আমার ধারণা কর্তৃপক্ষ কিন্তু বরাবরই জানেন আমার এরকম- 1 কিংবা এরকম- 2 কিংবা এরকম- 3 ফিডব্যাকের ফলাফলগুলোর কথা। বলে নেব, তারা যদি তা না জেনে থাকেন তবে সেটা তাদের নিজেদের ব্যর্থতা বা আমার প্রতি তাঁদের আন্তরিকতার অভাব, আমার উপর “তাঁদের একটা অবিচার” স্ব-প্রণোদিত হয়ে কেউ কেউ যে এ কথাটি বলেননা তা-ও কিন্তু নয় !!!

তদুপরি, আমি ইচ্ছে করেই এই ধরণের কাজগুলোতে পেছনের সারিতে থাকতে চেষ্টা করি। কারণ, আমি জানি আমার একটা দোষ আছে। মহা দোষ। আমার মহা গুরুতর অন্যায় এটাই যে, এই কাজগুলো করার জন্য আমার কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। নেই কোন প্রতিষ্ঠানের অ আ জ্ঞানের সার্টিফিকেট। জীবনে কোন ট্রেনিং –এ যাওয়ার সুযোগতো হয়ইনি। শিক্ষক বাতায়ন, ডিজিটাল কন্টেন্ট ইত্যাদি ইত্যাদি বিষয়গুলো থেকে একমত ইচ্ছে করেই আমাকে অজ্ঞ থাকতে বাধ্য করা হয়েছে। আর সেখানে যাঁরা এই সার্টিফিকেটগুলো দেন, আমি কেন তাঁদেরই সাথে পাল্লা দেই ?

হুমম, এটাই আমার মহা অপরাধ !!!

আগের পত্রখানি  যারা পড়েছেন তারা নিশ্চয়ই এতদিনে অবগত হয়ে আছেন কীভাবে একটা হানিমুন থেকে ঘুরে এলাম !!!

তো হানিমুন থেকে ফিরে এসে পেটের কামড়ানী-মোচড়ানী- (আমার কিন্তু পেট আবার মাত্র একটানা !!!) পেটের ব্যথার যন্ত্রনায় পূর্বাপর প্রায় সবকিছুই বেমালুম ভুলে গেছি। কারণ, দৌঁড়ঝাঁপ যতই করি, সংসারটাযে আমাকেই চালাতে হয় !!! বেশ ক’দিন পর। একদিন প্রধান শিক্ষক স্যার জানালেন- “সামনে একটি ট্রেনিং আছে। আপনি থাইকেন”।
বললাম- জ্বী, স্যার। আচ্ছা।

দু’তিন দিনে সেটাও আর মনে নেই। ভাবলাম, সময় হলেতো জানবোই। তো সময় হলো। কয়েকদিন পর একদিন সন্ধ্যেবেলা। প্রতিষ্ঠান থেকে বের হওয়ার সময় দেখলাম- স্যার গেটে দাঁড়িয়ে আছেন। ডাকদিয়ে বললেন- “আগামীকাল সকাল ন’টার দিকে আইসেন। ট্রেনিং আছে”
বললাম- জ্বী, স্যার।

চলে আসলাম।

রাতে চিন্তায় পড়ে গেলাম। ট্রেনিং কি আমিই করবো নাকি আমাকে দিয়ে করানো হবে ? যেহেতু কিছুদিন আগে একটা হানিমুন করিয়ে আনলেন !!!

যাক। সকাল সকালেই স্কুলে গেলাম। গিয়ে দেখি স্কুলে একটা কাকপক্ষীও নেই। হেড স্যারের রুম খোলা। স্যার নেই। পিছনদিক থেকে দেখলাম কেউ একজন আগন্তুক বসে আছেন স্যারের রুমে। স্যারের অপেক্ষায়। ভাবলাম কোন মাস্টার ট্রেইনার হবে হয়তো। কম্পিউটার ল্যাবঃ –এর দায়িত্বে যেহেতু আছি তাই ভাবলাম ল্যাবঃ থেকে একটু ঘুরে আসি, সবকিছু ঠিকঠাক আছে কি না, দেখি কী অবস্থা।

ওমা !!! গিয়ে দেখি তালা ঝুলানো। কেউ নেই। কোন একজন ট্রেইনীও নেই। বারান্দায় হাঁটছি, এই মুহূর্তে ফোন এল- স্যারের রুম থেকে। টিকিউআই -এর একজন অফিসার।

যাচ্ছি আর ভাবছি কী জবাব দেব- যদি প্রশ্ন করে একদিন দেরি করলেন কেন ? বলে রাখি, আমি কিন্তু গতকালই জেনেছি ও দেখেছি সারা বাংলাদেশে ট্রেনিংটা গতকালই শুরু হয়ে গেছে।

যাওয়া মাত্রই স্যারের রুমে আগে দেখা- হেড স্যারের অপেক্ষায় অপেক্ষমান বসে থাকা ভদ্রলোটি। আমি কিছু বুঝে উঠার আগেই আমাকে ধমকের সুরে বলছেন- “কোথায় আপনার মাস্টার ট্রেইনার, ট্রেইনীগণ কোথায়”, ট্রেনিং –এর কী অবস্থা ???

লোকটি বলে কী ??? আমি ভ্যাঁবাচ্যাঁকা খেয়ে বললাম- আমিতো কিছুই জানিনা। আমি নিজেইতো মাস্টার ট্রেইনার হিসেবে এসেছি। অতপর পরিচয় দিলাম। তার পরিচয় জানতে চেয়ে উল্টো ধমক দিয়ে জানতে চাইলাম কেন আপনি আমাকে এভাবে বলছেন ??? অতঃপর, পরিচয় হলো। দু’জনেই পুরো বিষয়টি বুঝতে পারলাম।

স্যার আসলেন। বললেন- আপনিই কো-অর্ডিনেটর, আপনিই মাস্টার ট্রেইনার।

কিছু কার্যক্রম বুঝিয়ে দিয়ে অসাধারণ, অমায়িক, বন্ধুবৎসল আগন্তুক অফিসার (স্যার) বিদায় নিলেন গাইবান্ধা’র উদ্দেশ্যে।

img_2259-1

লগি-বৈঠা ছাড়া। হাল নাই, পাল নাই মহা সমুদ্র পাড়ি দিতে অজানার উদ্দেশ্যে উঠে বসলাম একখানি ভাঙ্গা ছোট্ট তরীতে।

শুরু হলো কর্মযজ্ঞ। প্রধান শিক্ষক, ভেন্যূচীফ মোঃ রমজান আলী আকন্দ স্যারের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও দো’য়া নিয়ে চিঠিপত্র রেডি করতে বসলাম। তৎক্ষনাৎ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ফোন করে ডাকা শুরু করলাম ট্রেইনি উপস্থিত করতে। ট্রেইনি আসতে থাকলো। নিজের পকেট কেটে ব্যাগ, কলম, প্যাড, নাস্তা . . . ইত্যাদি যোগাড়যন্তরে বেরুলাম। ইতোমধ্যে রাজশাহী থেকে একজন সম্মানীত স্যার এসে উপস্থিত হলেন। অত্যন্ত দক্ষ, খুবই আন্তরিক, বন্ধু বৎসল। স্যারের সাথে পরামর্শ করে আস্তে আস্তে তরী বাইতে থাকলাম . . .।

সময়মতো ঘুম নাই, নাওয়া নাই, খাওয়া নাই বাসায় বাজার-ঘাট কিচ্ছু নাই। ননস্টপ 15 দিন অমানসিক পরিশ্রম করার পর কোন মতে তরীখানি নিয়ে কূলের নিশানা পেলাম। 15 দিন পর সম্মানী পেলাম 600/- উল্লেখ্য এই 3 সেশনে একটা ক্লাসও নে’য়ার সময় পাইনাই। যেটুকু পেয়েছিলাম ইচ্ছে করেই নেইনি। ভেবেছি বাইরের ট্রেইনারগণই করুকনা কেন।

চতুর্থ সেশনে আবেদন করলাম- আমি আর থাকতে চাচ্ছি না। পারলে আমাকে ক্লাস দিবেন, না দিলে নাই। তার পর থেকে প্রতি সপ্তাতে একটি করে ক্লাস পেতাম। শেষের দিকে আধ বেলা !!! মানে লাঞ্চ আওয়ারের পর থেকে . . .।

কর্তৃপক্ষ গোপনে সবার পাঠদানের ফিডব্যাক সংগ্রহ করেন ঠিক যেমনটা বুঝতে পারলাম ক’দিন পর।

সেদিন সমাপনী দিন। হেডস্যার আসলেন সবার শেষে। সমাপনী বক্তব্যের এক পর্যায়ে রাগান্বীত স্বরে বলে উঠলেন- সবই কি সাইফোদ্দৌলা-ই শিখায় ??? অন্য স্যারেরা কি কিছু শিখায় না ???

আমার কান গরম হয়ে গেল। শরীর ঠাণ্ডা হয়ে এল। স্যার বলে কী। না জানি কোন ত্রুটি . . .।

না। টেনশনের কিছু নেই। সকল প্রশিক্ষণার্থী একযোগে সমস্বরে বলে উঠলেন- “তারাও শিখিয়েছে তবে তাদের ক্লাসের সময় আমাদের ঘুম ধরেছে। আর সাইফোদ্দৌলা স্যারের ক্লাস করতে কখন লাঞ্চ টাইম চলে গেছে টেরই পাইনি। উনাকে কেন তিন চার দিন ক্লাস নে’য়ার সুযোগ দেন নাই . . . .

আমি টুক করে বের হয়ে চলে আসলাম। অত প্রশংসা শুনতে চাইনারে বাপ . . .

পরদিন নতুন সেশন শুরু। নরমাললী স্কুলে গেলাম পরীক্ষার ডিউটি করতে। গিয়ে দেখি ডিউটি রোস্টারে আমার নামের ঘরে লেখা T. কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞেস করে জানলাম- আজ নাকি আধবেলা আমার একটা ক্লাস আছে। বললাম- পারবোনা। চলে এলাম। হাঁটা ধরলাম বাড়ী’র দিকে . . .।

হাঁটতেছি, হাঁটতেছি, আসতেছি আর ভাবতেছি- আমাকে আধবেলা- সিকিবেলা ক্লাস দিবেইবা না কেন ? আধবেলা’র বেশি ক্লাস দিবেইবা কেন ? আমি কি জাতীয় পর্যায়ের কেউ ? শিক্ষক বাতায়নে আমার কি কোন কন্টেন্ট আছে ? আমি কি শিক্ষক বাতায়নের কোন সপ্তাহের সেরা শিক্ষক ? আমি কি শিক্ষক বাতায়নের সক্রিয় শিক্ষক ? আমার কি কোন ট্রেনিং আছে ? আমার কি কোন সার্টিফিকেট আছে ? আমি কি তৈলমর্দন করতে পারি ? টিকিউআই, এটুআই’র কেউ কি আমাকে চিনে ? আমি কি তাদের কাউকে চিনি ? আমি কি কোনদিন ঢাকাতে গেছি ? আমি কি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় চিনি ? আমি কি মডেল কন্টেন্ট ডেভেলপার ? আমি কি TOT -এ গিয়ে টিটি কলেজের কাউকে দিয়ে কন্টেন্ট তৈরি করে জমা দিয়েছি ? ইত্যাদি ইত্যাদি সাত-পাঁচ ভাবতে ভাবতে একটা উষ্ঠ্যা মারলাম . . .।

স্যরি, আপনাকে না- কাউকে না !!! উষ্ঠ্যা মারলাম রাস্তায়, সামনে পড়ে থাকা কলার খোসাটাকে !!!

কারণ, জবাবতো সবগুলিরই একটাই- “না” !!!

তাছাড়া আমার গায়েতো বড় একটা দুর্গন্ধও আছে যে !!! ঐযে আগেই বলেছি, আমার একটা মহা অন্যায়- মহা অপরাধ আছেনা !!! ডিজিটাল ব-কলম আমি কোন যোগ্যতায় কোন সাহসে তাদের পাশে দাঁড়ানোর যোগ্যতা রাখি ???

________________________________________

শেয়ার করতে পারেন।
ধন্যবাদ
www.compuartsdigital.com
________________________________________

ডিজিটাল কন্টেন্ট ফ্রী সংগ্রহ করতে চাইলে যোগাযোগ করুন- 01711 353 363

এ্যাডভান্সড আইসিটি প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য টিপস / সমাধান সহ 418 পৃষ্ঠার প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল- 1

এ্যাডভান্সড আইসিটি প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য টিপস / সমাধান সহ 418 পৃষ্ঠার প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল- 2


header-2আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য ওয়েব সাইটটি পূর্ণাঙ্গরূপে তৈরি করতে
যোগাযোগ করতে পারেন উপরের ঠিকানায ক্লিক করে।


====================================================================
সকল সংবাদপত্রগুলির লিংক
====================================================================
প্রয়োজনীয়, জরুরি, গুরুত্বপূর্ণ কিছু যোগাযোগ নম্বরের লিংক
====================================================================
শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য, পুরষরা উঁকি দিতে চেষ্টা করবেন না . . . ২
====================================================================
অভ্র বা বিজয় সফটওয়্যার ব্যবহার করে ইন্টারনেট জগতে অতি সহজে বাংলা লেখার উপায় . . .
====================================================================
যারা অভ্রতে লেখেন তারা ক্লিক করতে পারেন লিংকটিতে
====================================================================
একহাজার . . . একটি টিপস
====================================================================
ঘুরে আসুন ইন্টারনেটের অন্ধকার দুনিয়ার ডীপ ওয়েব, ডার্ক ওয়েব সাইটগুলো থেকে।
====================================================================
ইংরেজি বিষয় সহ জেনে নিন প্রয়োজনীয়, গুরুত্বপূর্ণ, মজার কিছু তথ্য . . . ১
====================================================================
ইংরেজি বিষয় সহ জেনে নিন প্রয়োজনীয়, গুরুত্বপূর্ণ, মজার কিছু তথ্য . . . ২
====================================================================
জেনে নিন ইংরেজি সহ প্রয়োজনীয়, গুরুত্বপূর্ণ, মজার কিছু তথ্য . . . ৩
====================================================================
জেনে নিন ইংরেজি সহ প্রয়োজনীয়, গুরুত্বপূর্ণ, মজার কিছু তথ্য . . . ৪
====================================================================