নিউজল্যান্ডে হামলা হয় ১৫ই মার্চ,২০১৯
কিন্তু তার ১০-১১ দিন আগে, মানে ৪-৫ই মার্চ থেকে নিউজিল্যান্ডের মিডিয়ায় একটি খবর খুব প্রচারিত হয়। সেটা হলো, ‘কিউই জিহাদী’ মার্ক টেলরের খবর।

মার্ক টেলর হচ্ছে নিউজিল্যান্ড বংশোদ্ভূত এক ব্যক্তি, যে ধর্মান্তরিত হয়ে আবু আব্দুল রহমান হয় এবং ২০১৪ সালে সিরিয়াতে যুদ্ধ করতে যায় বলে খবরে প্রকাশ। কিন্তু সম্প্রতি তাদের মিডিয়াতে প্রচারিত হয়, মার্ক টেলর কুর্দিশ বাহিনীর কাছে ধরে পড়েছে এবং সে নিউজিল্যান্ডে ফিরতে চাইছে।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিউজিল্যান্ডের মিডিয়া গত ৪ঠা মার্চ থেকে বেশ গরম হয়ে ওঠে এবং মার্ক টেলরের নামের সাথে ইসলামী ধর্মীয় নামকরণ ‘জিহাদী’ শব্দ যোগ করে বন্দুক, ছুরি, তলোয়ার হাতে ছবি বার বার প্রচার করতে থাকে। নিউজিল্যান্ডের নিউজহ্যাব, নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড, স্ট্যাফ, রেডিও নিউজিল্যান্ড, ওয়ান নিউজ, নিউজটক’ বার বার এই ছবিগুলো প্রকাশ হতে থাকে।
ক) https://bit.ly/2U6peAJ
খ) https://bit.ly/2Ousb9n
গ) https://bit.ly/2UaCILS
ঘ) https://bit.ly/2GYvAMr

যদিও মার্ক টেলর গ্রেফতার হয়েছে বলে দাবী করা হচ্ছে,
কিন্তু এই নিউজগুলো নিউজিল্যান্ডে সংখ্যালঘু মুসলিম কমিউনিটির জন্য খুব উদ্বেগজন ছিলো, কারণ এ ধরনের উন্মুক্ত অস্ত্র হাতে, ইসলামী নামে, আরবী হরফ সংযুক্ত ছবি প্রকাশ করায় দেশটিতে নতুন করে ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাওয়ার পরিবেশ তৈরী করা হয় মসজিদে হামলার মাত্র ১০-১১ দিন আগে। এছাড়া, ২০১৩ সালে একবার নিউজিল্যান্ডে মিডিয়া থেকে দাবী তোলা হয়, ক্রাইস্টচার্চের সেই আন নূর মসজিদ থেকে দুই জন মুসলিম ইয়েমেনে যুদ্ধ করতে যায় (https://bit.ly/2FtM4sK)। তাই নতুন করে ‘জিহাদী’ ‘জিহাদী’ রব তুললে ঐ আন নূর মসজিদের দিকে ইসলামবিদ্বেষীদের চোখ পড়ে।

আমি একটি বিষয় দেখেছি,
নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রাইস্টচার্চে হামলারকারীর ভিডিও প্রকাশ না করতে বার বার আহবান করেছে। তার আহবানে সারা দিয়ে ফেসবুক থেকে হামলার ১৫ লক্ষ ভিডিও ডিলিট করা হয়। এমনকি তুরষ্ক বিষয়টি প্রকাশ করায় এরদোয়ানের সমালোচনায় ফেটে পড়ে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী। শুধু তাই নয় নিউজিল্যান্ডের মিডিয়ায় যখন ব্রেন্টন ট্যারেন্টের ছবি প্রকাশ করা হয়, তার তার মুখ ঢেকে রাখা হয়।
(https://bit.ly/2CmRjK1)

নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডেনের এ ধরনের আচরণ থেকে আমরা অনুমান করতে পারি, সে খুব শান্তিকামী, ধর্মের নামে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ুক, সেটা সে চায় না। কিন্তু আশ্চর্যজনক হলেও সত্য, জেসিন্ডা খ্রিষ্টান সন্ত্রাসবাদীদের উগ্রতার ভিডিও লুকিয়ে ফেলতে যতটুকু ইচ্ছুক, তার থেকে বেশি ইচ্ছুক মুসলিম নামে কেউ অস্ত্র হাতে নিচ্ছে, হামলার ডাক দিচ্ছে সে খবর ছড়াতে !! তাই নজির আমরা দেখতে পাই, মসজিদে হামলার ১১ দিন আগ থেকে নিউজিল্যান্ডের মিডিয়ায় মুসলিমবিরোধী চেতনার উদ্রেগ করতে পারে, এ ধরনের প্রচুর ছবি ছড়িয়ে দেয়া হয়। এমনকি ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলার ৫ দিন পর যখন সন্ত্রাসী টারেন্টের ছবি লুকানো হচ্ছে, তখনও নিউজিল্যান্ডের মিডিয়ায় প্রচার করা হচ্ছে আইএস বাহিনী নিউজিল্যান্ডে হামলা করতে আসছে এবং কিছু কল্পিত ছবি প্রকাশ করে ইসলামফোবিয়া আরো দৃঢ় করা হচ্ছে। (https://bit.ly/2Ye0OEV)

গত পোস্টে, আমি যেটা বলতে চেয়েছি, হয়ত অনেকেই বিষয়টি ধরতে পারেননি।
আমি বলতে চেয়েছি,
জেসিন্ডা আরডেন মাথায় ওড়না দিতে যতটুকু আন্তরিক,
আরবীতে সালাম দিতে যতটুকু আন্তরিক,
কিন্তু মুসলিমদের উপর যারা হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে তাদের দমন করতে সে ততটুকু আন্তরিক নয়।

আমি যেটা বলতে চেয়েছি, জেসিন্ডা অবুঝ কোন ব্যক্তি নয় যে, সে কিছু জানে না।
ইরাক হামলার অন্যতম খলনায়ক টনি ব্লেয়ারের এক সময় পলিসি উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছে এই জেসিন্ডা আরডেন (https://bit.ly/2U7DhGr) । তার লেবার পার্টির ক্রাইস্টচার্চ মেয়র লিয়াননি ডালজেইলের তত্ত্ববধানেই ২০১২ সালে ক্রাইস্টচার্চের রাস্তায় ব্রেন্টর ট্যারেন্টের মতাদর্শের সন্ত্রাসীরা (হোয়াইট সুপ্রিমিস্ট বলে যারা নিজেদের দাবী করে) সবচেয়ে বড় মার্চ করে (https://bit.ly/2CAXzOC)। সেদিক বিবেচনা করলে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ বা মুসলিমবিরোধী ডানপন্থীদের কার্যক্রম সম্পর্কে নিজেকে ‘ভাজা মাছ উল্টে খেতে পারে না’ বলে দাবী করতে পারে না জেসিন্ডা।

সত্যি বলতে আমার একটা দোষ কি জানেন?
আমি কিছু কিছু জিনিস সম্পর্কে হয়ত আমার একটু বেশি জানা আছে,
তাই যাদের জানা নেই, তাদের থেকে কিছু বিষয় নিয়ে আমার মাথা খেলে বেশি।

যেমন: ক্লাস ১০ এর একটা কবিতার বই,
সদ্য অক্ষর জ্ঞান পাওয়া শিশু শ্রেণীর একটা বাচ্চা ঐ কবিতার অক্ষরগুলো দেখে অ’আ’ক’খ’-ই দেখতে পাবে। কিন্তু ৫ম শ্রেনীর একজন ছাত্র হয়ত ঐ কবিতা কিছু পড়তে পারবে,কিন্তু কবিতার কথাগুলো নাও বুঝতে পারে। ১০ম শ্রেণীর ছাত্র ঐ কবিতার পড়ে তার অন্তর্নিহিত কিছু কিছু বিষয় অনুধাবন করবে। আর কোন সাহিত্যিক হয়ত ঐ কবিতাকে বিশ্লেষণ করে তার ভেতর লুকিয়ে থাকা কোন নিগুঢ় তত্ত্ব নিয়ে আলোচনা করবে। সবাই একই কবিতা দেখছে, কিন্তু সবার যার যার বোঝার অবস্থাটা ভিন্ন ভিন্ন।

আন্তর্জাতিক রাজনীতি সম্পর্কে যারা ধারণা রাখেন, তাদের চোখেও কিন্তু জেসিন্ডার প্রকাশ্য ইসলামপ্রিয়তার দৃশ্যটা সাধারণ চোখ থেকে ভিন্ন।

উল্লেখ্য-
মার্কিন সম্রাজ্যবাদের যে রাজনৈতিক নেটওয়ার্ক দেশ ও বিশ্বজুড়ে ছড়িয়েছে তা দুটি রূপে ছড়িয়েছে।
১) ডেমোক্র্যাট
২) রিপাবলিকান

এই দু্ইটি গ্রুপের তাদের মূল পলিসি (শত্রু দমন করে সম্রাজ্যবাদ প্রতিষ্ঠা) নিয়ে কোন দ্বিমত নাই
কিন্তু সেই পলিসি বাস্তবায়ন করবে তা নিয়ে দ্বিমত আছে। তা নিয়ে রাজনীতি আছে।

প্রথম গ্রুপ ডেমোক্র্যাট’রা চায় তাদের সম্রাজ্যবাদ বিস্তার ঘটাবে লিবারেল সিস্টেমে। এরা সংখ্যালঘু, নির্যাতিত, নারীবাদ, সমকামী, অভিবাসী, আদিবাসী, শান্তির বার্তার কথা বলে মূল লুক্বায়িত পলিসি বাস্তবায়ন করবে। ওমাবা, ক্লিনটন, হিলারী এরা হলো ঐ দলের সদস্য। সারা বিশ্বেই তাদের এই ডেমেক্রেট নেটওয়ার্ক আছে। জেসিন্ডা আরডেন, জাস্টিন ট্রুডো, অ্যাঞ্জেলা মার্কেল, প্রথম আলো, ব্র্যাক ঐ দলের সদস্য।

অপরদিকে রিপাবলিকানরা বলবে, জাতীয়তাবাদের কথা, ধর্মীয় চেতনার পক্ষে কাজ করার কথা, জাতীয়তাবাদ বিরোধীদের উচ্ছেদের কথা, দেশকে মুক্ত করার কথা। বুশ, ট্রাম্প হচ্ছে ঐ দলের সদস্য। আন্তর্জাতিকভাবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি, হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান এ দলের সদস্য।

যারা ডেমোক্রেট তারা অভিবাসন বা শরনার্থীদের পক্ষে বলবে, রিপাবলিকানরা শরনার্থীদের বিপক্ষে বলবে।
ডেমোক্রেটরা নারীবাদের পক্ষে বলবে, রিপাবলিকানরা নারীবাদের (গর্ভপাতের) বিপক্ষে বলবে
ডেমোক্রেটরা সমকামীতার পক্ষে বলবে, রিপাবলিকানরা সমকামীতাদের বিপক্ষে বলবে।
(https://bit.ly/2FxgJqs)

এজন্য জেসিন্ডা আরডেন-
অভিবাসনের পক্ষে বলবে
সমকামীদের পক্ষে মার্চ করে (https://youtu.be/rGPmGrklQGw)
নারীবাদের পক্ষ হয়ে গর্ভ অবস্থায় পার্লামেন্টে যায়, ইউরোপ সফর করে আলোচনা তুলে।
(https://bit.ly/2Fme1CL)

তাই জেসিন্ডা আরডেনের মধ্যে সাধারণ মুসলমানরাযে ইসলামপ্রিয়তা দেখেছে,
সেটা আমার চোখে আন্তর্জাতিক ডেম্রোক্রেটদের খুব স্বাভাবিক রাজনীতি হিসেবে ধরা পড়েছে। সাধারণ মুসলমানরা যেটাকে মুসলমানদের প্রতি সহানুভূতি হিসেবে দেখেছে, আমি দেখেছি তার ডেমোক্রেট বহুমুখী চেহারার অংশকে।

তবে মুসলমানরা যেন মাথায় কাপড়ের টুকরা আর আরবী উচ্চারণ দেখে মনে না করে, তাদের উপর হামলা কমে যাবে। জার্মানিতে যখন শরনার্থী আসা শুরু করলো, তখন ডেমোক্রেট প্যানেলের অ্যাঞ্জেলা মার্কেলও কিন্তু মুসলিম শরনার্থীদের প্রতি খুব সুন্দর সুন্দর কথা বলে সংহতি প্রকাশ করেছিলো (https://bit.ly/2Fme0ib)। কিন্তু এ দ্বারা শরনার্থীদের উপর হামলা বিন্দুমাত্র কমেনি বরং বেড়েছে। ২০১৬ সালে জার্মানিতে গড়ে দৈনিক ১০টির মত মুসলিমদের উপর হামলা ঘটতো। ২০১৬ সালে ২,৫৪৫ জন শরণার্থীর উপর এবং আশ্রয়কেন্দ্রের উপর ৯৮৮টি হামলার ঘটনা ঘটে৷ (https://bit.ly/2WqyYUj)

আসলে ডেমেক্রেট বা রিপাবলিকানরা অভিবাসী বা মুসলমানদের পক্ষে বিপক্ষে কথা বলবে, রাজনীতির অংশ হিসেবে, কিন্তু এটা মানে এই নয় তারা কেউ মুসলমানদের পক্ষের লোক হয়েছে গেছে বা মুসলিমবিরোধী ষড়যন্ত্র বন্ধ করবে। তারা এগুলো করে শুধু রাজনীতি করবে, এর বেশি কিছু নয়।

সত্যিই বলেতে আমার কাছে রিপাবলিকানদের থেকেও ডেমোক্রেটদের মারাত্মক মনে হয়। কারণ রিপাবলিকানরা প্রকাশ্যে করে, কিন্তু ডেমেক্রেটরা মুখে মিষ্টি কথা বলে, কিন্তু পেছনে ছুরি মারে। নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডেন সম্ভবত সেই দলেরই সদস্য।

-নয়ন চ্যাটার্জ্জি

AliDropship is the best solution for drop shipping

________________________________________

শেয়ার করতে পারেন।
ধন্যবাদ
www.compuartsdigital.com
________________________________________

ডিজিটাল কন্টেন্ট ফ্রী সংগ্রহ করতে চাইলে যোগাযোগ করুন- 01711 353 363

এ্যাডভান্সড আইসিটি প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য টিপস / সমাধান সহ 418 পৃষ্ঠার প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল- 1

এ্যাডভান্সড আইসিটি প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য টিপস / সমাধান সহ 418 পৃষ্ঠার প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল- 2


header-2আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য ওয়েব সাইটটি পূর্ণাঙ্গরূপে তৈরি করতে
যোগাযোগ করতে পারেন উপরের ঠিকানায ক্লিক করে।


====================================================================
সকল সংবাদপত্রগুলির লিংক
====================================================================
প্রয়োজনীয়, জরুরি, গুরুত্বপূর্ণ কিছু যোগাযোগ নম্বরের লিংক
====================================================================
শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য, পুরষরা উঁকি দিতে চেষ্টা করবেন না . . . ২
====================================================================
অভ্র বা বিজয় সফটওয়্যার ব্যবহার করে ইন্টারনেট জগতে অতি সহজে বাংলা লেখার উপায় . . .
====================================================================
যারা অভ্রতে লেখেন তারা ক্লিক করতে পারেন লিংকটিতে
====================================================================
একহাজার . . . একটি টিপস
====================================================================
ঘুরে আসুন ইন্টারনেটের অন্ধকার দুনিয়ার ডীপ ওয়েব, ডার্ক ওয়েব সাইটগুলো থেকে।
====================================================================
ইংরেজি বিষয় সহ জেনে নিন প্রয়োজনীয়, গুরুত্বপূর্ণ, মজার কিছু তথ্য . . . ১
====================================================================
ইংরেজি বিষয় সহ জেনে নিন প্রয়োজনীয়, গুরুত্বপূর্ণ, মজার কিছু তথ্য . . . ২
====================================================================
জেনে নিন ইংরেজি সহ প্রয়োজনীয়, গুরুত্বপূর্ণ, মজার কিছু তথ্য . . . ৩
====================================================================
জেনে নিন ইংরেজি সহ প্রয়োজনীয়, গুরুত্বপূর্ণ, মজার কিছু তথ্য . . . ৪
====================================================================

 

AliDropship is the best solution for drop shipping