আমি আশাহত।

কারণ, এভাবেই আমার শ্রদ্ধা-সম্মান করার সুযোগ নিয়ে বেশ কয়েকজনেই আমার থেকে উপকার নিয়ে চলে গেছে আমার ফিলিংসটা কেউই বুঝতে চায়নি- বুঝতে পারেনি।

পরে দেখা গেছে ঠিকই তারা কোন না কোন অন্য কাউরো না কাউরো সাথে এসবে জড়িয়েছে। তারা কেউই আমাকে বুঝতে চায়নি, বুঝতে পারেনি। হয়তো আমিও তাদেরকে বুঝাতে পারিনি। তারা আমার মনের ভাষাটা- ভাবনাটা ধরতে পারেনি।

ভাই…

আপনার কথাগুলো পড়তে পড়তে বুকটা ভারী হয়ে গেল।

জানি এই কথাগুলো কেউ বুঝতে চায় না, শুনতেও চায় না।

আর তুমি বারবার মানুষের সম্মান করো, কেয়ার করো, পাশে দাঁড়াও — অথচ তারা সেই জায়গাটাকে নিজের সুবিধামতো ব্যবহার করে চলে যায়।

এটা ভীষণ যন্ত্রণা দেয়।

তুমি বললে —

“হয়তো আমিও বুঝাতে পারিনি। তারা আমার মনের ভাষাটা ধরতে পারেনি।”

বুঝো ভাই, আসলে সবাই যে আমাদের মনের ভাষা ধরতে পারবে — এমন না।

অনেকেই চায় সুবিধা নিতে, অনেকেই দেখে কে কেয়ার করে, কে শ্রদ্ধা করে…

আর এই মানুষগুলো কখনো তোমার ভেতরের সত্যিটা বোঝার চেষ্টা করে না। কারণ, তারা হয়তো তোমার মত অনুভব করার মানুষ না।

📌 আমার ব্যক্তিগত পরামর্শ

ভাই, তুমি তোমার এই ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, কেয়ারের অভ্যাসটা কখনো বন্ধ কোরো না।

কিন্তু এই জিনিসটা সবাইকে দিও না।

সবার ভালো মানুষ হওয়া মানে নিজের ক্ষতি করা।

কারণ সবাই তোমার সেই দিকটা বুঝবে না, মূল্যও দেবে না।

📌 এখন তোমার করণীয়:

১️⃣ নিজেকে প্রাধান্য দাও।

নিজের মনের ভাষা, অনুভূতি আগে নিজের ডায়েরিতে লিখো। কাউকে বলার দরকার নেই। যখন সময় আসবে, তখন বলবে।

২️⃣ অন্যের সাড়া না পেলে, বারবার চেষ্টা করা বন্ধ করো।

কারো যদি সত্যিই দরকার হয়, সে-ই তোমার কাছে আসবে।

৩️⃣ উপকার করতে গিয়ে নিজের অনুভূতিকে বিক্রি কোরো না।

তুমি শ্রদ্ধা দেখাও, কিন্তু এক্সপেক্টেশন করো না।

যেদিন তুমি কারো থেকে কিছু না চেয়ে উপকার করবে — আর নিজেকেই বলবে, “আমি এটা করলাম কারণ আমি পারি। তার জন্য না।”

তখন এই কষ্টের ভার অনেক হালকা হয়ে যাবে।

৪️⃣ তোমার ভালোবাসা, কেয়ার, সম্মান — এই তিনটা জিনিস শুধু তাদের জন্য রাখো, যারা সেটা ফিরিয়ে দিতে জানে।

বাকিরা যাক…

📌 জীবন এমনই ভাই…

অনেকেই বোঝে না। কেউ কেউ বোঝে।

তুমি শুধু যাদের জন্য সত্যি মন কাঁদে — তাদের জন্য জায়গা রাখো।

বাকিদের “বাইরে” রাখো।

এভাবে জীবন সহজ হয়ে যাবে।

📌 শেষ কথা

একবার ভাবো —

তোমার এতদিনের অভিজ্ঞতা থেকে এখন এই সিদ্ধান্তটা তোমার নেওয়া উচিত না —

“কেউ বুঝবেই না।”

বরং ঠিক হওয়া উচিত —

“আমি এখন শুধু তাদের বুঝতে দেব, যারা সত্যিই আমাকে বুঝতে চায়।”

এই লাইনটা মাথায় রেখে চললে — তুমি ব্যথাও পাবে কম, মানুষও বুঝবে কে তোমার যোগ্য।

চিঠি।

অডিও : বিশ্লেষণ

প্রিয় আপা,

বহুদিন ধরে কিছু কথা বুকের ভেতর জমে আছে। কখনো বলা হয়নি। আজ মনে হচ্ছে আপনাকে জানানো উচিত।

জানিনা, বলা ঠিক হবে কি না . . . তবুও সাহস করে লিখে ফেললাম। কারণ, আপনার প্রতি শ্রদ্ধা আর মায়াটা কখন যে ভালোবাসায় মিশে গেছে জানিনা। তাই শুধু নিজের মধ্যে তা আর ধরে রাখতে পারলামনা।

শুধু জানবেন— আপনি একজন অসাধারণ মানুষ, আর আপনার মতো কাউকে কাছে পাওয়া নিঃসন্দেহে, নিঃশব্দে- আমার জীবনের জন্যেও বড় আশীর্বাদ স্বরূপ।

প্রিয় আপা,

শব্দ কখনো কখনো মনের সব কথা প্রকাশ করতে পারে না। তবুও আজ সাহস করে লিখছি। কারণ কিছু অনুভব বুকে আটকে রাখা যায় না… বলা যায় না… জমে জমে এক সময় শব্দ হয়ে ঝরে পড়ে।

আমাদের পরিচয়টা নেহায়েতই সাধারণ ছিল। তবে তারপর থেকে আপনার প্রতিটি কথা, প্রতিটি আচরণ, এমনকী আপনার চোখের দৃষ্টি আমার অন্তরের ভেতরে এক অদ্ভুত আলোড়ন তোলে। জানেন আপা, এমন কিছু মানুষ থাকে, যাদের দিকে তাকালেই মনে হয়— এই মানুষটার জন্যই বুঝি এই বেঁচে থাকা। আপনার দিকে তাকালেই ঠিক তেমনই অনুভব হয়।

আপা,

খুবই অপরাধবোধে ভূগি। আপনার প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই প্রতিনিয়ত ভেতরে ভেতরে প্রচণ্ড অপরাধবোধে থাকি। খুবই অন্যায় করে ফেলেছি। খুবই কষ্টে ফেলে দিয়েছি, জানি- বুঝতে পারি। জ্বলে পুড়ে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছি। কিন্তু কিছু করতে পারিনা। শুধু অপেক্ষা আর ধৈর্য ধরা ছাড়া। ছটফট করি। বুক ফেটে কান্না আসে। আপনার সাথে দেখা হলে লজ্জায় মরে যাই।

প্রতিনিয়ত খুব কষ্ট পাই। নিজের উপর রাগ হয়। কোথায় যেন নিজেকে হারিয়ে ফেলি। কিন্তু আপনার মুখটা মনে পড়লেই আবার ফিরে আসি। মনে হয় নিজের সব কিছু ছেড়ে চলে যাই— আবার আপনার হাসি মাখা চাঁদ মুখটা মনে পড়তেই থেমে যাই। সন্তানদের মুখ, আর আপনার মুখের হাসি— এই দুটিই আমাকে প্রতিবার বাঁচিয়ে রাখে।

কখনো কখনো খুব সাধারণ কিছু মুহূর্ত, খুব সাদামাটা কিছু আচরণও জীবনের ভেতরে অসাধারণ অনুভূতির জন্ম দেয়। তেমনই কিছু অস্পষ্ট মুহূর্ত আমাকে নতুন করে ভাবতে শেখায়, অনুভব করতে শেখায়… বুঝতে পারি— কারও উপস্থিতি কতটা গভীরে ছুঁয়ে যেতে পারে।

আপনার মুখচ্ছবি আর ভালোবাসার বদৌলতে প্রতিবার নতুন জীবন পাই। সন্তানদের মুখ ভেসে উঠে। আপনাকে যে খুব ভালোলাগে, ভালোবাসি, শ্রদ্ধা করি, সম্মান করি। আপনাকে আর আপনার ভালোবাসা হারাতে চাইনা। আপনাকে কাছে চাই- পাশে চাই।

জানেন আপা,

ভালোবাসা শব্দটার মাঝেও এক ধরনের সীমাবদ্ধতা আছে। কিন্তু আপনার প্রতি যে অনুভব, সেটার জন্য এই শব্দটাও যথেষ্ট নয়। এটা শ্রদ্ধার, মায়ার আর এক অদ্ভুত অন্তর্নিহিত টানের মিশেল। যেটা দাবি করে না, কেবল পাশে থাকতে চায়- পাশে রাখতে চায় নিঃশব্দে কিছু দিতে চায়। কিন্তু পারিনাযে। প্রার্থনা করি, সেই সুদিন যেন সহসাই এসে যায় আমাদের জীবনে। অভাব কেটে যাক, জরা ঘুচে যাক।

আপনার চোখের মায়াবী দৃষ্টি . . . কখনো সরাসরি না বললেও, ভেতরে কোথাও যেন কিছু একটা বলতে চায়- বলে যায়। সেই কথাগুলো আমার বুকের ভেতরে আশ্রয় নেয়। কখনো আনন্দ দেয়, কখনো অদ্ভুত শূন্যতায় ভরিয়ে দেয়। কখনো কখনো হাহাকারে ছেয়ে যায়। কান্না পায়। ভাবি কেন যে আপনাকে জড়ালাম !!! নানা কিছু ভাবনা হয়, আর তখনই মনে হয় আপনাকে একটুখানি দেখি। এক ঝলক শেষ দেখা দেখে নেই। পারিনা।

প্রিয় আপা,

আমি জানি . . . হয়তো এই অনুভূতির কথা বলা ঠিক নয়। হয়তো বলাও যাবেনা কোনো দিনও। কারণ আমি আপনাকে শ্রদ্ধা করি, সম্মান করি, ভালোলাগে তাই ভালোওবাসি। আর যাকে সত্যিই সম্মান করা যায়, শ্রদ্ধা করা যায়, তার জন্য ভালো থাকাই সবচে’ বড় প্রার্থনা হয়ে যায়। আমি সেই মানুষ, যে কোনো কারণ ছাড়াই, নিঃশব্দে আপনার জন্য প্রার্থনা করে যেতে পারি। প্রার্থনা করি আপনার-আমার দুঃখ, কষ্ট, অভাব দূর হয়ে যাক।

প্লীজ আপা,

আপনি হাসুন, ভালো থাকুন। আপনার মুখের মুখের হাসি, চোখের মায়া, আর ব্যক্তিত্বের দীপ্তি অমলিন থাকুক। আর আমি . . . আমি আমার মতো করে আপনার ছায়া হয়ে থাকব। ইচ্ছে হলেও- চাইলেই ছুঁতে পারবনা, তবুও মনের ভেতর এক চিরন্তন আশ্রয় হয়ে থাকব।

আমি বেঁচে থাকি কিংবা চলে যাই, সবসময় আপনার হাসিমুখখানা দেখতে চাই- দেখে যেতে চাই। পারিনা। বিশ্বাস করুন আপা, আমার ব্যক্তিগত কষ্টেরচে’ও আপনার মলীন মুখখানা আমাকে আরোও বেশি পীড়া দেয়। সত্যিই আপা, অনুভব করতে পারি- আমার জন্য আপনি- আপনারা কী অমানসিক কষ্ট আর যন্ত্রণা বইয়ে বেড়াচ্ছেন।

ভালোবাসা নয়, শ্রদ্ধা মিশ্রিত এক নিঃশব্দ অনুভব নিয়ে বললাম। অভয় দিলে- সময় দিলে পরে কোন একদিন কিছু কষ্ট শেয়ার করবো।

শ্রদ্ধা-মায়া আর নিঃশব্দ ভালোবাসায়-
দো’য়া ও শুভকামনা রইল।

১৯ মে, ২০২৫