📜 একতরফা ভালোবাসার গল্প : অব্যক্ত এক ভালোবাসা

প্রিয় . . . ,

জানি, এই লেখা কোনোদিনও তোমার চোখে পড়বে না- চোখে পড়ার কথাও নয়।
অথবা পড়লেও বুঝবে না, কতটা ভার নিয়ে এই শব্দগুলো আজ সাজাচ্ছি। তবুও লিখতে বসেছি। কারণ, কোনো কোনো অনুভূতির চাপে বুকটা বোবা হয়ে যায়। আর সেই বোবা শব্দগুলো চেপে রাখলে, নিজের ভেতরটাই ফাঁপা হয়ে যায়।

তোমার সাথে পরিচয় পর্বটা ছিলো একদম সাধারণ। শুধু মানুষ থেকে মানুষ হওয়া। প্রথমদিকে কিছু কথা, কিছু আলাপ আর একটু-আধটু যত্নআত্তি… তারপর একটা সময় নিজের অজান্তেই যেন আবিষ্কার করলাম- অনুভব করতে থাকলাম- তোমাকে একটু আলাদা করে ভাবছি- ভাবতে শিখে গেছি। ভাবতেই ভালো লাগে।

জানো, কিছু মানুষ হয়তো কখনো জানতে পারেনা, কেউ তাদের নিঃশব্দে ভালোবাসে। ঠিক তেমন করেই আমি, দিনের পর দিন, মাসের পর মাস তোমার জন্য নিঃশব্দে ভালোবাসা জমিয়ে চলেছি।

ভিডিও : বিশ্লেষণ

একেকটা মানুষ জীবনে আসে, থাকা-না থাকার মাঝেও থেকে যায়- চলে যায়। সময়ের ভেতর বেঁচে থাকা একেকটা মানুষ, কাউরো কাছে স্মৃতি, কাউরো কাছে অভিমান। আর আমার জীবনে, ঠিক তেমন করেই তুমি ছিলে, আছো- থাকবেই।

একদিন কথা, দুদিন আলাপ- তারপর দিন চলে গেছে। সময় কেটে গেছে বহুকাল।
তুমি জানোনি, জানার কথাও না। কারণ এই পৃথিবীতে সবাই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত।

তুমি জানোনা, আমি তোমার জন্য কতকাল অপেক্ষায় থেকেছি।
তোমার একটা ফোনকলের জন্য কত শতবার হাতে মোবাইল নিয়ে বসে থেকেছি।
জানোনা তোমার ছেলেটা আমার কাছে কতটা প্রিয়। ওর হাসিতে আমার কতটা প্রশান্তি।
ওর দুষ্টুমি আর মায়াময় চাহনীতে আমার কতটা আনন্দ।

আজকে তোমার অজান্তেই ওর জন্য একটা গীফট দিয়ে দিলাম। তুমি জানোনা, তোমার ছেলেটাকে যখন নিজে থেকে গীফট দিয়ে এলাম, সেটা কোন দায়িত্ববোধের ছিলনা। সেটা ছিল একরকম স্বার্থহীন ভালোবাসা। জানি, এ ভালোবাসা তুমি কখনো জানতে পারবেনা। জানলেও হয়তো গুরুত্ব দিবে না। তবু ওই মুহূর্তটা আমার কাছে ছিল অসীম দামী।

তুমি জানোনা, কেন দিলাম।
জানোনা, কেন ওর পড়াশোনা নিয়ে আমি নিজের সন্তানের মতো ভেবেছি।
জানোনা, এই শহরে সহস্র মানুষের ভিড়েও, তোমার নামের পাশে একফালি মায়া বুনেছি।

জানো, প্রতিদিন তোমার একটা ফোনকল, একটা ‘কেমন আছো’ শব্দের জন্য অপেক্ষা করা- এ অনুভূতিগুলো কতটা আবেগময়, কতটা গভীর। অথচ আমি জানি, কখনোই তা বলা হবে না- বলা যাবেনা- বলা যায়না।
তোমার ভালো থাকাই আমার পরম প্রশান্তি। আর জানো, ভালোবাসা বলে কিছু দাবি করার নয়। ভালোবাসা একরকম সম্মান, একরকম শ্রদ্ধা।

এ ভালোবাসা কোন কিছু দাবি করেনা।
কোনদিনও বলতে পারবো না- . . . , আমি তোমায় ভালোবাসি।’ বলবোওনা। এটা বলা যায় না।
কারণ সম্পর্কের সীমানা আছে। সমাজের দেওয়াল আছে। আছে তোমার নিজের স্বামী সন্তান, পরিবার, সংসার।

জানলাম তোমার প্রিয়তম অসুস্থ। আমি শুনে ঈর্ষা করিনি- করিওনা। শুধু প্রার্থনা করেছি, তুমি যেন ভালো থাকো। তোমাকে কখনও কষ্টে- নিরানন্দে দেখিনি- কখনো দেখতেও চাই না। তুমি যেখানেই থাকো, ভালো থেকো, সুখে থেকে।

একসাথে সালাত আদায় শেষে, তোমার প্রিয়তম’র সাথে একদিন বহু কথা বলেছি।
ওনার জন্য দো’য়া করেছি। যেন তোমার জীবনে সুখ থাকে- তুমি সুখে থাক।
তোমার ছেলেটার জন্য দো’য়া করেছি। যেন সে ভালো মানুষ হয়।
কারণ আমার ভালোবাসা সত্ত্বেও আমি জানি, তোমার জায়গায়- তোমার নামের পাশে কখনোও আমার নাম লেখা হবেনা।

তুমি বুঝবেনা, একা একা রাতে ঘুম ভেঙে শুধু একটা মেসেজ আসার অপেক্ষা কাকে বলে।
বুঝবেনা, পরিচিত অপরিচিতদের ভিড়ের মাঝে তোমার জন্য কতবার চোখ ভিজে গেছে।
বুঝবেনা, জীবনের গল্পে এমন এক অধ্যায়ও থাকে- যেখানে চরিত্রটা সব জানে, সব বুঝে- তবুও কোনদিন মুখ ফুটে কিছু বলে না- বলতে পারেনা- বলা যায়না।

এক জীবনে অনেক অনুভূতির গল্প জমে। কিছু বলা হয়, কিছু বলা হয় না। এই গল্পটা সেই না-বলা গল্পের মতো। হয়তো কোনোদিন জানবে না, তবু এই গল্পটা আমি রেখে যেতে চাই। কারণ, কিছু ভালোবাসা বুকে রেখে চলে যাওয়া যায়, আর কিছু লিখে রেখে যেতে হয়- যেন কোনো একদিন, কে জানে, হয়তো পড়বে কিংবা হালকা করে মনে পড়বে কেউ একজন ছিলো . . .

আমি তোমার জীবনে খুব সাধারণ অতি নগন্য একজন মানুষ।
একদিন হারিয়ে যাব। নতুন ব্যস্ততায়, নতুন জীবনে।

চিঠি দিও . . . পত্র দিও . . .

আমি জানি, এই ভালোবাসা কোনো দিনও তোমাকে বলার জন্য ছিলোনা। ছিল বোবা ভালোবাসা হয়ে তোমার আশেপাশে ঘুরঘুর করার জন্য। জানি, হুট করে কোনোদিন হারিয়ে যাব। হুট করেই আর কোনো দিন থেকে ফোন করব না, কোনোদিনও ছেলেটার প্রাইভেটের রাস্তা আগলে দাঁড়াবোনা, কোনোদিন থেকে ‘কেমন আছো  . . . ’ জিজ্ঞেস করব না।

তবুও জেনো এই একটা জীবনে এমন একটা মানুষ ছিল- যে নিঃশব্দে, নিঃস্বার্থে ভালোবেসেছিলো শুধু তোমাকেই।

এই ভালোবাসার কোনো প্রাপ্তি নেই- নেই কোন প্রত্যাশা। কোনো অভিযোগও নেই।
শুধু আছে এক বুক শব্দহীন অপেক্ষা। আছে না বলা একটা গল্প।

এই চিঠিটা তোমার জন্য রেখে যাচ্ছি।
জানি, কোনদিনও এটা তোমার পড়া হবেনা। পড়লেও হয়তো বুঝবেনা।
তবুও রয়ে যাবে- এই লেখার পাতায়, এই আবেগের ছাপ।

ভালো থেকো তুমি।
অনেক অনেক ভালো থেকো।
তোমার সুখেই আমার অনন্ত প্রশান্তি।
যতদিন বাঁচবো, নিঃশব্দে প্রার্থনা করব- তুমি যেন ভালো থাকো।

শুধু আজ এই লেখা রেখে গেলাম।
ভালো থেকো তুমি।
তোমার জীবনে সুখ, শান্তি আর আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক।

এক জীবনে এক নাম ছিল, থাকবে। শুধুই তুমি।

তোমাকে নিয়ে আমার এ লেখায় কোন প্রাপ্তির প্রত্যাশা নেই- হারাবার ভয় নেই।
এ শুধু ভালোবাসার নিরব একটুখানি স্বীকারোক্তি।
যেখানে সম্পর্কের সীমানা মেনে, সামাজিক বাস্তবতা মাথায় রেখে অনুভূতির শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে।

AmarDeal2