূলক বিষয়গুলি অভিন্ন। কিছুমাত্র নৈর্বাচনিক বিষয় ভিন্ন হলেই তাকে ভিন্ন পাঠ্যক্রম না বলার যথেষ্ঠ কারন আছে। এখানে মূলকথা বলেছি মাদ্রাসা, আরবী, কোরআন, হাদীস সংশ্লষ্ট যেকোন ২টি বিষয় বাধ্যতামূলক করতে। যাতে যারা ধর্ম বিষয়ে পণ্ডিত হতে না গিয়ে যারা কৃষি, বিজ্ঞান বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা নিবেন তারাও যেন এ বিষয়ে সম্যক ধারনা রাখতে পারি। এতেকরে নৈতিক শিক্ষা বিষয়ের উপর চাপ কিছুটা কমবে বৈ বাড়বেনা।
ধন্যবাদ আপনাকে সুস্পষ্ট মতামতের জন্য।
ইষ্টিকুটুম বলেছেন: আপনাকে উদ্দেশ্য করে বলছিনা, “জাতীয় শিক্ষানীতি-২০০৯ এর চূড়ান্ত খসড়া” প্রসন্গে আমাদের ক্লাসে ম্যাডাম বলছিলেন, “লাইনটিতে ভুল আছে।সেটা যদি চূড়ান্ত-ই হবে তাহলে খসড়া কেন?” …..সে যাক-গে, আমার নিজের কথা টেনে আনার জন্য ক্ষমা করবেন।
আর, এই দাবীগুলো যৌক্তিক ই মনে হচ্ছে, অবান্তর নয়তো!!
ভালো থাকবেন, প্রিয় শিল্পী।
লেখক বলেছেন:
এই জীবনে আর বড় হওয়ার কোনই রাস্তা নাই, সম্ভাবনা নাই। তাই ও পথটাও মাড়ানোর দুঃসাহসও মনে জাগেনা।
ভালো থাকবেন।
লেখক বলেছেন:
দিননা আপনিই কিছু যোগ করে, কৃতার্থ হই।
লেখক বলেছেন:
দেখলাম।
লেখক বলেছেন:
আপি,
আমি ভালো আছি, তবে খুউউউউব-ই ব্যস্ত সময় যাচ্ছে, সামনে পরীক্ষা অতি নিকটে।
লাল, নীল, ও হলুদ এগুলো মৌলিক রঙ তাই লাল, নীল, হলুদ ও সাদা পৃথিবীর অন্যকোন রঙ মিশিয়ে তৈরী করা যায়না। অন্য সব রঙই অন্যান্য রঙ মিশিয়ে তৈরী করা যায়। আর সব রঙ তৈরী করতেই লাল, নীল, হলুদ ও সাদা -এর সবগুলি অথবা যেকোনটা লাগতে পারে।
ভালো থাকবেন,
ধন্যবাদ জানবেন।
ইষ্টিকুটুম বলেছেন: তোমার স্ট্যাটাসে লেখা…” পাওয়া যাবে – ০১৭১১ ৩৫৩ ৩৬৩” , কিন্তু নাম্বারটি সারাক্ষন বন্ধ থাকলে কেমনে পাওয়া যাবে?
ভালো আছ?
লেখক বলেছেন:
আপনি হয়তো এখনোও জানেন না যে আমার ফোনটি হারিয়ে গেছে। আর সম্মুখাগত পরীক্ষার ঝামেলার কারনে তা উঠাতেও পারছিনা, কারন সিম এর কাগজপত্রগুলো এখন আমার থেকে প্রায় ৬০০ কিঃমিঃ দূরে।
আমি ভালো নেই।
অপ্সরা বলেছেন: ভাইয়া,
কোথায় আছো?? কেমন আছো???দেখিনা কেনো একদম তোমাকে??
লেখক বলেছেন:
আপি,
হোস্টেলেই আছি।
সর্বোপরি ভালো নেই।
সামনে পরীক্ষা, প্রেস্টিজ ইস্যু, তাই দম ফেলার ফুসরত পাচ্ছিনা।
তবে মাঝে মধ্যি এখানে আসি ঠিক-ই কিন্তু পড়া ছাড়া আর কিছু করা হয়না।
ধন্যবাদ আপনাকে আমার খোঁজ নেবার জন্য,
অসংখ্য ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন।
লেখক বলেছেন:
শুভেচ্ছা আপনাকেও, তবে ঈদের শুভেচ্ছা কেমনে জানাই বলুন !
ঈদের আগের সারা রাত কাজ করে ফজর আদায় করে ঘুমালাম। উঠলাম সন্ধ্যা ছুঁই-ছুঁই। একটু চা খেয়ে প্রেসারটা মেপে দেখি বেশী রকম হাই হয়ে আছে দশ মিনিটের মধ্যেই আবার ঘুমের রাজ্যে, উঠলাম আজ ভোর দশটায়। সো আমি ঈদ পাবো কোথায় আর ঈদের শুভেচ্ছা জানাবো কোত্থেকে ?
ভালো থাকবেন যেন।
১. ১৬ ই অক্টোবর, ২০০৯ রাত ১২:০৩০