২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ১১:০৯
ইদানিং শিক্ষক নামের কিছু কিছু ইতর শ্রেণির প্রাণীদের কারণে মাঝে মাঝে নিজেকে মনে হয় রাস্তার একটা মরা ছাগলেরও কিছু দাম আছে, কিন্তু আমারতো তা-ও নাই ! লজ্জায়, ঘৃনায় নিজের গা নিজের কাছেই গন্ধ করে। কারণ আমিতো ওদের পেশাতেই আছি, ঐ পেশাতেইতো আমার রুটী-রুজী চলে !
শিক্ষকতা নাকি একটা মহান পেশা। এই যুগে মানুষ এটা কেন বলে আমি তা ভেবে পাইনা। ছোট সময় দেখতাম আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণকে দারিদ্রতার চরম কষাঘাতে পিষ্ঠ হতে। কয়েকমাইল দূর থেকে ১০/১৫ বছরের পুরানো ভাঙ্গা-চোড়া সাইকেলে চেপে আসতেন। সাইকেলের ব্রেক নাই, বেল নাই। সীটের উপর নরম কিছু নাই। সীটের উপর আল-আমীনের গ্লুকোজ আর সুপার বিস্কুটের কয়েক টুকরা কাগজ আর পলিথীন পেঁচিয়ে পাটের দড়ি দিয়ে মোড়ানে। পড়নে নরসিংদির ভাগলপুরী মোটা সবুজ লুঙ্গী। তারও আবার কয়েক জায়গায় আরশোলায় চেটেছে। দু’এক জায়গায় সাদা কিংবা কালো সুতায় রিপু করা . . .।
তখন ভাবতাম স্যাররা বুঝি খুব কৃপণ হয়। এতটাকা বেতন পেয়েও তাদের অবস্থা এমন কেন ? তখন কৌতুহল বশতঃ স্যারদের ছেলে-মেয়ে সহপাঠীদেরকে জিজ্ঞাসা করতাম- স্যার আমাদেরকে পড়িয়ে কতটাকা বেতন পানরে ? শুনেছি সর্ব সাকুল্লে ২৮ শ’ টাকা। -এ হচ্ছে তখনকার গ্রাম্য শিক্ষকদের চিত্র। এত কিছুর পরও কখনো দেখিনি তাদের নৈতিক কোন স্খলনের দৃশ্য। শুনিনি কোন দোকানে বাকীর খাতায় তাদের নাম আছে। এখন কিছুটা হলেও বুঝতে পারি কেন তাঁরা অমন ছিলেন। ওটা আসলে কৃপণতা নয়। ওটাই দারিদ্রতা। আসল দারিদ্রতা। তাঁরা কাউরো কাছে হাতও পাততে পারতেন না। পারেন না। লোক লজ্জার ভয়ে তাঁরা অনেক কিছুই চেপে গেলেও আমাদের কচি মনে তা কিছুটা হলেও ধরা দিতো। -এই হচ্ছে আদর্শ-মহান পেশার স্বরূপ। যাঁদেরকে দেখলে, যাঁদের কথা স্মরণ হলে শ্রদ্ধায় মাথা নুইয়ে আসে এখনোও।
আসলে প্রত্যেকটি পেশাইতো সেবামূলক আর সু-মহান। শুধুমাত্র শিক্ষকতা পেশাটা সামান্য একটু ব্যতিক্রম। এ পেশাতে উচ্চাকাঙ্খা দোষের কিছু নয়।
তবে মাঝে-মধ্যে মনকে শুধু এই বলে প্রবোধ দেই যে- সমাজের একজন নিম্নশ্রেণীর পেশাদার থেকে উচ্চ শ্রেণীর পেশাদার ব্যক্তিমাত্রই তার পেশা সংক্রান্ত উচ্চাকাঙ্খা থাকতে পারে। একজন ঝাড়ুদার, জুতা সেলাইকারীও আশা করে দিনে তার আরোও বেশী আয় হোক। তেমনি একজন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারও তা চান। এ চাওয়াতে কোন দোষ দেখিনা। একজন ডাক্তারের এ উচ্চাকাঙ্খায় বলতে পারি তিনি মনে মনে চাচ্ছেন দেশে রোগীর পরিমাণ আরোও বেড়ে যাক, একজন উকিলের চাওয়া- দেশে আরোও মামলা মোকাদ্দমা বেড়ে যাক, সহিংসতা বাড়ুক তাতে তাঁর ইনকাম আরোও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে। এমনটা সকল পেশার বেলায়ই প্রযোজ্য। কেবলমাত্র ব্যতিক্রম শিক্ষকতার পেশায়। একজন শিক্ষক চান তাঁর বিদ্যালয়ে, কোচিং সেন্টারে ছাত্র-ছাত্রী আরোও বৃদ্ধি পাক। এতে তাঁর ইনকাম বাড়বে আরোও। যেমনটা সবাই চান। কিন্তু তাঁর এ চাওয়ায় কল্যাণ নিহিত দেশ জাতি সমাজ রাষ্ট্রের। তাঁর এ চাওয়া সমাজ রাষ্ট্রকে আলোকিত করার জন্যে। এ আশাটা তাঁর যত দ্রুত আর বেশী বেশী পূরণ হবে দেশ জাতির ততই মঙ্গল ততই আলোকিত হবে। এ ব্যতিক্রমী পেশার তফাতটা সেখানেই. . .
খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা এ পাঁচ মৌলিক অধিকারের মধ্যে মানুষকে সভ্য ও দায়িত্বশীল করে গড়ে তোলে সু-শিক্ষা। সু-শিক্ষাই পারে মানুষকে তার কাঙ্খিত গন্তব্যে পৌঁছে দিতে। আমাদের দেশের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় যা রয়েছে তা হলো- শহর লেভেলে ছেলে মেয়েরা নার্সারী, কেজি স্কুল পার হয়ে ১ম শ্রেণীতে ভর্তি হয় এবং তা হতে পারে কোন কিন্ডার গার্টেন বা প্রাথমিক বিদ্যালয় বা সরকারী / বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়। কিন্তু গ্রাম-গঞ্জে সরাসরি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১ম শ্রেণী থেকে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত অধ্যয়ন করে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার মানের কথা বলতে চাই না কারণ এ ব্যাপারে অনেক গবেষণা হয়েছে এবং ফলাফল সম্পর্কে অনেকেই ওয়াকিবহাল আছেন। আমি মাধ্যমিক বিদ্যালয় সম্পর্কে কিছু বলতে চাই। মাধ্যমিক পর্যায়ে- নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ – ৮ম শ্রেণী, মাধ্যমিক পর্যায়ে ৬ষ্ঠ – ১০ম শ্রেণী এবং অনেক উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তবে নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় সমূতে শিক্ষার ধারা ও মান সম্পর্কে আমি আমার একান্ত কিছু পর্যালোচনা তুলে ধরছি। প্রথমে আমরা দেখি মাধ্যমিক পর্যায়ে যারা শিক্ষা প্রদান করেন তাদের কী অবস্থা ?
মাধ্যমিক পর্যায়ে সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠান থাকায় এখানে নিয়োগ প্রক্রিয়ায়ও রয়েছে ভিন্ন ধারা। সরকারী পর্যায়ে একটা নির্দিষ্ট যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষক / শিক্ষিকা নিয়োগের ধারা প্রচলিত আছে। বর্তমানে চার বছরের অনার্স বা তিন বছরের অনার্স ও মাস্টার্স পাশ এবং গ্র্যাজুয়েশন সহ বি.এড. পাশ নূন্যতম যোগ্যতা ধরে ইন্টারভিউয়ের (লিখিত + মৌখিক) মাধ্যমে নিয়োগ প্রদান করা হয়ে থাকে। গ্র্যাজুয়েট বি. এড. ধারী যে সকল শিক্ষক / শিক্ষিকা নিয়োগপ্রাপ্ত তাঁরা শিক্ষকতা পেশাকে প্রথম থেকেই মানিয়ে নে’য়ার চেষ্টা করে থাকেন। কারণ অধিকাংশই এ লক্ষ্যই বি. এড. কোর্সটা করেছে। কিন্তু যে সকল শিক্ষক / শিক্ষিকা চার বছরের অনার্স বা তিন বছরের অনার্স ও মাস্টার্স পাশ করে সরকারী বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়ে থাকেন তাঁদের বয়স সীমা ৩০ / ৩২ বছর পর্যন্ত শিক্ষকতায় মনোনিবেশ করতে পারেন না। তারা শুধু হতাশায়েই ভুগেন না, কখনো কখনোও তাদের আচরণও অস্বাভাবিক হয়ে থাকে। তাঁদের চিন্তা-চেতনা থাকে শুধু কলেজ শিক্ষক / অন্যান্য ক্যাডার সার্ভিসে নিয়োগ পাওয়া নিয়ে। কারণ মাধ্যমিক পর্যায়ের সহকারী শিক্ষকগণ এখনো তৃতীয় শ্রেণীর মর্যাদায় পড়ে রয়েছেন। যদিও উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও পি.টি.আই ইনস্ট্রাক্টরগণ পূর্বে সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকগণের পদমর্যাদা ভোগ করলেও এখন তারা প্রথম শ্রেণী পদমর্যাদা ভোগ করছেন।
সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকগণ এখনো একই পর্যায়ে থেকে যাওয়ায় চাকুরীর উচ্চমূল্যের বাজারে শুধু নামকাওয়াস্তে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন শুধু চাকুরীকে টিকিয়ে রাখার জন্য। এ হতাশার বহিঃপ্রকাশ ঘটে বিভিন্ন ভাবে। কেউ কেউ শ্রেণীকক্ষে পাঠদানের পরিবর্তে প্রাইভেট টিউশনীতে বেশী সময় ব্যয় করেন। কারণ তাঁরা হতাশাকে অর্থ উপার্জনের মাধ্যমে ভুলতে চান। আমি তাঁদের সমালোচনা করছি না- তাঁদের অবস্থাটা তুলে ধরছি। তাঁরা এ পথে যেতে বাধ্য হন। কারণ তাঁদের নূন্যতম চাহিদাটুকুও পূরণ করার মতো বেতন তারা পান না। ফলে সরকারী স্কুলের শিক্ষক / শিক্ষিকাগণ পরিবারের নূন্যতম চাহিদা পূরণের জন্য এ ধরণের ভিন্ন পথ বেছে নেন। শিক্ষকগণ ভালোভাবে জীবন যাপন করুন তা কিন্তু অনেকেই চায় না। ক’দিন আগেই একটি পত্রিকা ও এই ব্লগেই দেখলাম- শিক্ষকগণের প্রাইভেট টিউশনী সম্পর্কে একটি লেখা। জনৈক শিক্ষক না-কি মাসে ২ লক্ষ টাকা ইনকাম করেন। সাংবাদিক ও ব্লগার ভাইকে বলতে ইচ্ছে করে- কতিপয় হাতে গোনা এ ধরণের কিছু শিক্ষক ছাড়া যখন দেশের অধিকাংশ শিক্ষক তাঁর পরিবারের নূন্যতম চাহিদা পূরণ করতে ব্যর্থ হন, কই তাঁদেরকে নিয়েতো কখনো পত্রিকার শিরোনাম করেন না, তাঁদেরকে নিয়েতো ব্লগে কোন লেখা চোখে পড়েনা ? আপনারা শুধু নেগেটিভ চিন্তাটাই করলেন ? পজেটিভ হিসেবে আপনার কি বলা উচিত ছিলোনা শিক্ষকগণকে যে নূন্যতম বেতন ভাতা দিয়ে বেঁধে রেখেছেন তা অন্যায় ও অমানবিক ? আশা করি, সাংবাদিক ও ব্লগার ভাইয়েরা ভবিষ্যতে এ পজেটিভ চিন্তাটা করার অবসর পাবেন। বেতন, ভাতার এই দৈন্য দশায় কোন ভালো শিক্ষক এখানে থাকতে চাননা। সব সময় তাঁদের একই চিন্তা কখন এ চাকুরী থেকে মুক্তি পেয়ে কোন সুপিরিয়র চাকুরী যোগাড় করতে পারবেন।
বেসরকারী বিদ্যালয়ের দশাতো আরোও করুণ। এখানে সরকার থেকে বেতনের যে অংশ দে’য়া হয় তা সরকারী বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণের বেতনের চে’ও অনেক কম। তারা কীভাবে জীবন যাপন করবেন ? তাঁরাও বাধ্য হয়ে শ্রেণী পাঠের দিকে মনোযোগী না হয়ে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে টিউশনীর পথ বেছে নেন। এটাকে আমি এখন আর দোষ হিসেবে দেখিনা। কারণ তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য সরকারী তরফ থেকে কোন উদ্যোগ নে’য়া হয়নি। সরকার হুমকি ধামকি দিয়ে শিক্ষকদেরকে শুধু নাজেহালই করে থাকেন, সমস্যার কিন্তু সমাধান করেন না।
শিক্ষকরা যে শুধু এভাবেই বঞ্চিত হচ্ছেন তা নয়। সরকারী অফিস, আদালত, ব্যাংক, বীমা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ সপ্তাহে দুইদিন ছুটি ভোগ করছেন এমনকি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তিনি নিজেও দুই দিন ছুটি ভোগ করছেন আর শিক্ষকগণ সপ্তাহে ছুটি ভোগ করছেন একদিন। ব্যাংক যেখানে একদিন বন্ধ থাকলে সরকারের অনেক ক্ষতি হয়ে থাকে সেই ব্যাংকও দুই দিন বন্ধ থাকে। শুধু কি তাই ? কিছু কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে যেমন- বুয়েট, ডুয়েট ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে সপ্তাহে দুইদিন ছুটি থাকে, সেখানে মাধ্যমিক পর্যায়ের ছোট ছোট শিশুদের জন্য দুইদিন ছুটি দিয়ে শারীরিক ও মানসিক বিকাশের সুযোগ দিচ্ছেননা, যা তাদের জন্য একান্তই প্রয়োজন ছিলো। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সপ্তাহে দুইদিন ছুটির প্রয়োজন হলে শিশুদেরতো একদিন পরপর ছুটি হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু শিশুদের দিকে না তাকিয়ে, আছেন শুধু শিক্ষকদের কীভাবে খাটানো যায় সেই ধান্দায় ! বছর ঘুরতে না ঘুরতেই বিভিন্ন নির্বাচন ডিউটি, আদম শুমারী, বিভিন্ন ধরণের শুমারী, কার বাড়ী টিউবওয়েল নাই, কার বাড়ী কাঁচা পায়খানা কয়টা, পাকা কয়টা ইত্যাদি গুনানো।
আমরা শিক্ষকরাওতো আগের থেকেই গো-বেচারা, সরকার যা বলেন তা-ই মাথা পেতে নেই। নিতেও বাধ্য হই। কোন দ্বিধাবোধ করি না, তার কারণও রয়েছে ঢের। যেমন- সরকারী বিদ্যালয়ে সমূহের মধ্যে যারা রাজধানী কিংবা সিটি কর্পোরেশনের আওতায় চাকুরী করেন- তারা কখনোও সরকারের মতের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে চান না, করেন না। সরকারী-বেসরকারী বিদ্যালয় সমূহের শিক্ষকদের যে কয়টা সংগঠন আছে তার প্রত্যেটির কর্তাব্যক্তি, সভাপতি, সহঃ সভাপতি, সম্পাদাদ, যুগ্ম সম্পাদক, সহঃ সম্পাদক ইত্যাদি পদগুলো রাজধানীর ঐ প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়গুলোরই শিক্ষক। তাঁরা কিভাবে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের শিক্ষকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দাবী আদায়ে সচেষ্ট হবেন ? প্রত্যন্ত এলাকায় চাকুরীরত অবস্থায় সরকারের বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে যে শিক্ষকটির মুখে প্রতিবাদের ঝড় বইতো সে-ই কোনক্রমে ঘুষ বাণিজ্যের বিনিময়ে রাজধানীর বুকে কোন বিদ্যালয়ে ঠাঁই নেন। শত অব্যবস্থাপনাতেও তার মুখে এখন আর রা’ শব্দটিও নেই। তারা জানেন প্রতিবাদ করলে তাদেরকে রাজধানী কিংবা সিটি কর্পোরেশনের বাইরে বদলী করে দেবে। এই ভয়ে সরকারী স্কুলের শিক্ষগণ সব সময় বদলী আতঙ্কে থাকে। এ অবস্থা আমার বেলায় হলে আমার করণীয়ও হয়তো তাই হতো। হয়তো এ লেখারও অবতারণা হতো না। কর্তৃপক্ষের রোষানলের ভয়ে তাঁরা সর্বদা থাকে তটস্থ।
সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কোন নিয়মনীতি নেই। সরকারী চাকুরীর কোন বিধান এখানে মানা হয়না। অতীতে হয়নি কোনদিন। কেহকেহ তার সুবিধাজনক বিদ্যালয়ে পোস্টিং নিয়ে থাকছে আজীবন। আবার কেহ জীবন ভর অসুবিধার মধ্যে থেকে কোন দিনই সুবিধাজনক স্থানে বদলী হতে পারছেন না। এ সকল অনিয়মের দোলাচলে সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো চলছে।
ওদিকে সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক থেকে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে প্রমোশন পাওয়া সে তো সোনার হরিণ ! একজন শিক্ষক সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পেয়ে সারা জীবন এক পদে চাকুরী করেই পেনশনে যান। অথচ অন্য বিভাগগুলোতে তারই কোন প্রতিবেশী সর্বনিম্ন পদে যোগদান করে এল.পি.আর. -এ যান সর্বোচ্চ পদ মাড়িয়ে। যদিওবা অনিয়মের বেড়াজালে কদাচিত কাউরো কপালে পদোন্নতি জোটে তা-ও দেখা যায় শত অভিযোগের পাহাড়।
সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ পদ- ডিজি, ডাইরেক্টর বা ডিডি প্রত্যেকেটি পদেই আছেন কলেজ শিক্ষক। এখানে এসে তারা শুধু কলেজের কথাই চিন্তা করেন। মাধ্যমিক পর্যায় নিয়ে চিন্তা করার অবসর তাঁরা পান না। তাঁরা পদের ও নিজের সুবিধাগুলো আদায়ের পর এল.পি.আর. -এ চলে যান। মাধ্যমিক পর্যায় নিয়ে ভাববার ফুরসত ও সময় তাঁদের কোথায় ? মাঝে মাঝে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকদের গালাগালীও শুনতে হয়। যেমন- কর্ম কমিশনের জনৈক চেয়ারম্যান তিনি কথায় কথায় বলেন সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ তৃতীয় শ্রেণীর। তারা কীভাবে সহকারী প্রধান শিক্ষকের ১ম শ্রেণীর পদ মর্যাদা পাবেন ?
বছর তিন / চারেক আগে একবার বদলীর দরখাস্ত নিয়ে দেখা করতে যাই একজন সচিব মহোদয়ের সাথে। যাওয়া মাত্রই লজ্জায় রুম থেকে বেরিয়ে আসি, যখন দেখি আমার জন্য অপমানিত হচ্ছেন তিনি, যিনি আমাকে নিয়ে গেছেন। পিতৃ স্থানীয় লোকটিকে যখন বলতে শুনি- কী সব আজে বাজে তৃতীয় শ্রেণীর লোক ধরে নিয়ে এসেছেন বদলীর জন্য ? এসব গরু ছাগল মাস্টারদের বদলীর জন্য আমাকে বলবেন না। চাকুরীর বয়স ২ বছর পূর্ণ হোক দরখাস্ত দিলে নিয়মানুযায়ী এমনি বদলী হতে পারবে। তখন পর্যন্ত অবশ্য আমার সাথে যোগদান করা ১১ জনের মধ্যে ৭ জনেরই বদলী হয়েছিলো। ৫ বছর পর আজ অবধি আমার বদলীটা হয়নি। নিজের প্রতি, পেশার প্রতি, চাকুরীর প্রতি, শিক্ষকতার প্রতি একরাশ ঘৃনায় ঘিন ঘিন করা দেহটা নিয়ে ফিরে এসেছিলাম। প্রশ্ন জাগে- সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকগণ কি তাঁরা নিজে নিজেই তৃতীয় শ্রেণীর হয়েছেন ? না-কি তাঁরা সরকারের অব্যবস্থাপনার শিকার ?
১৯৭৩ সনে জাতীর জনক, বঙ্গবন্ধু সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় সমূহের সহকারী শিক্ষকগণকে ২য় শ্রেণীর পদমর্যাদা দিয়ে কিছু কিছু শিক্ষকগণের নাম গেজেট নোটিফিকেশন করেছিলেন। যা পরবর্তী সরকার এসে এ পদ মর্যাদাটুকুও বাতিল করেন। তাহলে এ দোষ কার ? সহকারী শিক্ষকগণের, না-কি নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানের ? এ সকল অনিয়মের মধ্যে থেকে সরকারী মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকগণ হতাশায় ভুগতে ভুগতে এক সময় নিজেকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে, শ্রেণীতে পাঠদানের পরিবর্তে ঝোঁকে পড়েন প্রাইভেট টিউশনীতে। এটাও আবার তাঁদের নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ ভালো চোখে দেখেন না। আমি বলতে চাই- এর একটা সুষ্ঠু সমাধান হওয়া প্রয়োজন। নতুবা এক সময় এ অনিয়মগুলো মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার মান আরোও দূর্বল করে দিবে। মাধ্যমিক পর্যায়েই ছেলে-মেয়েদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বেশী ঘটে থাকে। এ সময়টুকু অযত্নে অবহেলায় চলে গেলে পরবর্তীতে তা শোধরানোর উপায় থাকে না।
আর বেসরকারী বিদ্যালয় সমূহের অবস্থাতো আরোও করুণ। এ পর্যায়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাগণের একেবারে নূন্যতম চাহিদার দিকেও সরকারের নজর আছে বলে মনে হয়না। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনৈক অতিরিক্ত সচিব কথায় কথায় বলতেন বেসরকারী শিক্ষকগণের এম.পি.ও. কেটে দিবেন, স্কুল বন্ধ করে দিবেন। তিনি কারোও বক্তব্য শুনতেন না। তিনি নিজের ঢোল নিজেই পেটাতেন। কেউ কোন প্রশ্ন করলে তিনি বলতেন- আমাদের কর্মচারীদের একজন পিয়ন যে সুযোগ সুবিধা ভোগ করেন, বাংলাদেশের একজন কৃষক ও শ্রমিক কি সে সুবিধা ভোগ করছেন ? কাজেই আপনারা ভালো আছেন। বেতন ভাতাদি নিয়ে বা সুযোগ সুবিধা নিয়ে কোন কথা বলবেন না। -এ হলো বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের হালচাল। বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের বাড়ী ভাড়া বাবদ প্রদান করা হয় ১০০/- টাকা। যা দিয়ে এ উচ্চ মূল্যের বাজারে কিছু চিন্তা করা যায় কি ?
দেশের অধিকাংশ সরকারী বেসরকারী বিদ্যালয়ে শিক্ষকের অপ্রতুলতা। সরকারী বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক স্বল্পতার কথাতো সেই আদিকাল থেকেই শুনে আসছি। শিক্ষক স্বল্পতার কারেণ বাড়তি একটা চাপ পড়ে স্বল্প সংখ্যকদের উপরে। অনুপস্থিত শিক্ষকের অভাবটা কোনদিনই পূরণ হয়না শিক্ষার্থীদের। তদুপরি অধিকাংশ শিক্ষককেই দেখা যায় অনেক দূর থেকে জার্নি করে বিদ্যালয়ে পৌঁছায়, কোনমতে হাজিরা দেয়। আমার কর্মস্থলে ২৭ পদের বিপরীতে আমরা আছি মাত্র ১৪ জন। এঁদের মধ্যে ৭ জনই প্রতিদিন ৫ ঘন্টা করে ব্যয় করেন যাতায়াতে। বাড়ীর শত ঝামেলা মাথায় নিয়ে এত কষ্ট করে রোজগার করে যদি পরিবারে সময়ই না দিতে পারলাম তাহলে আর চাকরী-বাকরী করা কেন ? অনেকেই আবাসিক। যারা আবাসিক তাঁরা পারিবারীক, অর্থনৈতিক নানাবিধ ঝামেলায় থাকেন। এমতাবস্থায় তাঁদের পক্ষে পাঠদানে মন বসানো বড় কঠিন। নানা ঝামেলা নিয়েও অনেক বয়োঃবৃদ্ধ শিক্ষককে আবাসিক থাকতে হয়। তাদের পক্ষে কী করে সম্ভব পাঠদানে মনোযোগ দে’য়া ? সহকর্মীদের মধ্যে বয়োঃবৃদ্ধ ক’জনকে দেখি এই শেষ বয়সে নিজ হাতে রান্না করতে।
আরোও কথা আছে- কোন বিদ্যালয়ের কোচিং ফি নিয়ে এস.এস.সি. পরীক্ষার্থীদের কোচিং করালে কর্তৃপক্ষ জ্বলে যান। কোচিং ফি নে’য়া যাবে না। বিনামূল্যে কোচিং করাবেন। বড় বড় উপদেশ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারী করে দেন- কেহ কোচিং ফি নিলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নে’য়া হবে। কোন কোন বিদ্যালয় প্রধান কর্তৃপক্ষের চোখ রাঙ্গানীকে ভয় না পেয়ে স্বাভাবিক ভাবেই কোচিং ফি নিচ্ছেন এবং তাদের ফলাফল দেশের সর্বোচ্চদের কাতারে দাঁড়ায়। ফলাফল যখন ভালো হয় তখন তার ফায়দা লুটে নিতে ঠিকই ভুল করেন না কর্তৃপক্ষ। প্রধান অতিথি সেজে তখন বড় বড় বক্তৃতা প্রদান করেন। এ অবস্থা চলতে দে’য়া ঠিক হবেনা। তবে সবসময়ই কামনা করি প্রাইভেট ও কোচিংমুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা।
শিক্ষা অধিদপ্তরতো দূর্নীতি আর ঘুষখোরের আখড়া। ক’দিন আগেই দেখলাম- মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ঝটিকা অভিযানে সেখানে যান ঘুষখোর ধরতে। তাঁর মতো এত বড় মানের একজন মন্ত্রীর পক্ষে এভাবে ঘুষখোর ধরা কতটা সম্ভব ? যদিও জেনেছি সেদিন একজনকে হাতে নাতে ধরেই ফেলেছেন। এতো এতো সতর্কতা সত্বেও মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় নিজেই যেখানে হাতে নাতে ঘুষখোর ধরতে পারেন সেখানকার ঘুষ বাণিজ্যের অবস্থাটা সহজেই অনুমান করা যায়। এক সময় আমার মাথায় উঁকুন এত বেশী ছিলো যে শরীরে- চোখের ভ্রুতেও তা পাওয়া যেত। ঠিক যেমনটি হয়েছে শিক্ষকদের সর্বশেষ আশ্রয়স্থল- শিক্ষা অধিদপ্তর- শিক্ষা ভবন। তাই এদেরকে চিরুনীর আওতায় নে’য়াই যুক্তিযুক্ত। বিষয়টি যে শুধু শিক্ষা ভবনের বেলায় প্রযোজ্য তা নয়। সারা দেশের সবক’টি আঞ্চলিক উপ-পরিচালকের কার্যালয়েরও অবস্থা একই। সরকারের আন্তরিক সদিচ্ছা থাকলে এ অবস্থা থেকে উত্তরণ সম্ভব। এ লক্ষ্যে সারাদেশের ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে মাঠে নামা উচিত।
বর্তমান সরকার ডিজিটালাইজড সরকার। অথচ শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা শিক্ষা অধিদপ্তরে কিংবা এদের কোন সাইটে এমন কোন ব্যবস্থা নাই, যেখানে শিক্ষক কিংবা সংশ্লিষ্ট ভুক্তভোগীরা গোপনে বা প্রকাশ্যে তাদের অভিযোগগুলো জানাবে, তাদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করবে, যা সবাই দেখতে পাবে।
তবে তার আগে চাই শিক্ষা অধিদপ্তর ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শুদ্ধি অভিযান তথা পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের জোরালো, বাস্তব প্রয়োগ।
কারণ, প্রায় ৫ বছরের অভিজ্ঞতায় আমার মতে মাউশি’র গুণগত মান বৃদ্ধিতে, ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সবার আগে প্রয়োজন এর সবকটি ভবণের পলেস্তারা চটিয়ে ফেলে দিয়ে আবার নতুন করে ফ্রেস বালি-সিমেন্ট দিয়ে নতুন পলেস্তরা লাগানো। কারণ এখানকার ভবণগুলির ইট-পলেস্তরা পর্যন্তও ঘুষখোর। এবার সহজেই অনুমেয় যে এর জনবল (উপরওয়ালা থেকে ঝাড়ুদার পর্যন্ত) কী পরিমাণ আর কী কী কাজের জন্য ঘুষ নেয়না বা নিতে পারেনা
স্বাধীনতার ৪০ বছর পরও এখন পর্যন্ত কোন সঠিক [link|http://www.somewhereinblog.net/blog/msjulhas_designer/29039868|শিক্ষানীতি] অর্জন করতে পারলোনা এ জাতি। বঞ্চিতের পাহাড় জমে গেছে বঞ্চিত হতে হতে। এর শেষ কোথায় এ জাতি তা-ও জানেনা। এক সরকার কোন এক শিক্ষানীতি চালু করলে অন্য সরকার এসে তা বাতিল করে অন্য আর একটা নীতি চালু করেন। এ সকল সিদ্ধান্তহীনতার শিকার হচ্ছে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা ও শিক্ষক-শিক্ষিকাগণ। সঠিক দিক নির্দেশনার অভাবে শিক্ষক- শিক্ষিকাগণ আজ দিশেহারা। শিক্ষক-শিক্ষিকাগণ যখন দিশেহারা তখন তারা জাতীর জন্য কী সেবা দেবে তা এখন ভাববার বিষয়।
আমি এ পর্যালোচনা থেকে বলতে চাই- বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় মাধ্যমিক পর্যায় যতক্ষণ পর্যন্ত অবহেলিত থাকবে ততদিন শিক্ষার মানের কোন উন্নতি সম্ভব নয়। সরকারের উচিত যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষা ব্যবস্থায় একটা আমুল পরিবর্তন এনে শিক্ষার মানকে নির্দিষ্ট মাত্রায় বজায় রাখার নিমিত্তে শিক্ষার সকল স্তরকে সমান গুরুত্ব দে’য়া। এতে উপকৃত হবে ছাত্র-ছাত্রীরা, উপকৃত হবে দেশ ও জাতি।
আমার এ লেখা কাউরো মনে কোন প্রকার কষ্টের কারণ হয়ে থাকলে বাস্তবতার নিরিখে তা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো।
সাথে- সময়ের অভাব আর অলসতার কারণে লেখাটা ছোট করতে পারলামনা বলে দুঃখিত।
২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ১১:০৯
১৫ ই অক্টোবর, ২০০৯ রাত ১১:৫৮
০৮ ই নভেম্বর, ২০০৯ দুপুর ২:৩৯
শেয়ার করতে পারেন।
ধন্যবাদ
www.compuartsdigital.com
________________________________________
এ্যাডভান্সড আইসিটি প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য টিপস / সমাধান সহ 418 পৃষ্ঠার প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল- 1
এ্যাডভান্সড আইসিটি প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য টিপস / সমাধান সহ 418 পৃষ্ঠার প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল- 2
====================================================================
আপনার বয়স সংক্রান্ত প্রশ্নোত্তর পেতে / সাহায্য পেতে ক্লিক করুন এখানে।
====================================================================
আপনার ব্লগ দেখতে ক্লিক করুন এখানে
এ্যাডভান্সড আইসিটি প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য টিপস / সমাধান সহ 418 পৃষ্ঠার প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল- 1
এ্যাডভান্সড আইসিটি প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য টিপস / সমাধান সহ 418 পৃষ্ঠার প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল- 2
সকল সংবাদপত্রগুলির লিংক
====================================================================
প্রয়োজনীয়, জরুরি, গুরুত্বপূর্ণ কিছু যোগাযোগ নম্বরের লিংক
====================================================================
শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য, পুরষরা উঁকি দিতে চেষ্টা করবেন না . . . ২
====================================================================
অভ্র বা বিজয় সফটওয়্যার ব্যবহার করে ইন্টারনেট জগতে অতি সহজে বাংলা লেখার উপায় . . .
====================================================================
যারা অভ্রতে লেখেন তারা ক্লিক করতে পারেন লিংকটিতে
====================================================================
একহাজার . . . একটি টিপস
====================================================================
ঘুরে আসুন ইন্টারনেটের অন্ধকার দুনিয়ার ডীপ ওয়েব, ডার্ক ওয়েব সাইটগুলো থেকে।
====================================================================
ইংরেজি বিষয় সহ জেনে নিন প্রয়োজনীয়, গুরুত্বপূর্ণ, মজার কিছু তথ্য . . . ১
====================================================================
ইংরেজি বিষয় সহ জেনে নিন প্রয়োজনীয়, গুরুত্বপূর্ণ, মজার কিছু তথ্য . . . ২
====================================================================
জেনে নিন ইংরেজি সহ প্রয়োজনীয়, গুরুত্বপূর্ণ, মজার কিছু তথ্য . . . ৩
====================================================================
জেনে নিন ইংরেজি সহ প্রয়োজনীয়, গুরুত্বপূর্ণ, মজার কিছু তথ্য . . . ৪
====================================================================
Leave A Comment