সমিতির শীর্ষ নেতারা অনেকটা নির্দোষ দায়ী দ্বিতীয় সারির সুবিধাভোগী ও অদুরদর্শী নেতারা। “মাধ্যমিক শিক্ষা একটা পঁচা মাল” মাননীয় অর্থমন্ত্রীর এই অপূর্ব , অসাধারন এবং বাস্তবধর্মী মন্তব্যবের কারণ বিশ্লেষণ করতে গেলে মাধ্যমিকের যে দূর্বল দিকগুলো আমার মানসপটে ভেসে উঠে তা বলার পূর্বে স্বীকার করে নিচ্ছি আপনার ব্যাখ্যার সাথে আমার ব্যাখ্যার মিল না-ও হতে পারে। সুতারাং আপনার মন্তব্য কমেণ্ট বক্স -এ শেয়ার করুন ।

১। মাননীয় অর্থমন্ত্রী সম্ভবতঃ লক্ষ্য করেছেন ৮ম প্যে স্কেল ঘোষণার পূর্বে বা পরে অন্যান্য সকল পেশাজীবি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ যেভাবে দক্ষতার সাথে তাদের সৃষ্ট সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য পরামর্শ দিয়েছেন সে তুলনায় মাধ্যমিকের নেতৃবৃন্দ অনুরূপ দক্ষতার সাথে পরামর্শ দিতে পারেন নাই।


২। বিসিএস ২৬ ক্যাডার সহ অন্যান্য পেশাজীবী সংগঠনগুলো যেভাবে সংগঠিত হয়ে তাদের সৃষ্ট সমস্যা সমাধানে আন্দোলনের মাধ্যমে উভয়বিধ চাপ সৃষ্টি করতে পেরেছিল অনুরূপ মাধ্যমিকের নেতৃবৃন্দ চাপ সৃষ্টি করতে পারেন নাই ।


৩। মাধ্যমিকের নেতৃবৃন্দ যে পরামর্শ বা প্রস্তাব দাখিল করেছিল তার মধ্যে হয়ত অনেক দূর্বলতা খুঁজে পেয়েছিলেন ।


৪। অর্থমন্ত্রী হিসাবে তিনি হয়তো লক্ষ্য করেছেন বিভিন্ন সময় অন্যান্য অনেকের আপগ্রেড হলেও মাধ্যমিকের গ্রেড আপডেট হয়নি। যখন তিনি দেখলেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক, প্রধান শিক্ষক, সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার পদকে আপগ্রেড করা হয়েছে তখন তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন প্রাথমিকের অবস্থা মাধ্যমিকের চেয়ে ভাল। মাধ্যমিক আসলে একটা পঁচা মাল।


৫। মাধ্যমিকে নানা কিছিমের শিক্ষক আছেন যা কলেজে নাই। এখানে একটা নিয়োগবিধি করতে ৪/৫ বছর লাগে, টাইমস্কেল/সিলেকশন গ্রেড পেতে প্রায় অর্ধ যুগ চলে যায়। তারপরও এর সুরাহা হয়না


৬। একজন জাঁদরেল, বিচক্ষণ ও কেবিনেট মন্ত্রি হিসাবে তিনি হয়ত জানেন যে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিভিন্ন সময় সহকারি শিক্ষক পদকে ক্যাডার পদ করে মাধ্যমিকের জন্য আলাদা অধিদপ্তর করার তাগিদ দিলেও এদের সাংগঠনিক দূর্বলতার কারণে তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না এ ধরণের আরও অনেক কারণে হয়ত তিনি ক্ষোভ থেকে এ মন্তব্যটা করে ফেলেছেন। কারণ তিনি মাধ্যমিকের গুরুত্ব বুঝেন।

আপনাদের মনোঃসংযোগ ধরে রাখার জন্য এ ব্যাখ্যাটাকে দীর্ঘ না করে বরং এ পরিনতির জন্য সমিতির শীর্ষনেতারা কেন অনেকটা নির্দোষ ? আর সমিতির দ্বিতীয় সারির নেতারা (জেলা, বিভাগীয় ও কেন্দ্রীয় কমিটির প্রধান দুইটি পদ বাদে অন্যান্য পদ) কেন ৯০% দায়ী তার ব্যাখ্যায় আসি-

আপনি যদি একটু সচেতন ভাবে আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস লক্ষ্য করেন তাহলে নিশ্চয়ই দেখতে পাবেন তৎকালীন শাসকগোষ্ঠি তাদের শোষণকে দীর্ঘতর করার অভিপ্রায়ে আমাদের মহান নেতা বঙ্গ বন্ধুকে ’৬৬ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দিয়ে তার ফাঁসির ব্যবস্থা করেছিল। তারা যখন এ ফাঁসির মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের আন্দোলনকে চিরতরে বন্ধ করার অপচেষ্টা করেছিল। তখন আমরা কী দেখলাম ? দেখলাম যে, তাঁর রাজনৈতিক সহযোদ্ধাগণ সংগঠিত হয়ে তৎকালীন ডাকসুর ভিপি তুখোড় ছাত্রনেতা জনাব তোফায়েল আহম্মদের নেতৃত্বে আন্দোলন করে নেতাকে জেল থেকে বের করে এনেছিল যা ইতিহাসের পাতায় ঊনসত্তরের গনভ্যুথান নামে পরিচিত। তোফায়েল আহম্মদরা সেই আন্দোলনে সফল না হলে আমাদের ইতিহাস অন্যরকম হতে পারত। অনুরূপভাবে ’৭১ -এর ২৫ মার্চ কালোরাতে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে পাকিস্থান নিয়ে যাওয়ার পর তাঁর রাজনৈতিক সহকর্মী জাতীয় চার নেতাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ সঠিকভাবে নেতৃত্ব দিয়ে চূড়ান্ত বিজয়ের মধ্য দিয়ে তাদের নেতাকে বীরের বেশে দেশে ফিরিয়ে এনেছিলন। আপনারা এখানে প্রশ্ন করতে পারেন মুক্তিযুদ্বের ইতিহাস আসছে কেন ? আসছে এ কারণ যে পাকিস্থান যেভাবে আমাদেরকে শাসনের নামে শোষণ করেছিল অনুরূপ মাধ্যমিক স্তরও শাষনের নামে শোষিত হচ্ছে। এখান থেকে মুক্তি পেতে হলে একই পন্থায় অগ্রসর হতে হবে।

_________________________________________________________________________

বাসমাশিস -এর ২৫ তারিখের মিটিংয়ের
একটি পর্যালোচনা

_________________________________________________________________________

আপনি যদি মুক্তিযুদ্ধের উপর এ সংক্ষিপ্ত আলোচনাকে বিশ্লেষণ করেন তাহলে এখানে অনেকগুলো বৈশিষ্ট খুঁজে পাবেন-
১. শাসকগোষ্ঠির অত্যাচার ও শোষণ থেকে মুক্তির জন্য শোষিতগোষ্ঠিকে কতগুলো লক্ষ্য স্থির করে একটা নিজস্ব সংগঠনের মাধ্যমে সংগঠিত হয়ে নেতা নির্বাচিত করে নেতার নেতৃত্বে ধারাবাহিক আন্দোলন করতে হয় লক্ষ্যে পৌঁছানো পর্যন্ত।

২. শোষকগোষ্ঠি সেই আন্দোলনকে স্তিমিত করার জন্য নেতা এবং তার সহকর্মীদের উপর বিভিন্ন সময় অত্যাচারের স্টীম রোলার অব্যাহত রাখে

৩. তখন নেতা ও সহকর্মীগণ একে অপরের বিপদে সাহায্যের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে। কারও অনুপস্থিতিতে দায়িত্বভার গ্রহণ করে নেয়।

৪. শোষিতগোষ্ঠি কোন চাপ বা লোভের কাছে আত্মসমর্থন করে না। তারা নীতিতে হিমালয়ের মত অটল থাকে।

৫. সব কিছুই সম্ভব হয় যদি সকলের মধ্যে দেশপ্রেম থাকে। তখন লক্ষ্যে পৌঁছানো শুধু সময়ের ব্যাপার এবং শোষিতের পরাজয় অনিবার্য।

৬. এ জায়গাতে যদি কেউ নতি স্বীকার করে তার বিশেষণ হচ্ছে কাপুরুষ, লোভী, মীরজাফর , রাজাকার, চাটুকার স্বার্থপর। এদের কারণে সফলতা বিলম্বিত হয়।


পাকিস্থান থেকে স্বাধিনতা ছিনিয়ে আনার উদ্দ্যেশ ছিল ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত, দুর্ণীতিমুক্ত সুখী ও সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ বিনির্মাণের। ঐ একই উদ্দেশ্যে আপনাদেরকে স্বতন্ত্র মাধ্যমিক স্তর সৃষ্টি করতে হবে (স্বতন্ত্র অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়) কেননা স্বপ্নের ঐ বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য যে দক্ষ, সৎ, দেশ প্রেমিক, দুর্ণীতিমুক্ত জনসম্পদ তৈরি করা দরকার তা বর্তমান হাতুড়ে বুদ্ধিজীবি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত মাধ্যমিক স্তর দিয়ে সম্ভব না, কেন  ??? তা পরে লিখছি।

এখন মুল কথায় আসা যাক।
শিক্ষা মন্ত্রনালয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা; মাউশি দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এ যাবতকাল পর্যন্ত মহা-পরিচালক ও পরিচালক পদ সরকারি কলেজের স্যারদের এবং উপ-পরিচালক ও সহকারি পরিচালক পদ সরকারি স্কুলের স্যারদের পদায়ন/ডেপুটেশনের মাধ্যমে পুরণ হয়ে আসছে। সংগত কারণে উপ পরিচালক ও সহকারি পরিচালক স্যারদের পক্ষে মাধ্যমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে ইতিবাচক কোন চূড়ান্ত সিদ্বান্ত গ্রহণ করা সম্ভবপর হয়না। বলতে পারেন তারা ১০০% অক্ষম, অসহায় মা’জুর। কারণ তাদের উপরে দুই জন বস আছে। তাহলে মাধ্যমিক শিক্ষার মানোন্নয়ণ কীভাবে হবে ???

দুই ভাবে হত পারে।
প্রথমতঃ মহা-পরিচালক ও পরিচালক স্যারদের ইচ্ছের উপর।
দ্বিতীয়তঃ পেশাজীবী সংগঠনের মাধ্যমে সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করে।

এখন আসুন জেনে নে’য়া যাক মাধ্যমিক শিক্ষার মানোন্নয়ণে প্রথমেই কোন কাজটি করতে হবে। একমাত্র অশিক্ষিত ছাড়া সকলেই বলবেন শিক্ষকদের মান মর্যাদা ও সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করে। অবশ্য বেনিয়ারা তাদের দালাল আর আমাদের তথাকথিত শিক্ষাবিদ ও বুদ্ধিজীবিদের মাধ্যমে বলবে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে, অবকাঠামো উন্নয়ণ করে ও কারিকুলাম পাল্টিয়ে, কেননা এর ফলে এ জায়গায় তাদের অর্থ বিনিয়োগের অপার সুযোগ সৃষ্টি হবে। সে যাই হউক এখন মুল্যায়ণ করুন স্বাধীনতা লাভের পর থেকে শুরু করে ২০১০ সাল পর্যন্ত (সহকারি শিক্ষক সমিতি গঠিত হওয়ার পুর্ব পর্যন্ত) চল্লিশ বছরে মাউশির মহা-পরিচালক ও পরিচালক স্যারেরা মাধ্যমিক শিক্ষার মানোন্নয়ণের নিমিত্তে মাধ্যমিক শিক্ষকদের মান মর্যাদা ও সুযোগ সুবিধা কতটা বৃদ্ধি করেছেন ? আপনাকে বলতে হবে কিছুই করেন নাই কারণ, ১৯৭৩ সালে সহকারি শিক্ষক পদ ছিল ১০ম গ্রড ২০১০ সালেও ১০ম গ্রেডই আছে বরং উপবৃত্তি কর্মকর্তাদেরকে রাজস্ব খাতে নিতে এবং একাডেমিক সুপারভাইজারদেরকে রিটে জিতিয়ে নিতে সব রকম সাপোর্টিং পেপার তৈরী করে দিয়ে সহায়তা করেছেন যার ফলে আমাদের প্রমোশনের পদ সংকুচিত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এমনিইতো ৯০% শিক্ষক সহকারি শিক্ষক হিসাবে যোগদান করে ঐ একই পদ থেকে অবসরে যেতে হয় !!!!!!!! এই যখন বাস্তব অবস্থা তখন কি আমাদের এই সিদ্বান্তে পৌছানো উচিৎ না যে যারা চল্লিশ বছরে শিক্ষকদের জন্য কিছুই করেনি তারা কখনই স্বেচ্ছায় কিছুই করবেন না ??? তাহলে বাকি রইল কী ??? পেশাজীবি সংগঠনের মাধ্যমে সরকারকে চাপ প্রয়োগ করে। এক্ষেত্রে আমাদের পেশাজীবী সংগঠন বাসমাশিসের ভূমিকা কী ছিল তা পর্যালোচনা করা যাক।

বাসমাশিস সত্যিকার অর্থেই শিক্ষকদের মানোন্নয়নে কিছু একটা করার চেষ্টা চল্লিশ বছর ধরে ফাইল ওয়ার্কের মাধ্যমে করে আসতেছিল কিন্তু ২০১০ সাল পর্যন্ত দৃশ্যতঃ কিছুই করতে পারে নাই। কারণ এখানে তারাও উপ পরিচালক ও সহকারি পরিচালক স্যারদের মত অক্ষম, অসহায়, মা’জুর ছিল। কেননা তারা চাপ প্রয়োগ পদ্ধতিতে না গিয়ে হর প্রষাদ শাস্ত্রীর তৈল মর্দন / ঘর্ষণ পদ্ধতি বেছে নিয়েছিলেন। এই সুযোগে কলেজ থেকে আসা স্যারেরা আমাদের এই অসহায় মা’জুরদের ঘ্যাঁনর ঘ্যাঁনর বন্ধ করার মধ্য দিয়ে আমাদের যোক্তিক দাবীকে চাপা দেওয়ার একটা চমৎকার পদ্ধতি আবিস্কার করেন। পদ্ধতিটা হল “আশায় আশায় বাসমাশিস”। এ পদ্ধতি প্রয়োগে তারা এতটাই দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছিল যে, তারা বাসমাশিস নেতাদেরকে আশায় আশায় চল্লিশ বছর ঘুরিয়েছে। এবার এ কার্যকর পদ্ধতি কীভাবে প্রয়োগ করেছিল তা বিশ্লেষণ করা দরকার।


নেতৃবৃন্দ যখন কলেজের স্যারদেরকে অনুনয় বিনয় করে হাত কচলিয়ে বুঝানোর চেষ্টা করেছেন এই বলে যে, স্যার আমাদের সম পর্যায়ের এমনকি আমাদের নীচের অনেককে আপগ্রেড করা হয়েছে সুতারাং আমাদের আপ গ্রেড করা না হলে আমরা শিক্ষকদের কাছে মুখ দেখাতে পারবোনা স্যার। তখন তারা সহকারি ও উপ পরিচালক স্যারদের ডেকে নেতৃবৃন্দের প্রস্তাব অনুযায়ী একটা ফাইল পুটআপ করতে বলেন, তখন নেতারা খুশিতে গদ গদ হয়ে হাসতে হাসতে ধন্যবাদ দিতে দিতে রুম থেকে বের হয়েই খবরটা পাঞ্চ করে দেন সহকর্মীদের মাঝে। তারা স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন ৯ম/১ম শ্রেনীর কর্মকর্তা হওয়ার। এরপর ফাইল ওয়ার্ক চলে শম্ভূক গতিতে। এটা নিয়ে আশাটা বাদ দাও করতে করতে একটা সরকারের ঠিক শেষ সময়ে নিয়ে আসে তখন ফাইলের কাজ প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে আসে কিন্ত চূড়ান্ত করেননা। নানা ঠুনকো অজুহাতে এই করতে করতে সরকার পালটায়। সাথে সাথে নেতারাও পালটায় ফাইল চাপা পড়ে যায়। তখন নেতারা বাড়াবাড়ি করলে তাদের ট্রান্সফারের হুমকি দেওয়া হয় এবং নেতৃত্ব থেকে সরে যেতে বলা হয় একপর্যায়ে তারা সরে যেতে বাধ্য হয় এরপর নতুন নেতা তৈরি করতে করতে নতুন সরকারের অর্ধেক সময় চলে যায়। নতুন নেতাদেরকে একই প্রক্রিয়ায় বোকা বানানো হয়। চক্রাকারের এ প্রক্রিয়ায় চল্লিশ বছর পার করানো হয় অর্থাৎ আমাদের নেতাদের নিয়ে তারা গেম খেলেছিল এরপর আমরা দায়িত্ব নিয়ে সহকারি শিক্ষক সমিতির রেজিঃ বের করে নানা ভাবে সরকারকে চাপ প্রয়োগ করলাম কীভাবে করে ছিলাম তা পুর্বে বিস্তারিত লিখেছি কেন আমরা স্টেজে ছিলামনা তা-ও উল্লেখ করেছি। তবে এটা অস্বীকার করবনা যে, বাসমাশিস নেতারা তখন আমাদেরকে নানাভাবে সহযোগিতা করেছিলেন গোপনে গোপনে।

যেহেতু মাউশিতে আমাদের পরিবার থেকে আসা কর্মকর্তাদের মাধ্যমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে কোন চূড়ান্ত সিদ্বান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নেই, যেহেতু তাদেরকে পদায়ন না করে ডেপুটেশনে আনা হয়, যেহেতু তাদেরকে ডেপুটেশনে আনার ক্ষেত্রে বাসমাশিস নেতাদের পরামর্শ নেওয়া হয় না বা তাদের সিদ্বান্ত কার্যকর হয়না, যেহেতু উক্ত পদগুলো নানা কারণে লোভনীয় ও আকর্ষণীয় সেহেতু এখানে আসা কর্মকর্তাগণকে ইয়েস বস / নো বস হয়ে নিজেদের অবস্থানকে দীর্ঘায়িত করতে হয় এবং রুটিন ওয়ার্কের বাহিরে কিছু অতিরিক্ত কাজ করে দিতে হয়। বলতে পারেন ঐ অতিরিক্ত কাজগুলো করে দেওয়ার শর্তে বা বিনিময়ে তাদেরকে এখানে টিকে থাকতে হয়। আর এটা খুব স্বাভাবিক ঘটনা না যে, যারা নিজেদের ক্ষমতাবলে এখানে আসেন না বা, যাদেরকে বাসমাশিস তার ক্ষমতা দ্বারা তাদেরকে সেট করেন না, তাহলে তারা তাদেরকে যারা এ মহা স্বপ্নের লোভনীয় জায়গায় আনয়ন কারেছেন সঙ্গত কারনেই তারা ঐ বসদের তৈল মর্দন করে বা শর্ত মেনে চলে তাদের অবস্থানকে দীর্ঘায়িত বা সুদৃঢ় করবেন। এ যাবতকাল পর্যন্ত তারা এক্ষেত্রে ১০০% সফলতার স্বাক্ষর রেখেছন। কারণ সব সরকারের আমলে তারা মাধ্যমিকের লোভনীয় জায়গাতেই অবস্থান করেছেন।

এবার আসুন উক্ত বসদের শর্তগুলো কী হতে পারে তা আলোচনা করি।


১। ঢাকা শহর থেকে এমন কিছু শিক্ষক খুঁজে বের করে দিতে হবে যারা হবে নীতি নৈতিকতা বিবর্জিত অতি উচ্চভিলাসী এবং যাদের নেতা হওয়ার খায়েশ আছে শুধু অর্থ কামানোর জন্য এবং যাদেরকে তারা ইচ্ছেমত ব্যবহার করতে পারবে। অতঃপর তাদেরকে দিয়ে বাসমাশিস এর কমিটি তৈরী করতে হবে। যে সময় নির্বাচিত কমিটি দরকার হবে তখন তাদেরকে পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত করে দিতে হবে।


২। যে সকল শিক্ষক সত্যিকার অর্থে মাধ্যমিক শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করতে চাইবে তাদেরকে দমন করতে হবে। এক্ষেত্রে ট্রাস্ফারকে প্রধান হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করবে। ট্রান্সফারের ব্যাপারে তাদের সুপ্রিম পাওয়ার দেওয়া হয়।


৩। বাসমাশিস ছাড়া অন্যকোন সমিতি যাতে না হতে পারে সে দিকে নজর রাখতে হবে।


৪। প্রয়োজনে ঐক্যের নামে নাটক করতে হবে। শিক্ষকদের মধ্যে সবসময় বিভাজন তৈরি করে রাখবে।


৫। সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে সমিতির নেতা পাল্টাতে হবে। ইত্যাদি ইত্যাদি।


এখন আপনারা বলুন বিশেষ করে যারা সিনিয়র আছেন এ যাবতকাল পর্যন্ত যারা নেতা হয়েছেন তারাতো এভাবেই নেতা হয়ে আসছেন। সুতারাং আপনারাই বলুন এভাবে যারা নেতা নির্বাচিত হয় তাদের সত্যিকার অর্থে কোন মেরুদণ্ড থাকে ??? মেরুদণ্ডহীন প্রাণী কি সোজা হয়ে হাঁটতে পারে ??? আর এ ধরণর নেতাদের কাছে কোন বৈপ্লবিক কিছু আশা করা কি উচিত ??? আরে বাবা !!!! এরাতো আপনার রুটিন পাওনাটা যথা সময়ে করে দিতে পারে না যেমন টাইম স্কেল / সিলেকশন গ্রেড নিয়োগ বিধি ইত্যাদি ইত্যাদি। অবশ্য এর মধ্য আমি গভীর ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছি। যেমন এখানে বিলম্ব করাতে আমাদের মূল দাবী এন্ট্রি পদ ৯ম গ্রেড চাপা পড়ে গেছে।

ইলেকশন / সিলেকশন যেভাবেই হউক বাসমাশিস নেতারা সব সময় ঝুঁকিমুক্ত হয়ে কিছু একটা করার চেষ্টা করেছেন অর্থাৎ তোষামোদি করে।  তাদের বর্ণাঢ্য প্রায় অর্ধশত বছরের ইতিহাসে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে দাবী আদায়ের চেষ্টা করেছেন এমন নজীর প্রকাশ্যে কেউ রেখে যেতে পারেন নাই।  আর এ না পারার কারণ তারা তাদের বানানো নেতা।  কাদের বানানো, নিশ্চয়ই এতক্ষণে বুঝতে পেরেছেন !!! পুরো বিষয়টা হচ্ছে চেইন অব কমাণ্ড।  কমাণ্ডার কারা আপনাকে তা বুঝতে হবে।  এরপরও যদি আপনি মাইক্রস্কোপ বা অনুবীক্ষণ যন্ত্র নিয়ে তাদের কিছু একটা করার চেষ্টার ধরণ নিয়ে গবেষণা করেন তাহলে হয়তো দেখতে পাবেন বাসমাশিসের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ জেলা, বিভাগীয় এবং কেন্দ্রের অন্যান্য নেতাদের অবিরাম চাপের কারণে প্রকাশ্যে না হলে ভিতরে ভিতরে দাবী পূরণের জন্য চেষ্টা করেছেন, তাদের উপর আরোপিত শর্ত ভঙ্গ করেছেন তাদের এই চেষ্টাটা যখনই বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে গিয়েছে তখনই তাদেরকে ট্রান্সফার করে জামালপুর বা অন্য কোন দূর্গম এলাকায় পাঠিয়ে দে’য়া হয়েছে এবং ঠুনকো অজুহাত দাঁড় করিয়ে সমিতি থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।


এখন আপনারাই বলুন উনাদের দিনকালতো বেশ ভালভাবেই চলতেছিল শুধু আপনাদের (২য় সারির নেতা) অনুরোধে এবং কিছুটা বিবেকের তাড়নায় বসদের চোখ রাঙ্গানীকে উপেক্ষা করে কিছু একটা করার চেষ্টা করেছেন তখনই তাদের উপর নির্যাতন / অত্যাচারের স্টীম রোলার শুরু হয়েছে।  তখন কি আপনাদের নিয়মতান্ত্রিকভাবে এর জোড়ালো প্রতিবাদ করা উচিৎ ছিলনা না ???? কারণ উনিতো একজন সাধারন শিক্ষক না, উনি আপনার পরিবারের সকলের প্রতিনিধি, উনাকে ইচ্ছে করলেই ট্রান্সফার করা যায়না বা করা উচিত না।  আর যখনই করবে তখনই আপনাদেরকে বুঝতে হবে এটা আপনাদের সকলের প্রতি এমন একটা থ্রেড বা হুমকি যার মাধ্যমে আপনাদেরকে মেসেজ দেওয়া হল বাড়াবাড়ি করাতে তোমাদের শীর্ষ নেতার এ অবস্থা তো তোমরা করলে কী হবে বুঝে নাও।  আর আপনারা এ মেসেজের অর্থ এত ভালভাবে বুঝেন যে এরপর আপনারা একেবারে সারাটা চাকরী জীবনের জন্য চুপসে যান, এমনকী তাদের সাথে প্রকাশ্যে যোগাযোগ রাখাটাকে নিরাপদ মনে করেন না।  তার মানে কী দাঁড়াল ? আপনারা হুমকিতে ভয় পেয়েছেন।  তারা এভাবে বারবার সফল হয়ে যায় এবং এভাবেই চল্লিশ বছর পার হয়ে যায়।  এখানে বলে রাখা দরকার যে, যদিও কোন জেলা বা বিভাগীয় বা কেন্দ্রীয় অন্যান্য নেতা এর প্রতিবাদ করার চেষ্টা করে তার পরিনতীও অনুরূপ হয়।  কারণ, প্রতিবাদের ভাষা যেভাবে জোড়ালো হওয়ার দরকার ছিল সেভাবে হয় না।  এরপর যখন এভাবে ৬/৭ মাস চলে যায় ভিক্টিম যখন দেখেন যে তার পাশে কেউ নাই তখন নিজের উপর রাগ করেন, নিজেকে নিজে অভিশাপ দেন। পরে বাধ্য হয়ে যারা তাকে শাস্তি স্বরূপ ট্রান্সফার করেছে তাদের সাথে যোগাযোগ করে নিজের ভুল স্বীকার করে।  এই সুযোগে তারা সুন্দর একটা ডায়লগ ছাড়েন, “আরে মদন !!!!!! আমরা বলেছিলাম না যাদের জন্য আমাদের শর্ত ভঙ্গ করছ তারা কেউ তোমার বিপদে পাশে থাকবেনা। এবার সামলাও বুঝ এবার !!! তখন যতই খোঁচা দিয়ে যাই বলুক না কেন সব সহ্য করে নিয়ে কাচুমাচু করে তওবা করেন এরকম ভুল আর কখনও করবেন না।

এরপর আরও কঠিন শর্তারোপ করা হয়।  যেমন সহকারি শিক্ষক সমিতির উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে সমিতির সক্রিয় নেতাদের বাসমাশিসে প্রবেশ করাতে হবে, সমিতির অবস্থা এমন করতে হবে যে সহকারি শিক্ষক সমিতির নাম উচ্চারণ যেন কেউ না করতে পারে।  ঠিক আছে স্যার।  এভাবে তওবা পড়ায়ে নতুন দায়িত্ব দিয়ে তাদেরকে আবার সাবেক জায়গায় নিয়ে আসে।  এরপর থেকে তাদের সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে থাকে।  যেহেতু মাউশিতে আমাদের কর্মকর্তারা তাদের কলিগ তাই এক পর্যায়ে সাহস করে জিজ্ঞেস করে স্যার আপনারা সহকারি শিক্ষক সমিতির উপর এতটা ক্ষেপা কেন ??? তখন আবারও ডায়লগ ছাড়েন আরে মদন !!!!! আমাদের বসেরা মনে করতেছেন সহকারি শিক্ষকদেরকে যা দিতে হল তা তো ওদের আন্দোলনের কারনেই দিতে হল ।


এবার আসেন এক্ষেত্রে মানে তাদের বদলি করার পর দ্বিতীয় সারির নেতাদের বা সকল শিক্ষকের কী করা উচিত ছিল তা নিয়ে আলোচনা করি-

যদি আপনি বিশ্বাস করেন আপনার নেতার কমিটমেন্ট আছে। তিনি আপনার পেশার মানোন্নয়নের মাধ্যমে মাধ্যমিক শিক্ষার প্রভূত উন্নয়ন সাধন করে কাংখিত বাংলাদেশ বিনির্মাণে সরকারকে সহযোগিতা করতে কমিটেড। নেতা হিসাবে ত্যাগী, নির্ভীক, নিঃস্বার্থ, নির্লোভ, দায়িত্বশীল, দেশপ্রেমিক ও আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন এবং আপনি যদি মনে করেন আপনাদের দাবী আদায়ের ক্ষেত্রে আপোসহীন- যার কারণে তার ট্রান্সফার করা হয়েছে বা অন্য কোন শাস্তি দেওয়া হয়েছে তাহলে আপনাদের সবাইকে মনে করতে হবে এ শাস্তিটা আপনাদের সবাইকে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং, এর প্রতিবাদ সবাইকে এক সাথে এমনভাবে করতে হবে যেন, উক্ত ট্রান্সফার প্রত্যাহার করতে বাধ্য হন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে তার জায়গা থেকে সরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। কীভাবে করবেন ???
এর জন্য প্রতিটি স্কুলে একটি করে জরুরি সভার আয়োজন করতে হবে। সভায় সকলের কাছে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য এমন একজন শিক্ষককে মডারেটরের দায়িত্ব দিয়ে সভা পরিচালনা করাতে হবে এবং সবচেয়ে ভালো বক্তা যিনি তিনি এভাবে আহ্বান করবেনঃ আমাদের মধ্যে আদর্শগত ও ব্যক্তিগত স্বার্থের দ্বন্দ্ব, এবং ধর্মের পার্থক্য থাকতে পারে এর জন্য আমাদের মধ্যে বিভাজনও থাকতে পারে, কিন্তু যে বিষয়টা আমাদের সকলের স্বার্থসংশ্লিষ্ট, সকলের মানসন্মানের প্রশ্ন, মাধ্যমিক শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সেক্ষেত্রে আমদের সকলকে এক মতের হতেই হবে এবং সম্মিলিতভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং আজকে যে সিদ্বান্ত নেওয়া হবে সবাই একত্রিত হয়েই বাস্তবায়ন করতে হবে, এরপর উক্ত সভায় একটা চূড়ান্ত সিদ্বান্ত গ্রহণ করে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করতে হবে।

ধরুন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতিকে ট্রান্সফার / বহিস্কার করা হয়েছে তখন স্কুল কমিটি প্রধান জেলা প্রধানকে বলবে বিভাগীয় ডিডি স্যার কে বলবেন আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের নেতার ট্রান্সফার / বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার করতে হবে, না করলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যাব একথা মাউশির ডাইরেক্টর / ডিজি মহোদয় স্যারকে জানিয়ে দেন। পাশাপাশি সমিতির বিভাগীয় নেতাকে বলতে হবে কেন্দ্রীয় নেতাদেরকে আমাদের সিদ্বান্তের কথা জানিয়ে দিতে আন্দোলনের ধরণ হতে পারে স্মারকলিপি প্রদান, কালো ব্যাজ ধারণ , মানব বন্ধন, অফিস ঘেরাও সংবাদ সন্মেলন অবশেষে কর্ম বিরতি ইত্যাদি ইত্যাদি . . .। এভাবে একসাথে সর্বত্র করতে পারলে মাউশির কর্তা ব্যক্তিদের মসনদ কেঁপে উঠবে। তখন তারা বাধ্য হবেন প্রত্যাহার করতে।

আমার বিশ্বাস বর্তমানে আমাদের যে সমস্যা মানে টাইম স্কেল / সিলেকশন গ্রেড পাওয়ার ক্ষেত্রে এভাবে পদক্ষেপ নিতে পারলে দ্রুত রেজাল্ট পাওয়া যেত।

আপনি যদি একটি শক্তিশালী সংগঠনের মাধ্যমে আপনার অধিকার আদায় করতে চান, তাহলে আপনার সং গঠনকে তৃণমূল পর্যায়ে উল্লেখিতভাবে সংগঠিত হতেই হবে। যেমন- বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার, ড্যাব (বাংলাদেশ ডক্টরস এসোসিয়েসন), নার্সদের সংগঠন প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি সহ অনেক এ ধরণের শক্তিশালী সংগঠন এদেশেই রয়েছে। আর যতদিন পর্যন্ত না আপনারা এভাবে সংগঠিত হতে পারবেন ততদিন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতাগণ আপনাদের জন্য কিছুই করতে পারবেন না। পারবেন শুধু আপনাদেরকে ব্যবহার করে নিজের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে। সংগত কারণেই আমি সমিতির কেন্দ্রীয় নেতাকে অনেকটা নির্দোষ মনে করি এবং দ্বিতীয় সারির নেতাদেরকে ৯০% দায়ী মনেকরি। ঢাবি -এর চ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় এবছরও পাশের হার তিনের নীচে। আর এজন্যই আমি মনে করি “মাধ্যমিক শিক্ষা পঁচা মাল’ মাননীয় অর্থমন্ত্রীর উক্তিটি ১০০% যথার্থ এবং এর জন্য দায়ী আমাদের দুর্বল পেশাজীবি সংগঠন। কীভাবে ??? পরে ব্যাখ্যা করবো।

আমার একজন সুহৃদ যিনি আমাদের আন্দোলনের সময় যথেষ্ট পরিশ্রম করেছিলেন এখনও মাঝে মাঝে আমার লিখার উৎসাহ ব্যঞ্জক কমেন্ট করে অনুপ্রেরনা দিয়ে থাকেন তিনি মানুষ ও বন্ধু হিসাবে খুবই চমৎকার। আপাদমস্তক রোমান্টিক। তার কমেন্টে আমি উৎসাহ পাই কিন্তু আমার ৬ষ্ট পর্বে তিনি যে কমেণ্ট করেছেন তাতে আমার হতাশ হওয়ার কথা, কিন্ত তা না হয়ে আমি বিস্মিত হয়েছি। কারণ, যে বাংলাদেশের মানুষ ভাষার অধিকারের জন্য জীবন দিতে পারে, যে দেশে সালাম, রফিক, জব্বারদের মত বীরের জম্ম হয়, যে দেশের মানুষ স্বাধীনতার জন্য অকাতরে প্রাণ বিসর্জন দিতে পারে, যে দেশ বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফাকামাল, সিপাহী নূর মোহাম্মদদের মত বীরশ্রেষ্ঠদের স্বদেশভূমি, যে দেশের গণতন্ত্রের জন্য শহীদ নূর হোসেন হাসি মুখে মৃত্যুকে আলিঙ্গণ করতে পারে, যে দেশে শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাষানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মত নেতার জম্ম হয় সেই দেশে তাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার উদ্দ্যেশে মাধ্যমিক শিক্ষা স্তরে একটি শক্তিশালী পেশাজীবী সংগঠন তৈরীর স্বপ্ন অবাস্তব / কাল্পনিক !!!!!! এটাও আমাকে বিশ্বাস করতে হবে !!!! তা-ও আবার একজন রোমান্টিক বন্ধুর কাছ থেকে !!! হ্যাঁ, এটা ঠিক যে- আমার ঐ পর্বে কোন ইতিবাচক কমেন্ট পড়েনাই। কেন পড়েনাই সেটাতো আমি জানি। ঐ পর্বে মাউশির কর্তাব্যক্তিদের মানে স্যারদের মসনদ কাঁপানোর কথাছিল এজন্য কেউ সাহস করে কমেণ্ট করেন নাই। অথচ আমি জানি আমার লেখা গুলো অনেকে প্রিন্ট করে সহকর্মীদের পড়তে দেন এবং আমার সাথে ফ্রেণ্ডশীপ করার জন্য বলেন। তাহলে এখন প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি এই দূর্বল চিত্তের সহকর্মীদের দিয়ে কীভাবে আপনার স্বপ্নের শক্তিশালী সংগঠন তৈরী করবেন ??? আপনি কি সত্যিই পারবেন ??? আমি অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে বলবো আমরা পুর্বে পেরেছিলাম এবং দেখিয়ে দিয়েছিলাম। আপনারা আমাদের ডাকে হাজার হাজার শিক্ষক সাড়া দিয়েছিলেন আর সাড়া দিয়েছেলেন বলেই এইটুকু পেয়েছিলেন। আস্তে আস্তে সেটা প্রমাণীত হতে চলেছে। আর এটা প্রমাণ করার জন্যই আমরা নিষ্কৃয় ছিলাম। আমাদের  ‍পূর্বেকার কতিপয় সহযোদ্ধা যারা বর্তমান বাসমাশিস নেতা আমাদেরকে অনুরোধ করেছেন সব কিছুর জন্য মানে টাইমস্কেল / সিলেকশন গ্রেড, নিয়োগ বিধি চূড়ান্ত করার জন্য আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দিতে। এর মধ্যে কিছু না হলে তারা সবাই আবার প্যাভিলিয়নে ফিরে আসবেন। তারা যখনই ফিরবেন আমাদেরকে সহযোগিতা করবেন তখন সব কিছু আদায় করা হবে যা সময়ের ব্যাপার মাত্র। কারণ এখন অনেক কিছু শিখেছি গেছি, যা আগে জানা ছিলনা। এর মধ্যে আমি চেষ্টা করব আমার সন্মানিত সহকর্মীদের ধরিয়ে দিতে যে নিজেদেরকে ভালবাসতে শিখুন এবং সন্মান করতে শিখুন, তাদেরকে ধরিয়ে দিতে চেষ্টা করব আপনার দাবী পূরণর মধ্যে এই মূহুর্তে দেশের সবচে’ বেশী কল্যাণ নিহিত রয়েছে। এ কথা রাষ্ট্রের কর্তা ব্যক্তিদের বুঝাতে পারলে সাথে সাথেই আপনার দাবী পূরণ।

আমি যখন আপনাকে অতি সাধারণ একটা প্রশ্ন করবো, স্যার, আপনি কি আপনাকে ভালোবাসেন অথবা নিজেকে সন্মান করেন ??? তখন আপনি হয়ত কিছুটা ক্ষেপে গিয়ে বলবেন, how dare !!!! what a silly question you ask me !!!!! you can’t ইত্যাদি ইত্যাদি . . . এরপর একটু শান্ত হয়ে বলবেন, দেখুন মিঃ বেলাল, এতদিন আমাদের সমিতির ব্যাপারে বিশ্লেষণধর্মী যা লিখেছন তা খুব ভালো লেগেছে কিন্তু এর মানে এই নয় যে, আপনাকে আমরা আমাদেরকে অপমান করার লাইসেন্স দিয়ে দিয়েছি। আপনার এধরণের প্রশ্নে আমরা অপমানবোধ করছি। কারণ, যে নিজেকে সন্মান করতে জানেনা তার এই পৃথিবীতে বাঁচার কোন অধিকারই নাই কারণ তাকে দিয়ে পৃথিবীর কোন কল্যাণ সাধন হয় না- হতে পারে না। পাল্টা প্রশ্ন করবেন, আপনি বলুনতো- পৃথিবীর কোন মানুষ নিজেকে ভালবাসেনা বা সন্মান করেনা ??? আমি বলবো অন্য সবাই করলেও আমরা করিনা। আপনি চাইলে। আমি যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করে দেব। তাহলে আসুন আমরা সবাই ভালোবাসার মানুষ বা বস্তুর জন্য কী করি তা একটু পরখ করে দেখা যাক।


ধরুন, আপনার ১৫/১৬ বছরের অত্যন্ত মেধাবী, সুদর্শন, ভাল ক্রিকেট প্লেয়ার, ভদ্র, মার্জিত ও অতি নিরীহ টাইপের সোনার টুকরো একটা ছেলে আছে। যাকে আপনারা মানে পরিবারের সবাই এমনভাবে টেক কেয়ার করেছেন তার স্বাস্থ্য এক্কেবারে ফার্মের মুর্গীর মত নাদুস/নুদুস, মুখমণ্ডলও প্রভাতের সূর্য্যের ন্যায় উজ্জ্বল। প্রতিদিন সে নির্দিষ্ট টাইমে স্কুলে যায়। হঠাৎ একদিন দেখলেন ছেলেটি স্কুলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরই হাউ মাউ করে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ী ফিরছে !!! আপনারা সবাই দৌঁড়ে তার কাছে গিয়ে দেখলেন সোনার টুকরো ছেলেটির শার্ট প্যান্ট ও উজ্জল মুখখানা কাদায় এমনভাবে পরিপূর্ণ, যা দেখে স্পষ্টতঃই বোঝা যায় কারা যেন বেচারাকে কিছু উত্তম মধ্যম দিয়ে চেহারা খানাকে আলুভর্ত্তা বানিয়েছে দিয়েছে !!! এরপর যখন জানতে পারলেন আপনাদের মহল্লার খুব প্রভাবশালী ব্যক্তির অতিদুষ্টু ছেলেটিই তার সাঙ্গ পাংগ নিয়ে তুচ্ছ একটা বিষয়কে কেন্দ্র করে তার এ জবুথুবু ও বেহাল দশা করেছে। তখন আপনি কী করবেন ????

দুইটি পথই আপনার সামনে এবার উন্মুক্ত।
প্রথমতঃ আপনি যদি দুর্বল বা কাপুরুষ টাইপের হন তাহলে ছেলের সাথে হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করবেন।
দ্বিতীয়তঃ আপনি যদি সুপুরুষ হন তাহলে সবাইকে নিয়ে এর প্রতিবাদ করবেন, সে যতই প্রভাবশালী হউক না কেন। এটা না করার অর্থই হলো পরবর্তীতে ঐ দুষ্টু ছেলেটিকে আপনার সোনার টুকরা ও ফার্মের মুরগির মত বাচ্চাটাকে শিক কাবাব বানিয়ে খাওয়ার অনুমতি দেওয়া। আপনি ১ম অথবা ২য় কাজটি কেন করবেন ??? ভালবাসেন বলেইতো করবেন। কিন্ত মাউশি বা বাসমাশিস আপনাকে বা আমাদের সকলকে যেভাবে বছরের পর বছর নির্যাতন করে যাচ্ছে আমরা কি এর প্রতিবাদ করছি বা করার পরিকল্পনা করছি ???

কীভাবে নির্যাতন করছে তা এবার লিখছি-


১। টাইমস্কেল/সিলেকশন গ্রেড সরকারি চাকুরিজীবীদের একটা রুটিন পাওনা মানে চাকুরির বিধান অনুসারে নির্দিষ্ট সময় শেষে সরঃ চাকুরিজীবীগণ এ সুবিধাগুলো প্রাপ্য হন ।  যে কোন কারণে কারও চাকুরিচ্যূত করা যেতে পারে, কিন্তু চাকুরি বহাল থাকলে উক্ত সুবিধাগুলো কোনভাবেই বাদ দেওয়া যায়না বা বাদ হয় না ।  যেহেতু আমাদেরকে একই স্কেলে রেখে ২য় শ্রেণির গেজেটেড মর্যাদা দেওয়ার পূর্বে আরও অনেককে অনুরূপভাবে মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল এবং ইতোঃমধ্যে তাদের এ সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন করা হয়েছিল সেহেতু কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতা থাকলে তাদের রেফারেন্স এ আমাদের এ সংক্রান্ত জটিলতা অনেক আগেই নিরসন হয়ে যাওয়ার কথা ।  এছাড়া আমরা সবাই জানি এজন্য জাতীয় সংসদে নতুন কোন এমেন্টমেন্ট আনতে হবে না অর্থাৎ এ জটিলতা প্রচলিত আইন বা বিদ্যমান আইন দিয়েই করা হবে ।  তাহলে আপনিই বলুন কেন এত দীর্ঘসূত্রতা ??? এর একটাই কারণ হতে পারে এর মাধ্যমে আমাদেরকে দূর্বল করে দমন করা । আর এ জায়গাতে সফল হতে পারলে রাস্তা থেকে তুলে এনে ২৪০ জন একাডেমিক সুপারভাইজারদেরকে সিনিয়র শিক্ষক পদে নিয়োগ দিয়ে প্রতিজন থেকে দশ লক্ষ টাকা করে হাতিয়ে নিয়ে মোট চব্বিশ কোটি টাকার বাণিজ্য করা ।  সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যদি এমন খায়েস থাকে তখন ওদের উকিল নোটিশ খেলাটা যে তাদেরকে সহযোগিতা করার জন্য এবং এটা সম্পূর্ণ পরিকল্পিত এটা বুঝতে যেন কারও বেগ পেতে না হয় তার জন্য এই পূর্বাভাস ।

এখন আপনারাই বলুন একটা অসৎ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে আমাদেরকে এভাবে মানসিক যন্ত্রনা দেওয়াটা কি ঐ দুষ্ট ছেলেটি নির্যাতন করেছে তার চেয়ে কোন অংশে কম ??? নিশ্চয়ই না ।  তাহলে আমরা কেন এর প্রতিবাদ করি না । এর মানে কি এই নয় যে আমরা আমাদের কে ভালোবাসিনা বা সম্মান করিনা ???

২। আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন যে যেখানে একই ছাদের নিচে কলেজের স্যারদের প্রমোশন (সহকারি অধ্যাপক, সহযোগি অধ্যাপক ও অধ্যাপক) যথা সময়েইতো হয়ই অনেক সময় শুণ্য পদের চেয়েও বেশী হয় অর্থাৎ অগ্রিম হয়। অথচ আমাদের প্রমোশন পদগুলো (সহকারি প্রধান শিক্ষক, প্রধান শিক্ষক, বিদ্যালয় পরিদর্শক, সহকারি জেলা শিক্ষা, অফিসার, জেলা শিক্ষা অফিসার, সহকারি পরিচালক ও উপ-পরিচালক) বছরের পর বছর শুণ্য রাখা হয়। অদা/চদা/ ভার দিয়ে চালানো হয়। যার জন্য প্রায় ৯০% শিক্ষক চাকুরি জীবনে কোন পদন্নোতি না পেয়েই অবসরে যেতে হয়। যা বাংলাদেশ তথা বিশ্বে একটি বিরল ঘটনা। কিন্তু কেন এই বিমাতাসুলভ আচরণ ??? যেহেতু উল্লেখিত পদগুলিতে প্রমোশন দিলে যে অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন হবে তাতো সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত একাউন্ট থেকে দেওয়া হবে না তারপরও কেন এই অবিচার ??? এর একটাই কারণ হতে পারে তাহলো দমন করা- দমননীতি পালন করা।

যাদেরকে এ পদগুলোতে বসানো হবে তারা সব সময় ইয়েছ বস / নো বস হয়ে থাকবে এদেরকে যখন যা করতে বলা হবে তখন তারা তা করতে বাধ্য থাকিবে যদি তারা তাদের পদে বহাল থাকিতে চায়। আর এটাকেই বলে দমননীতি। যদি এ পদগুলোতে প্রমোশন দেওয়া হত তাহলে তাদেরকে দিয়ে তাদের ইচ্ছেমত আনঅফিসিয়াল কাজ করানো সম্ভব হত না। কারণ তখন একজন প্রধান শিক্ষক ভাবত যার অন্তত মিনিমাম আত্মসন্মানবোধ আছে বাপু তুমি আমাকে যেখানেই পাঠাও আমিতো হেড স্যার ই থাকব। কাজেই উক্ত পদগুলোতে প্রমোশন দিয়ে দিলে যেকোন সময় তারা বিদ্রোহী হয়ে উঠলে তাদেরকে আর ধরে রাখা সম্ভব হবে না, তাদেরকে ইচ্ছেমত ব্যবহার করা যাবেনা যেমনটা মাউশির সহকারি পরিচালক ও উপ-পরিচালক এবং বাসমাশিস নেতৃবৃন্দদেরকে ব্যবহার করা যাচ্ছে। আশা করি এর পর আপনাদের বুঝতে বেগ পেতে হবে না কাদের নির্দেশে রিট করে নানা পদে প্রমোশন ঠেকিয়ে রাখা হয়েছে।

২য় পর্ব
বিষয়ঃ টাইমস্কেল / সিলেকশন গ্রেড
সেলমী স্যারঃ বর্তমানে আমাদের প্রায় অর্ধেক সন্মানিত সহকর্মী এ বিষয়ে সংগত কারণেই খুবই উদ্বিগ্ন যে, যথা সময়ে তাদের এই রুটিন পাওনা না পাওয়ার কারণে। এ বিষয়ে জনাব সেলমী স্যারের বক্তব্য মাউশিতে আমাদের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা খুব আন্তরিক কাজটা দ্রুত হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে। তারাও খুবই মারাত্মক পরিশ্রম করে যাচ্ছেন এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পেপারস সংগ্রহে। কিন্ত বিষয়টা এত কুটিল, জটিল, দুরহ যে, সকল মন্ত্রণালয়ের কোথাও এমন নজীর নাই যে স্ব-বেতনে এরকম গেজেটেড মর্যাদা পেয়ে টাইমস্কেল / সিলেকশন গ্রেড পেয়েছে। সকল মন্ত্রণলয় ঘুরে অবশেষে একটা ক্ল্যু তিনি পেয়েছেন যে, মহান পেশার নার্সদেরকে সরকার স্ব-বেতনে একই মর্যাদা দিয়েছে। এতে তাদের সময় লেগেছে মাত্র চার বছর !!!!! এবার বুঝেন তারা আপনাদের জন্য কত পরিশ্রম করেছে !!!! কতটা মাথার ঘাম পায়ে ফেলেছে !!!! কত ঘুম-নিদ্রা হারাম করেছে !!!!

আরে বাবা আর না হলেও ৫০ টি মন্ত্রণালয়তো রয়েছে। সবই করেছে শুধু আপনাদের মঙ্গলের জন্য। এই ক্ল্যু পাওয়ার পর ভিষন খুশিতে, মুচকি/অট্ট হাসিতে, উৎফুল্ল চিত্তে বিজয় উল্লাসে দল বল সহ ছুটে চলেছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে টপ টু বটম তন্ন তন্ন করে মনের আনন্দে খুঁজেছেন কিন্তু দূর্ভাগ্য বেচারাদের, দূর্ভাগ্য আমাদের, সেখানে তারা যা পেলেন তা মাথায় বাজ পড়ার মত অবস্থা !!!! অর্থাৎ তারাও মর্যাদা পেয়েছে ঠিকই কিন্তু তাদের টাইমস্কেল / সিলেকশন গ্রেড কিছুই তারা পায়নি। এরপর তারা ব্যর্থ মনে, ব্যথিত চিত্তে ও মনে অনেক কষ্ট নিয়ে মাউশিতে ঢুকে বসদের কাছে গিয়ে বলেন, স্যার তাড়াতাড়ি ঠাণ্ডা পানির ব্যবস্থা করেন। একথা বলে তারা শরীর এলিয়ে দিয়ে চেয়ারে বা সোফায় বসে পড়েন, মানে প্রাণ যায় যায় অবস্থা !!! এর কিছুক্ষণ পর কিছুটা সুস্থ্য হয়ে হাত কচলাইতে কচলাইতে বলেন স্যার, ও স্যার গো দেখলেনতো স্যার, চারটা বছর কী খাটনিটাই না খাটলাম। কিছুই করতে পারলামনাগো স্যার। শিক্ষকদেরকে কী জবাব দিবগো স্যার। আপনারা কিছু একটা করেন স্যার। আমাদেরকে বাঁচান স্যার। তখন স্যারেরা বলেন, আমরা কী বসে আছি !!!! এই দেখেন চার বছর ধরে আইনের বইগুলো পড়ে পড়ে বইয়ের সমস্ত পাতাগুলো ছিঁড়ে ফেলেছি কিন্তু কোন কূল কিনারা করতে পারছিনা। আমরা কী করব বলুন ??? তারপরও কিছু একটা তো করতে হবে। আরও একটু অপেক্ষা করুন, ধৈর্য্য ধরুন, আর মাত্র কয় দিন, আল্লাহ আল্লাহ করুন উপায় একটা হয়ে যাবে। ইত্যাদি ইত্যাদি . . .

আর সম্ভবতঃ এই আশ্বাসের কারণেই সেলমী স্যার তাদের ব্যাপারে সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, তারা কাজ করে দেওয়ার ব্যাপারে তৎপর ও আন্তরিক।

অপর দিকে সেলমি স্যার এর সতীর্থ অর্থাৎ একই সমতির তুখোড় নেত্রী এস. কে. আপা বলতেছেন মন্ত্রণালয়ে নক করলেই বলে, যে কাজটা করতে অধিদপ্তরে তিন বছর সময় নিয়েছেন, এখানে আপনারা তা তিন দিনে করতে চান ??? তার এ বক্তব্য থেকে এটা কি প্রমাণিত হয় না যে, অধিদপ্তরে কাজের অবহেলা ছিল।

সেলমী স্যার এর বিভিন্ন সময় তার কমেন্ট, স্টেটমেন্ট, বিভিন্ন আপডেট বিশ্লেষণ করলে এ ব্যাপারে তার এবং মাউশির কর্তা ব্যক্তিদের ঠিক এ ধরণের ভূমিকা ছিল বলে ধারণা পাওয়া যায়। আমার ভুলও হতে পারে। এখানে তিনটি পয়েন্টে সামারি করা যায়-

১। মাউশির কর্তাদের আন্তরিকতা ও তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম।

২। এ বিষয়ে সুস্পষ্ট বিধি না পাওয়া

৩। এ ধরণের কোন রেফারেন্স না থাকা

( ২ নং ও ৩ নং ) পয়েন্ট বিলম্বের মূল কারণ

এক্ষেত্রে আমি তিনটি পয়েন্টেই সেলমী স্যার এর সাথে যৌক্তিক কারণে দ্বিমত পোষণকরছি।

আমার বক্তব্যঃ আমি প্রথমে আপনাদের সামনে এ বিষয়ে আমাদের স্বার্থের সাথে সম্পর্কিত দুইটি প্রজ্ঞাপনের উদাহরণ টেনে আমার যুক্তি উপস্থাপন করতে চাই। সর্বশেষ ৮ম পে স্কেল ২০১৫ সালের ১ জুলাই তারিখে ঘোষণা করার কথা ছিল। কিন্তু সরকার যৌক্তিক কারণেই হয়ত ঐ তারিখে পারে নাই। তবে এ কথা মাননীয় অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করে দিয়েছিলেন যে, পেস্কেল যখনই ঘোষণা করা হবে তা ১ জুলাই/২০১৫ থেকেই কার্যকর হবে। সুতারাং টাইমস্কেল / সিলেকশন গ্রেড ৩০ জুন / ২০১৫ পর্যন্ত পূর্বের নিয়মে পাবে এবং ১ জুলাই/২০১৫ থেকে নতুন নিয়মে হবে। অর্থাৎ ১ জুলাই / ২০১৫ থেকে পূর্বের নিয়মে টাইমস্কেল/সিলেকশন বন্ধ।

কিন্তু কে শুনে কার কথা। যেহেতু পেস্কেল ঘোষণা হয় নাই সুতারাং আমরা আমাদের পাওনা নিয়ে নিব। এ নীতিতে যাদের ক্ষমতা আছে, শক্তিশালী সংগঠন আছে, তারা ১৫/২০ দিনের ফাইল ওয়ার্ক করে মাননীয় মন্ত্রীর নির্দেশকে উপেক্ষা করে ১ জুলাইয়ের পর পেস্কেল ঘোষণার পূর্ব পর্যন্ত যার যখনই ডিউ হল সে তখনই আদায় করে নিল। যখন পেস্কেল ঘোষণা করা হল তখন যারা যারা নিয়েছে তাদেরকে মাননীয় অর্থমন্ত্রী টাকা ফেরত দিতে বললেন। এখানেও তারা নির্দেশ অমান্য করলেন। আইন বের করে বললেন, সরকার একবার কর্মচারীদের আর্থিক সুবিধা দিলে তা ফেরত নিতে পারে না। বাধ্যহয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হল, বৈধতা দিতে হল।

২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত, লক্ষ্য করুণ এক্ষেত্রে নতুন আইনের প্রয়োজন হয় নাই শুধু প্রজ্ঞাপন। এরপর যখন তাদেরকে এ সুবিধাগুলোর সাথে সংশ্লিষ্ট সকল সুবিধা দেওয়া হল, যেমনঃ প্রমোশন /পদায়ন, তখন নতুন আর একটা সমস্যা তৈরী হল, তাহলো একই অর্থবছরে ১ম ছয় মাসে যারা এ সুবিধা গুলো পেয়েছিল তারা পরের ছয় মাসে যারা বঞ্চিত হয়েছে তাদের চেয়ে সিনিয়র হয়ে গেল। অর্থাৎ কোন কোন ক্ষেত্রে জুনিয়ররা সিনিয়র হয়ে গেল। এ জটিলতা যখন দেখা দিল তখন অনেক লিখালিখি চলছিল। এরপর আইনকে সামনে তুলে ধরল, তাহলো কোন মতেই জুনিয়রা সিনিয়রদের সিনিয়র হতে পারবে না। আইন এটা এলাউ করে না। এ সমস্যা সমাধানে মাননীয় অর্থমন্ত্রী আবার প্রজ্ঞাপন করে ৩০ জুন /২০১৬ পর্যন্ত সবাইকে দিয়ে দিলেন। সবগুলো কাজ করতে তাদের সময় লেগেছে ১/২ মাস । এখানে যে পয়েন্টের উপর প্রজ্ঞাপন গুলো হয়েছে তা নিশ্চয়ই মনে রাখবেন । আমি আর একটা উদাহরন টানতে চাই। তাহল আমাদের লিডার টকশোতে কথা বলার সময় ডক্টর এস. হোসেন স্যার কী বলেছিলেন নিশ্চয়ই মনে আছে। একটা স্ট্রাকচার থেকে নতুন স্ট্রাকচারে যেতে হলে পুরাতন স্ট্রাকচারের বিদ্যমান সুবিধা ঠিক রেখে অথবা তার চেয়ে বেশী দিয়ে নতুন স্ট্রাকচার চালু করতে হবে। কোন মতেই সুবিধাবলী কমবেনা না। এই পয়েণ্টাও মনে রাখবেন।

এবার আসেন আমাদের করিতকর্মা নেতা বা মাউশির কর্তা ব্যক্তিদের আন্তরিকতার মুল্যায়ণ করি। এদের নিকট যখন ২০০৯, ১০, ১১ ব্যাচের সিলেকশন গ্রেড চাওয়া হল তারা এক্কেবারে আইনের বই খুলে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিল যে, সিলেকশন গ্রেড পেতে হলে, তাদেরকে পাক্কা চার বছর অপেক্ষা করতে হবে। সুতারাং তারা বাদ, তাদের কাগজপত্রও চাওয়া হল না, তাদেরকে যখন বলা হলো স্যার বেতনক্রম অপরিবর্তিত থাকলে উভয় পদের সমষ্টি  (নিন্ম পদ + উচ্চ পদ ) চার বছর হলে দেওয়া যায়না ???? তারা বললেন, না এ বিধি টাইম স্কেলের ক্ষেত্রে। ওঃকে স্যার, তাহলে ২০০৫, ’০৬ ব্যাচের স্যার দের টাইমস্কেল দেওয়া যায়, হ্যাঁ, তারা পাবে আশ্বস্ত করে ২০০৫, ’০৬ কে আবেদন করতে বললেন, তারা যখন সব কাগজ পত্র জমা দিলেন, তখন অন্যদের মত ২/৩ মাসের মধ্যে হয়ে যাওয়ার কথা যেহেতু এরা আইনের মধ্যে পড়ে তাদের ক্ষেত্রেতো সমস্যা হওয়ার কথা না, কিন্তু এবার একটা প্যাঁচ মারলেন, দেখ, তোমরা এখন ২য় শ্রেণি’র কর্মকর্তা, দেখ কোন, রেফারেন্স বা বিধি বের করে আনতে পার কি না তাহলে তোমাদেরকে আমরা সিলেকশন গ্রেডই দিয়ে দিব। টাইমস্কেল হচ্ছে ৩য় শ্রেণি’র সুতারাং তোমাদের সিলেকশন গ্রেড পাওয়া একটা সন্মানের বিষয়, দেখ যত কথাই বল সিলেকশন গ্রেড পাওয়ার ভাবই আলাদা, অফিসার অফিসার ভাব আছে !!!!! অবান্তর, যেহেতু বিষয়টা সম্পূর্ণরূপে আর্থিক, যত আগে পাবে ততই আর্থিকভাবে লাভবান হবে। তাদের এই টোপটাকে আমি আই এসের টোপের সাথে তুলনা করি, কারণ আই এসের সামনে টোপ হচ্ছে বেহেস্তের হুর বিনিময়ে তারা ইহুদি, নাসারা, তথা নিরীহ মানুষদেরকে খুন করে। এরা সিলেকশন গ্রেড টোপে ২০১৪ সালে টাইমস্কেল না নিয়ে এখন পর্যন্ত গাধার খাটনি খেটেই চলেছে কিন্তু কোন কূল কিণারা পাচ্ছেন না। বছরের পর বছর পার করা হচ্ছে বা কিল করা হচ্ছে।

আমি যদি উপরের সব যুক্তি বাদও দেই তারপরও আমি মাউশির কর্মকর্তাদের আন্তরিকতা খুঁজে পাই না যখন দেখি টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড প্রদানের তারিখ বা সময় ৩০ জুন / ২০১৬ করা হয়েছে তখনতো বিষয়টা আইনের আওতায় চলে এসেছে, অর্থাৎ ২০০৯, ১০, ১১ ব্যাচ সকলের প্রয়োজনীয় চার বছর পূর্ণ হয়ে গেছে, সুতারাং তাদেরতো আইনগত কোন জটিলতা রইল না। এর জন্য কোন প্রজ্ঞাপনের দরকার হবে না। ২০০৫, ’০৬ ব্যাচকে ২০১৪ সালে টাইম স্কেল দিয়ে এবং পরবর্তীতে নতুন পেস্কেলের বিধি অনুসারে ১০ বছর পূর্তিতে ২০১৬ সালে পরবর্তী গ্রেড এ দিয়ে দেওয়া যেত অবশ্য এর জন্য হয়ত একটা প্রজ্ঞাপন প্রয়োজন ছিল। এই কাজটুকু করার স্বদিচ্ছা থাকলে উনাদের মত ২/৩ মাস সময় নেওয়ার কথা।

পরিশেষে উপরে উল্লেখিত দুইটি প্রজ্ঞাপন, সাবেক সচিব, ও পি. এস. সি. চেয়ারম্যান ডক্তর এস. হোসেন স্যার এর রেফারেন্স দিয়ে আমি কি সেলমী সারের উল্লেখিত তিনটি পয়েন্ট দ্বিমত পোষণ করতে পারি না ???

১। মাউশির কর্তারা আন্তরিক না।
২। নির্দিষ্ট বিধির দরকার নেই
৩। রেফারেন্সের প্রয়োজন নেই।

যেহেতু প্রজ্ঞাপন দুইটি ছিল আর্থিক সুবিধা- প্রমোশন সম্পর্কিত এবং যেহেতু ৩য় শ্রেণি থাকলে আমরা যে সুবিধা ভোগ করতাম ২য় শ্রণি করাতে আমাদের সুবিধা কমার কোন সুযোগ নাই।

আমি শক্তি শালী সংগঠন বলতে যা বুঝাই সে রকম সংগঠন থাকলে, আমি মাউশির কর্মকর্তাদের বলতাম। আগামী এক মাসের মধ্যে আমাদের কাজগুলো করে দিবেন, না করলে কোন আইনে করা যাবেনা তার নোট দিবেন। এর একটাও না করলে আমি মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রীকে বলব, আপনারা আইন জানেন না, অথবা অধীনস্থদের স্বার্থ রক্ষা করতে পারে না, সুতারাং আপনাদের সরিয়ে অন্য দক্ষ লোক বসাতে বলব।

আপনাদের সকলের কাছে বিনিত অনুরোধ রইল অবশ্যই কমেন্ট করবেন। আমি রাইট নাকি সেলমী স্যার রাইট।
পরের লিখা এত লম্বা হবে না ।
শুভ সন্ধ্যা ।
সালাম

৩য় পর্ব
আই. এস. শব্দদ্বয়ের জাহেরী ও বাতেনী অর্থের বিশ্লেষণ।

সমগ্র বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ আই. এস. শব্দদ্বয়ের সাথে কম বেশী পরিচিত এবং কারা, কী উদ্দেশ্যে এবং কীভাবে কাদেরকে, আই. এস. হিসাবে সৃষ্টি করেছে সার্বিক বিষয়টা এখন সকলের নিকট ওপেন সেক্রেট। তামাম দুনিয়ার প্রখ্যাত রাষ্ট্র বিজ্ঞানী, সমাজ বিজ্ঞানী, কলামিস্ট, ও আইন শৃংখলা বিশ্লেষকদের পাণ্ডিত্যপূর্ণ বিশ্লেষণ থেকে যে ধারণাটা সকলের নিকট পরিস্কার হয়ে উঠেছে তাহলো আই. এস. যারা সৃষ্টি করেছে, তারাই আবার এর নির্মূলে অগ্রণী ভুমিকা রাখছে বা রাখার অভিনয় করছে। যার কারণে এর নির্মূল করা সম্ভব হচ্ছে না। অন্যভাবে বলতে গেলে নির্মূল করা হচ্ছে না, কেননা,  এর দীর্ঘসুত্রীতার উপরই পরিকল্পনাকারীর অধিক সফলতা নিহিত, যে কারণে এ সমাস্যা নির্মূল না হয়ে বরং ধীরে ধীরে বিশ্বের নতুন নতুন জায়গায় ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে যার ফলে পরিকল্পনাকারীদের অস্ত্র ব্যবসাও রমরমা হয়ে উঠেছে। সংক্ষেপে পুরো বিষয়টা খোলাসা করতে গেলে এখানে তিনটি পক্ষ পাওয়া যায়, যাদের প্রত্যেকের লক্ষ, উদ্দ্যেশ, স্বার্থ ও কর্ম আলাদা, যদিও তাদেরকে কাজটা একটা সমন্বিত প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন করতে হয়।
১ম পক্ষ ( পরিকল্পনাকারী দেশ সমূহ ) ঃ একমাত্র পরাশক্তি ও তার মিত্র দেশগুলো যাদের বহুমুখী উদ্দ্যেশের মধ্যে রয়েছে, অস্ত্র ব্যবসার ক্ষেত্র তৈরি করা, পেট্রো ডলারের দেশগুলোর সরকারকে ব্যর্থ ও অকার্যকর করে অনুগত সরকার বসানো, তাদের মূল্যবান খনিজ সম্পদ লুট করা, সর্বোপরি তাদের নব্য সাম্রাজ্যবাদনীতির সম্প্রসারণ এবং বিশ্বে তাদের মোড়লীপনাকে সুদৃঢ় করা। তারা এ লক্ষার্জনের কৌশল হিসাবে আই. এস. সৃষ্টি করে।
২য় পক্ষ ( ১ম পক্ষের এজেন্ট হিসাবে কাজ করে )ঃ এদের উদ্দ্যেশ হচ্ছে ১ম পক্ষের নির্দেশ মোতাবেক ৩য় পক্ষ মানে আই. এস. তৈরি করে দিয়ে প্রচুর অর্থ, বিত্ত, সন্মান, পুরুস্কার লাভ করা। এরা জ্ঞানে, প্রজ্ঞায় ব্যক্তিত্বে জতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বনামে খ্যাত। এদের মধ্যে রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্ঞান পাপী শিক্ষক, বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদক/মালিক, ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার মালিক, এন. জি. ও. -এর মালিক, ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সেলিব্রেটি নায়ক/নায়িকা, খেলোয়াড় , কলামিস্ট, রাজনীতিবিদসহ অন্যান্য তথাকথিত সিভিল সোসাইটির হেভিওয়েট লোকজন। এরা সকলেই বর্ণচোরা। এদের লোভ লালসা অসীম। কাজেই এদের সামনে ১ম পক্ষ যখন নানা প্রলোভন তুলে ধরে যেমন, অঢেল অর্থ, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পুরুস্কার, ক্ষমতা তখন তাদের শিক্ষা, মূল্যবোধ, দেশপ্রেম, নৈতিকতা, আদর্শকে তুচ্ছ মনে হয়। এই রঙ্গীন পৃথিবীটাকে আরও রঙ্গীন করে উপভোগ করার তাগিদে তারা তাদের (১ম পক্ষের ) প্রেসক্রিপশন মোতাবেক কাজ করতে সন্মত হয়। ১ম ও ২য় পক্ষের লোকজন সকলেই ভেরি জিনিয়াস বলা যায় ইভিল জিনিয়াস। এদের জিনিয়াসনেস নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারবে না।

৩য় পক্ষ ( যারা আই. এস. হিসাবে পরিচিত )ঃ ১ম পক্ষের প্রেসক্রিপশন অনুসারে ২য় পক্ষ আমাদের দেশের টিন এজের কতিপয় মুসলিম ছেলে মেয়েকে টার্গেট করে তাদের সামনে ইসলাম ধর্মকে বিকৃতভাবে তুলে ধরে। আই. এস. যার জাহেরী বা প্রকাশ্য অর্থ ইসলামিক এস্ট্যাট -এর গুরুত্ব তুলে ধরে এবং ইসলামিক এস্ট্যাট প্রতিষ্ঠার জন্য একটা পরিকল্পনা পেশ করে। পবিত্র কোরআন শরীফ থেকে বিচ্ছিন্ন কিছু আয়াত তুলে ধরে এদেরকে ইহুদি, নাসারা, এবং মুসলমানদের মধ্যে যারা ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে তাদের বিরুদ্ধে জিহাদে উদ্বুদ্ধ করে গড়ে তুলে। জিহাদ করতে গিয়ে মারা গেলে এরা শহীদি মর্যাদা পাবে, অতঃপর শহিদ হতে পারলে বেহেস্ত পাবে আর বেহেস্তের মধ্যে হুরসহ নানা রকম সুযোগ সুবিধার উপভোগ করতে পারবে। এই বেহেস্ত এবং হুরের লোভে তারা যেকোন ধরেনের ধ্ববংসাত্মক কাজ করতে প্রস্তুত হয়ে যায়। এরা বয়সের অপরিপক্কতার কারণে বা জ্ঞানের অপরিপক্কতার কারণে ঐ ইভিল জিনিয়াসদের এই ষড়যন্ত্র বুঝতে পারে না। তারা বুঝতে পারে না আই. এস’র বাতিনী বা অপ্রকাশ্য অর্থ। অর্থাৎ আই. এস. ( ইসলামিক এস্ট্যাটের ) নামে পেট্রো ডলারের মধ্য প্রাচ্যের মুসলিম রাষ্ট্রগুলো ধ্বংস করে মূলতঃ আই. এস. ( ইসরাইল রাষ্ট্র ) -এর আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা। এই ইসরাইলের মাধ্যমে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য নিয়ন্ত্রণ করা। তাহলে আমাদের কাছে পরিস্কার হলো আই. এস’র জাহিরী অর্থ ইসলামিক এস্ট্যাট আর বাতেনী অর্থ ইসরাইল এস্ট্যাট।

যারা আই. এস. হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে তারা নির্বোধ, অবুঝ, অপরিপক্ক জ্ঞানের অধিকারী। এদেরকে যারা যাদের মাধ্যমে সৃষ্টি করেছে তাদের উভয়েরই একটা দর্শন আছে তাহলো যেভাবেই হউক অর্থ ও ক্ষমত্তা কুক্ষিগত কর তাহলে সব কিছুই তোমার হাতের মুঠোয় চলে আসবে, যেখানে নীতি নৈতিকতা, মূল্যবোধ, মানবিকতা আদর্শের কোন স্থান নেই। এই বিশ্ব মোড়ল রাষ্ট্রগুলোর টার্গেট শুধু মধ্যপ্রাচ্য না, সমগ্র পৃথিবীকে ডোমিনেট করা। এ লক্ষ্যে তারা একেক দেশে একেকটা কৌশল অবলম্বন করে কিন্তু তাদের উদ্দ্যেশ এক।

তারাই বাংলাদেশকে ব্যর্থ ও অকার্যকর রাষ্ট্র বানানোর জন্য এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে বেছে নিয়েছে। টোটাল শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের জন্য মাধ্যমিক শিক্ষাকে টার্গেট করেছে। এখানেও উল্ল্যেখিত তিনটি গ্রুপ বা পক্ষ সক্রিয়। এখানকার আই. এস.রাও বুঝতে পারে না-
১। শিক্ষা আইনের জাহিরী অর্থ শিক্ষার মানোন্নয়ন আর বাতেনী অর্থ শিক্ষা ধবংসের মাধ্যমে জাতীর ধ্বংস সাধন।
২। বার বার পাঠ্য পুস্তক পরিবর্তনের জাহিরী অর্থ শিক্ষার মানোন্নয়ন আর বাতেনী অর্থ শিক্ষার ধবংসের মাধ্যমে জাতীর ধবংস সাধন
৩। ফাইল ওয়ার্কের জাহিরী অর্থ কাজকে গতিশীল করা আর বাতেনী অর্থ কাজকে আটকে দেয়া।

বিস্তারিত আসছে পরবর্তী পর্বে . . .


মাধ্যমিক শিক্ষায় আই এস -এর আক্রমণ, আহত জাতীর ভবিষ্যৎ কর্ণধার ও ঢাকা বিশ্ব-বিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্টঃ

আমাকে নেটে ঢুকতে হলে ল্যাপটপ নিয়ে বসতে হয়। গতকাল সকালে যখন নেট ওপেন করলাম, দেখলাম আমাদের সন্মানিত ও অভিজাত এক সহকর্মী আমাকে পরোক্ষভাবে এবং অভিজাত ভঙ্গীতে ব্যক্তিগত আক্রমন করেছেন। তার আক্রমণের ধরণ দেখে যে কারোও বুঝতে অসুবিধা হবেনা যে, সুন্দরবনের পরিবেশ সত্যই প্রাণীদের বাসের জন্য অনুপযুক্ত হয়ে উঠেছে যার জন্য প্রাণীরা সেখানে টিকতে না পেরে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে নিরীহ মানুষদের আক্রমণ করেছে। এভাবে, বনের প্রানীরা যখন আক্রমণ করে তখন একা হলে মানুষ নিরাপদ স্থানে পালিয়ে যায় আমি পালিয়ে গিয়েছিলাম কারণ সময় নেই স্কুলে যেতে হবে ৭০ কিঃমিঃ দূরে। তবে যাওয়ার পুর্বে ছোট একটা ঢিল ছুঁড়ে ছিলাম। সারাদিন সাহস পাইনি নেটে প্রবেশ করার। রাত ১০ টায় যখন প্রবেশ করলাম তখন মহান আল্লাহতা’লার নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলাম এজন্য যে, আমি আর এখন একা নই অর্থাৎ আমি ঢিল ছুঁড়ে পালানোর পর ঐ সহকর্মী এমন জোড়ে হুংকার দিয়ে উঠেছিল যা শুনে আশে পাশের অগণিত নিরীহ মানুষ ছুটে এসে একত্রিত হয়ে এমনভাবে প্রতিহত করেছেন যে অল্প সময়ের ব্যবধানেই তিনি কুপোকাৎ। সেই অগণিত সাধারণ নিরীহ মানুষের মাঝে মাহমুদ সেলমী নামে এক অসাধারণ মানুষ ছিলেন যিনি সবাইকে বুঝানোর চেষ্টা করলেন পৃথিবীর প্রত্যেকটা প্রাণী আলাদা আলাদা জিন দিয়ে তৈরি, সুতারং প্রত্যেকের বৈশিষ্ট আ্লাদা, বাসস্থান আলাদা। তিনি বলতে চাইলেন বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে। কাজেই আপনারা বনের পরিবেশ প্রাণীদের বাসযোগ্য করুন, অর্থাৎ বনের পরিবেশ নষ্ট হয়েছে বা নষ্ট করা হয়েছে। হ্যাঁ, আমি স্বীকার করছি বনের পরিবেশ আমি নষ্ট করেছি একটা ক্ষেপনাস্ত্র ছুঁড়ে দিয়ে আর তাহলো আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে আমাদের কাজগুলো না হলে আমরা একযোগে ৬৪ জেলা থেকে ডিসি স্যার -এর মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরারর স্মারকলিপি জমা দেব আর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অপসারণ চাইব। যাদেরকে বিভিন্ন হালুয়া রুটি দিয়ে রাখা হয়েছে সহকারি শিক্ষকগণ যাতে একত্রিত হতে না পারেন, আন্দোলনে যেতে না পারেন হুমকি ধামকি দিয়ে এগুলো প্রতিরোধ করার জন্য আর সেই সহকারি শিক্ষকরা যখন এমন পরিকল্পনার কথা পাবলিকলী বলতে পারে তখন তারা তাদের প্রভূদের ঘাতানি খাবে এটাই স্বাভাবিক। আর ঘাতানি খেয়ে বন্যপ্রাণীর মত আচরণ করবে সুতরাং আপনারা এদের আক্রমণ থেকে বাঁচতে চাইলে বনের পরিবেশ সুস্থ্য করুন অর্থাৎ আন্দোলন ফান্দোলন বন্দ করুন। এই সেই সেলমী স্যার যাকে আমি প্রায় ৮ বছর ধরে চিনি, শিক্ষকদের জন্য আন্তরিকভাবে কিছু একটা করতে চায়। তার সততা ত্যাগকে আমি সম্মান করি। যার জন্য তিনি যখন আমাকে আক্রমণ করে সেগুলো আমলে নেইনা । কারণ আমি বিশ্বাস করি, আমি যা করতে চাই সেখানে সফল হতে হলে তার মত ডেডিকেটেড নেতা দরকার। সে তার অবস্থানে ১০০% রাইট মনে করে আমিও আমার অবস্থানে ২০০% রাইট মনে করি। তার বৈশিষ্ট ও উদ্দ্যেশ আমার সাথে মিলে। তার আর আমার মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে তরিকাগত। সুতরাং কার তরিকা সঠিক তা নির্নয়ে আপনাদের মতামত দরকার। পরবর্তীতে দুইজনের তরিকার তুলনামুলক আলোচনা করব। আমার পাশে যে সকল স্যার দাঁড়িয়েছন সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আপনাদের এতটুকু সাপোর্ট আমাকে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা যোগাবে।
ধন্যবাদ সবাইকে।


৯ম পর্বের শেষ অংশের কতিপয় প্রশ্ন প্রসংগে-
আপনাদের বিরক্ত হওয়ার আশঙ্কায় আমি খুবই শঙ্কিত, তবুও আমাকে একই কথা বার বার বলতে হচ্ছে যে টাইমস্কেল/সিলেকশন গ্রেড পাওয়ার ব্যাপারে এতটা অরিড হওয়ার কোন কারণ নেই। কারণ এগুলো কখনও তামাদি/বাতিল হয় না। যার যখন ডিউ হবে, যখন পাবেন ঠিক তখন থেকেই এরিয়ার বিল হিসাবে পাবেন। আমার জানামতে বি.এড. কলেজের আত্মীকৃত ৭৯ জন স্যার ১৯ বছর পর তাদের টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পেয়েছিল।

সে যাই হউক, এখন প্রশ্ন আসছে, কেন আমরা যথা সময়ে পাব না ??? এর অন্তর্নিহিত অনেকগুলো কারণ ইতোঃমধ্যেই আমি উল্লেখ করেছি তারপরও আরও নতুন কিছু তথ্য সংযোজন করছি যা আপনাদেরকে পরিস্কারভাবে বুঝতে সাহায্য করবে। যে কয়জন স্যার এ বিষয়ে মাউশি/ মন্ত্রনালয়ে কাজ করছেন তাদের অনেকের সাথে আমার মাঝে মাঝে কথা হয়। তারা ইনিয়ে বিনিয়ে যা বলেন তাহলো এগুলো দিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে মন্ত্রণালয় আন্তরিক হওয়া স্বত্বেও মাউশির কর্মকর্তাগণ যথাযথ সহযোগিতা না করার কারণে কাজটা তারা বের করে আনতে পারছেনা। মাউশিতে নানা প্যাঁচ ধরা হয়। আবার প্রশ্ন আসছে, উত্তোরণের উপায় কী ???

উপায় বলার পূর্বে আপনাদের নিকট আমার সবিনয় প্রশ্ন, আমাদের এগুলো ডিউ হয়ার পরও যে আমরা পাই নাই এ বিষয়টা আমরা আর এগুলো যাদের করে দেওয়ার কথা তারা ছাড়া এর কেউ এ বিষয়টা জানে বা আমারা কি সরকারের দায়িত্বশীল কাউকে আমাদের বঞ্চনার কথা জানিয়েছি বা জানানোর চেষ্টা করেছি ??? আমরা ক্লাস না করলে বা দায়িত্বে অবহেলা করলে আমাদের বসেরা নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করে। আমরা কি তাদের বস দ্বারা তাদের প্রতি কোন চাপ প্রয়োগ করেছি বা এর জন্য কোন পরিকল্পনা করেছি ? করতে পারলে এতদিন দেরি হত না। আমি অন্ততঃ আশা করেছিলাম বাসমাশিস নেতারা যখন বিভিন্ন জেলায় সাংগঠনিক সফর করেছেন তখন তাদের সভায় আমদের এ সমস্যাগুলো তুলে ধরে মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচার করে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে। আমরা হলে তা-ই করতাম। মিডিয়ায় প্রচারের যথেষ্ট গুরুত্ব আছে। মিষ্টার এম. ইসলাম স্যার যেহেতু ২০১৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত টাইমস্কেল/সিলেকশন গ্রেড যাদের ডিঊ হয়েছে তাদের দিয়ে দেওয়ার নির্দেশ অর্থ মন্ত্রনালয় দিয়েছে সেহেতু আপনারা (২০০৯, ১০, ১১) ব্যাচ সিলেকশন গ্রেড পাবেন অর্থাৎ উল্লেখিত সবাই ৮ম গ্রেড পাবেন বিষয়টা পানির মত সহজ। এখানে কোন রূপ জটিলতা নাই। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি। পাওয়ার উপায়- (২০০৯, ১০, ১১) (২০০৫, ২০০৬) ( ২০০২, ৩) আলাদা আলাদা গ্রুপ করে ঢাকায় একত্রিত হয়ে গ্রুপ ভিত্তিক কমিটি করে ফাণ্ড তৈরি করে দুই/তিন জনকে দায়িত্ব নিতে হবে যারা মাউশি হয়ে মন্ত্রনালয়ে যোগাযোগ রাখবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে সময় আগামী ৩১ ডিসেম্বর। এরমধ্যে না হলে তিনটি গ্রুপ ঢাকায় একত্রে বসে যার আরগুমেণ্টের ভিত্তিতে একটি স্মারকলিপি তৈরী করে সার্বিক বিষয়গুলি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরারার একযোগে ডিসি স্যারের মাধ্যমে ৬৪ জেলা থেকে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। পাশা পাশি সংশ্লষ্ট কর্মকর্তাদের অপসারণ চাইতে হবে। এরপরও না হলে নিয়ম তান্ত্রিক আন্দোলনে যেতে হবে। আমার বিশ্বাস মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করতে পারলেই দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে।

৯ ডিসেম্বর, ১৬ সম্মিলিত দাবী বাস্তবায়ণ কমিটি গঠণের প্রেক্ষিত ও প্রাসঙ্গিক কিছু কথাঃ

আমি ২০০৯ সালের প্রথম দিকে বর্তমান বাসমাশিস -এর কয়েক জন শীর্ষ নেতার সাথে আমাদের সমিটির শীর্ষ নেতাদের কয়েকটা বৈঠকের আয়োজন করেছিলাম। উদ্দ্যেশ ছিল ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের দাবী আদায় করা। বৈঠকগুলো হয়েছিল শীর্ষ একজন নেতার বাস ভবণে, আমার রুম, মাউশির ওয়েটিং রুম ও পার্কে। এতগুলো বৈঠকের পরও আমরা সফল হতে পারি নাই। আমি কনিষ্ঠ একজন সহকর্মী হয়েও তাঁদেরকে সম্মিলিত দাবী বাস্তবায়ণ কমিটি গঠণ করার প্রক্ষিত বুঝাতে চেষ্টা করলাম, অর্থাৎ আমি বললাম যেহেতু বিগত ৪০ বছরে আমাদের কোন অর্জন নাই সেহেতু যারা ইতোঃমধ্যে আন্দোলনের মাধ্যমে নিজেদেরকে আপগ্রেড করেছেন তাদের মত আমাদেরকে আন্দোলন করতে হবে, প্রয়োজনে আপনারা সিনিয়ররা উপদেষ্টা থাকেন আমাদেরকে- মানে জুনিয়রদেরকে দিয়ে কমিটি করে আমাদেরকে আন্দোলনে সহযোগিতা করুন।

১০০% ব্যর্থ হয়ে আমরা সহকারি শিক্ষক সমিতির ব্যানারে আন্দোলন করলাম। কীভাবে করেছি, তা অনেকবার বলেছি। কেন আমরা স্টেজে ছিলাম না তা-ও বলেছি। অবশেষে আমাদের দাবী আংশিক পূরণ হল। এখানে একটা বিষয় ভালো লাগে যে, বাসমাশিসের কোন শীর্ষ নেতা আমাদের কন্ট্রিবিউশন কে অস্বীকার করেন নাই, যদিও পাবলিকলি বলেন না। আমাদের বিশ্বাসের জায়গাটা এখানেই দৃঢ় যে, ৪০ বছরে যা হয় নাই, আমরা তা ২/৩ বছরের আন্দোলনের মাধ্যমে বাস্তবায়ণ করলাম।

মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী যখন বললেন- তোমাদের নেতারাই চায়নি বলেই তোমরা ৯ম গ্রেড পাওনি, তখন আমাদের নিজেদের আত্মবিশ্বাস আরও সুদৃঢ় হয় যে, আন্দোলনের মাধ্যমেই আমাদের সকল যৌক্তিক দাবী আদায় করা সম্ভব। আমাদের আন্দোলন বৃথা যায়নি আমাদেরই স্বগোত্রীয় ভাইদের কারণে।


সে যাই হউক, দীর্ঘ দিন ধরে আমি বাসমাশিসের বর্তমান নেতা যাঁরা এক সময় আমাদের আন্দোলনের প্রধান প্রাণশক্তি ছিলেন তাদেরকে আবার আন্দোলনের কথা বললে- তারা টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড এবং নিয়োগ বিধি কমপ্লিট হওয়ার পর আন্দোলনে যাওয়ার কথা বলেন। এছাড়া নির্বাচনের পুর্বে বাসমাশিসের শীর্ষ নেতাকে অনুরোধ করেছিলাম উক্ত কাজ দুইটি সম্পন্ন করে নির্বাচনে আসার জন্য, তিনি বলেছিলেন চেষ্টা করবেন, তিনি এ-ও বললেন, যদি তা সম্ভব না-ও হয় তবে ২/৩ মাসের মধ্যে হয়ে যাবে। এর পর কতদিন চলে গেল আপনারাই তা ভালো জানেন। আমরা কখনও দাবী করি নাই কাজ গুলো আমরা করি। আমরা শুধু তাদেরকে চাপে রাখার চেষ্টা করেছি এবং তাদের বুঝাতে চেয়েছি এই দু’টি কাজ আমাদের রুটিন পাওনা। তোমরা এত সময় নিয়ে ফেলেছ যে, আমাদের মূল দাবীগুলো চাপা পড়ে গেছে। ২/৩ মাসের জাগায় বছরের পর বছর চলে যাচ্ছে দেখে। আমরা সাবেক সহকারি শিক্ষক সমিতির স্কুল, জেলা, বিভাগ ও কেন্দ্রীয় নেতা যারা অনেকটা নিষ্ক্রীয় হয়ে আছে তাদেরকে আহবান করেছি এই মুহূর্তে আমরা কী করতে পারি ?

আমরা আবার আমাদের বঞ্চনার কথা ৬৪ জেলা থেকে জেলা প্রশাসক মহোদয় কর্তৃক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপির মাধ্যমে তুলে ধরব কি না ? ৩১ ডিসেম্বরের পর বাসমাশিস নেতাদের আর সময় বেঁধে দেয়া যায় কি না ? তারাইবা আরও সময় চাইবে কি না ? তারা ব্যর্থ হলে আন্দোলনে যাবো কি না ? পরিশেষে সম্মিলিত দাবি বাস্তবায়ন কমিটি গঠণ করে সকল দাবী নিয়ে কঠোর আন্দোলনে গিয়ে সরকারকে মাধ্যমিক শিক্ষার সার্বিক উন্নয়নে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে কি না ?


কাজেই সকল সহকারি শিক্ষকদের এ আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করে মূল্যবান পরামর্শ দেওয়ার জন্য বিনীত অনুরোধ রইল।


মাধ্যমিক শিক্ষায় আই এসের আক্রমণ, আহত জাতীর ভবিষ্যৎ কর্ণধার, রক্তাক্ত ঢাবি ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্ট, নিহত নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও দেশপ্রেম, উদ্দেশ্যমূলক চাটুকারীতা, অযোগ্য ও ব্যর্থ রাষ্ট্রে রুপান্তরকরণ উত্তোরণের উপায় শক্তিশালী পেশাজীবী সংগঠনঃ

সন্মানিত সহকর্মীবৃন্দ সংগ্রামী সালাম রইল।
আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বাসমাশিস নেতাদের মধ্যে যে ক’জন নেতা অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে সম্পূর্ণ ব্যক্তিস্বার্থের উর্দ্ধে উঠে কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে আমাদের যৌক্তিক দাবী আদায়ে কাজ করছেন, মাহমুদ সেলমি তার মধ্যে অন্যতম। তিনি চট্রগ্রামের অন্যতম নেতা হিসাবে এক সময় আমাদের সাথেও কাজ করেছিলেন। তার, সততা, ত্যাগের মানসিকতা ও প্রজ্ঞা আমাদের কাজ করার ক্ষেত্রে তার সহযোগিতাকে অনিবার্য করে তুলেছে। যার জন্য আমরা আমাদের মাঝে তার ফিরে আসার অপেক্ষায় আছি। কিন্তু তার ধৈর্যের বাধ ইস্পাদ দিয়ে বাঁধা, যার জন্য যে কাজটা করতে সর্বোচ্চ তিন মাস সময় নেওয়ার কথা সেখানে চার বছর হয়ে গেলও তার ধৈর্যের বাধ ভাঙ্গছে না, আমরাও কাজ করতে পারছি না। বরং তিনি এবং তার শীর্ষ নেতৃবৃন্দ সুযোগ পেলেই আমন্ত্রণ করেন তাদের সাথে গিয়ে কাজ করার জন্য। কিন্তু আমি যেতে পারছি না। কারণ আমাদের উভয়ের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য এক হলেও লক্ষ্য অর্জনের যে মাজহাব বা তরিকা বা কাজ করার পদ্ধতি তা সম্পূর্ণ আলাদা বা ভিন্ন। যদিও তিনি স্বীকার করেছেন তার আর আমার মধ্যে তরিকাগত কোন পার্থক্য নাই। কিন্তু আমি মনে করি বিরাট পার্থক্য আছে তার তরিকাতে আছে, বিদেশ সফর করার সুযোগ, পছন্দের স্কুলে থেকে চরম ক্ষমতার চর্চা ও নানা সুযোগ সুবিধা উপভোগ করার সু্যোগ বিভিন্ন লোভনীয় সেমিনার, সিম্পোজিয়ামে অংশগ্রহণ করার সু্যোগ এবং সর্বোপরি ফাইল ওয়ার্ক করে একজন করিতকর্মা কর্মী/নেতা হিসাবে খ্যাতি লাভের সূযোগ, বিনাভোটে নির্বাচিত নেতা হওয়ার সুযোগ, কেউ সহকারি শিক্ষক সমিতির পক্ষে কথা বললে তাকে ধমকানোর সুযোগ সুবিধা সহ নানা রকম স্বর্গীয় সুযোগ সুবিধা বিনিময়ে তাদের শুধু এইটুকু কাজ করতে হয় তাহলো ফাইল ওয়ার্কের নামে ফাইলের কাজটা দীর্ঘ দিন আটকে রাখার ব্যবস্থা করা। কীভাবে ??? পরে ব্যাখ্যা করবো।


পক্ষান্তরে আমাদের তরিকা হচ্ছে এমন একটি শক্তিশালী নিজস্ব সংগঠন তৈরি করা (যা তৈরি করতে তার মত নেতা প্রয়োজন) যার মাধ্যমে কঠোর আন্দোলন করে নির্দিষ্ট সময়ে আমাদের সকল যৌক্তিক দাবী আদায় করা যায়, যেমনটা অন্যান্য শক্তিশালী সংগঠন করে থাকে আর শক্তিশালী হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত যেখানে আছে তাদের ধমক খাওয়ার সুযোগ, ট্রান্সফার হওয়ার সুযোগ, সকল যোগ্যতা থাকার পরও গেজেটে নাম না আসার সুযোগ এমনকী চাকরিচ্যূত হওয়ারও সুযোগ। এগুলো কবুল করার পুরুস্কার স্বরূপ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ, যার ফলে সংসদীয় কমিটির সুপারিস আদায় অবশ্য তারাও এর অংশীদার। আমরা বিশ্বাস করি, মাধ্যমিক শিক্ষা পঁচা মাল এই তকমা ঘুচাতে, আমাদের মৌলিক দাবীগুলো পূরণ করতে আমাদেরকে ২০০৮ -এ ফিরে যেতে হবে। তিনি বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে দ্রুত কাজ করার জন্য আমাদেরকে ছেড়ে গিয়েছেন যার জন্য আমরা দূর্বল হয়ে পড়েছি, যার জন্য আন্দোলন করতে পারছি না। সময়টা খুব বেশি নিয়ে ফেলেছেন। তিনি মনে করতেছেন তিনি সঠিক পথ বেছে নিয়েছেন, আমি আমার অবস্থানে অনড় আছি। এখানে আমি কিংকর্তব্যবিমুঢ় যে তার আমন্ত্রণ রেসপন্স করবো কিনা। কাজেই আমি আমাদের ফেইজ বুক ফ্রেণ্ডলিস্টে যে সকল সহকর্মী রয়েছেন তাদের মতামত গ্রহণ করার পর আপনি আত্মপক্ষ সমর্থন করবেন এক্ষেত্রেও আপনার ধৈর্যের বাধ ইস্পাত দিয়ে বাঁধা থাকবে আশা করি। কথা দিচ্ছি মতামত আপনার পক্ষে গেলে আমার অবস্থান থেকে সরে এসে আমন্ত্রণ গ্রহণ করব ইনশা আল্লাহ।

সন্মানীত সহকর্মীবৃন্দ আমাকে সহকারি শিক্ষক সমিতির প্রতিনিধি আর সেলমী স্যারকে বাসমাশিস -এর প্রতিনিধী ধরে কারও পক্ষাবলম্বন না করে অত্যন্ত নিরপেক্ষভাবে আপনাদের মতামত দেওয়ার অনুরোধ করছি। আমার বিশ্লেষণে মজার কিছু থাকলেও আমি মজা পাওয়ার জন্য বলব না আমি সিরিয়াসলি বলব। শক্তিশালী সংগঠন বিনির্মাণে আপনাদের মতামত গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি। অবশ্য এর জন্য আপনাদের বেশী কিছু লিখতে হবে না।

বেলাল তুমি/আপনি রাইট অথবা সেলমী স্যার রাইট। আশা করি সবাই অংশগ্রহণ করবেন।

ম্যাচ ফিক্সিংযের মত ঘটনা ঘটতে চলছে।
 
আমাদের গ্রাম্য একটা প্রবাদ, চোরের দশ দিন আর গৃহস্থের একদিন।
 
খেলার মাঠে বিশেষ করে ক্রিকেট বা ফুটবলের ক্ষেত্রে মাঝে মাঝে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের ঘটনা ফাঁস হয়ে এটাই প্রমাণ করে প্রবাদটা শত ভাগ সত্য। যে সকল ম্যাচগুলো পুর্বেই ফিক্স হয়ে যায় কারা জিতবে ঐ ম্যাচ গুলোর একটা বৈশিষ্ট থাকে, আর তাহলো ম্যাচগুলো খুব প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়, যাতে দর্শকরা কোন মতেই বুঝতে না পারে- এর ফলাফল পুর্বেই নির্ধারিত ছিল বা কী ঘটতে যাচ্ছে।
 
মোদ্দাকথা এখানে খেলার নামে প্রতিযোগিতাপূর্ণ ম্যাচের নাটক মঞ্চস্থ হয় এখানে ছক্ষা মারলে ক্যাচ হয় বা বল গোল পোস্টে কিক করলে বারে না ঢুকে বারের পাশ দিয়ে যায়। তখন নিরীহ দর্শকরা না বুঝে না জেনে আপসোস করতে করতে বাড়ী ফিরে।
 
আমাদের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এরকম নাটক মঞ্চস্থ হতে চলছে । যেমন- একাডেমিক সুপারভাইজাররা মাউশি থেকে প্রয়োজনীয় কাগজ নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ নিয়ে আসে অথচ নির্বাচিত নেতারা উকিল নোটিস দিয়ে প্রমাণ করতে চায়- তারা এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না। অনুরূপ ভাবে মাউশি থেকে সব রকম সাপোর্টং পেপার পাওয়ার পর পি. এস. সি. সার্কুলার দিল এখন তারা আবার প্রমাণ করতে চায় তারা এ ব্যাপারেও পূর্বে থেকে কিছু জানতো না। অর্থাৎ সাধারণ শিক্ষকদের আস্থা ধরে রাখতে চায় যে, সত্যিকারে তারা সাধারণ শিক্ষকদের অধিকার রক্ষায় তৎপর আছেন।
 
এসকল বিষয়ে উনাদের সম্পর্কে আমার নিজস্ব একটা ডায়লগ আছে।তাহলো- উনারা এসব করে আমাদেরকে কী বুঝাতে চান আর তলে তলে কী ফায়দা লোটেন, আমরা যে তা বুঝি, উনারা যে তা বোঝেন না, আমরা তাও বুঝি।
 
সে যাই হউক, আমি উনাদেরকে বিশ্বাস করি না বা করতে পারি না। আমার মনে হচ্ছে গৃহস্থের মত আমাদের সেই একদিনটা এসে গেছে। আমাদের সকল দাবী আদায়ে আমরা নিজেরাই উদ্দ্যোগ নিতে চাই। কাউরো উপর নির্ভর করে নয়- ভরসা করে নয়।
 
এ উদ্দ্যেশে আগামী ০৯/১২/২০১৬ ঢাকায় সবাই বসতে চাই। স্থান পরে জানাব। একটা শ্লোগান সবাই তুলুন।
 
যোগদিন- যোগদিন সন্মেলিত দাবী বাস্তবায়ন কমিটির আলোচনা সভায় যোগদিন- যোগদিন।
 
যোগ দিন ০৯/১২/২০১৬ তারিখের আলোচনা সভায় যোগদিন।

(চলবে)

(তবে আপনাদের জানার আগ্রহ থাকলে। আমার বাস্তত অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই কারণ আমি বিশ্বাস করি একটা শক্তিশালী সংগঠন তৈরী করতে হলে এর ভিতরের ত্রুটিগুলো আলোচনা বা বিশ্লেষণ করা দরকার )

মোহাম্মদ আলী বেলাল

এ্যাডভান্সড আইসিটি প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য 418 পৃষ্ঠার প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল- 1

এ্যাডভান্সড আইসিটি প্রশিক্ষণার্থীদের 418 পৃষ্ঠার প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল- 2



header-2আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য ওয়েব সাইটটি পূর্ণাঙ্গরূপে তৈরি করতে
যোগাযোগ করতে পারেন উপরের ঠিকানায ক্লিক করে।


________________________________________

শেয়ার করতে পারেন।
ধন্যবাদ
www.compuartsdigital.com
________________________________________