বাসমাশিসের শীর্ষ নেতাকে নির্বাচনের পূর্বে আমাদের নিয়োগ বিধি ও প্রথম শ্রেণির কাজ সম্পন্ন করার জন্য অনুরোধ করে ছিলাম যে শঙ্কা থেকে, আজ তা বাস্তবায়ন হতে চলেছে। এ কারণেই নির্বাচন বয়কটের আহবান করেছিলাম।
দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদা প্রাপ্তিতে বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষক সমিতির ভূমিকাঃ
====================================================
প্রিয় সহকর্মী বন্ধুগণ,
আমার সংগ্রামী সালাম গ্রহণ করুন। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহতা’লার অপার মহিমায় সুস্থ্য থেকে দেশ ও জাতীর ভবিষ্যৎ কর্ণধার গড়ার কাজে নিজের সর্বস্ব বিলিয়ে দিয়ে নিজ কর্তব্য পালনে ব্রত আছেন। আমি জানি কর্তব্য পালনে আপনারা এতটাই ব্যস্ত আছেন যে, আপনাদের পেশার মানোন্নয়নের জন্য চিন্তা করা বা খোঁজ খবর নেওয়া হিমালয়ে উঠার মত দুঃসাধ্য ব্যাপার। যার ফলে আপনারা এমন এক ধুম্রজালের মাঝে বিচরণ করছেন যেখানে সত্য মিথ্যার স্বরূপ নির্ণয় করতে পারছেন না। ফলে উচিৎ-অনুচিত নির্ণয়ে আপনারা অনেকেই কিংকর্তব্যবিমুঢ়।
শ্রদ্বেয় বন্ধুরা,
আমি আজ আপনাদেরকে আমার ৭ বছরের অভিজ্ঞতার আলোকে কিছু টিপস দেওয়ার চেষ্টা করবো। যা দিয়ে আপনি আপনার পেশার মানোন্নয়নে কী করণীয় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন বলে আমি বিশ্বাস করি। সত্যকে আবিস্কার করার অভিজ্ঞতাটুকু শুধু আপনাদের সাথে ভাগাভাগি করতে আজকের এই দীর্ঘ চিঠির অবতারণা। এত দীর্ঘ চিঠিটি পড়ার সময় বা ধৈর্য যে আপনাদের নাই তা আমার অজানা নয়। তারপরও অনুরোধ করবো যেভাবেই হোক চিঠির সারমর্মটা একটু জানা বা বোঝার চেষ্টা করবেন।
প্রিয় সহকর্মী বন্ধুগণ,
চাকুরীতে যোগদান করার পর যখন জানতে পারলাম চাকুরীটা তৃতীয় শ্রেণীর, তখন অনেকটা হতাশ আহত হয়ে পড়ি। কারণ বে-সরকারি কলেজের চাকুরী ছেড়ে সরকারি স্কুলে প্রবেশ করি ২য় শ্রেণীর চাকুরী মনেকরে, কারণ তখন আমাদের স্কেলটা ছিল ২য় শ্রেণীর সর্বোচ্চ স্কেল। এরপর সিনিয়র সহকর্মীদের নিকট আশ্বাস পেলাম অচীরেই ২য় শ্রেণীর গেজেটেড পদ মর্যাদা দেওয়া হবে, হতাশ হওয়ার কারণ নেই। তখন একটু আশ্বস্ত হলাম। পাশাপাশি সিনিয়র সহকর্মীদের নিকট থেকে এ-ও জানতে পারলাম, বিগত ৩০ বছর ধরে এরকমই শুনে আসছেন তারা, কিন্তু বাস্তবে পরিণত হচ্ছে না । চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়েও বাতিল হয়ে যাচ্ছে অর্থাৎ তাদেরকে নিয়ে কলেজ শিক্ষকরা গেম খেলছেন। ছোট বেলা থেকেই রাজনৈতিক পরিমন্ডলে বড় হওয়ার কারণে আমি দাবি আদায়ে নেতৃত্বদানকারী নেতাদের খোঁজ খবর নিতে থাকি। বিএড কলেজের অনেক শিক্ষক জনাব মোঃ মোফাজ্জল হোসেন স্যারের নাম বলেন। তাঁর অনেক প্রশংসা করেন, যেমন- সুষ্পষ্টভাষী, বলিষ্ট কণ্ঠের অধিকারী, সুদর্শন, প্রচন্ড সাহসী, নীতিতে অটল, তোষামোদি পছন্দ করেননা, দৃঢ়চেতা এসব গুণকীর্ত্তন শোনার পর তার সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়ি। অবশেষে তার ফোন নাম্বার সংগ্রহ করে তার সাথে কথা বলে ২০০৮ সালে জুলাই মাসে ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজের প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকদের নিয়ে প্রথম মিটিং করি। তিনি তার সাথে নিয়ে আসেন রাজশাহীর নিরেট ভদ্র লোক জাসমিন স্যারকে। আমাদের সেই দিনের মিটিং-এ অনেক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। মিটিং অনেকটা সফল হয়। নেতার বক্তব্য শুনে আমি অভিভূত হয়ে পড়ি। তাকে সর্বাত্ত্বক সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দেই। নেতাও আমার বক্তব্য শুনে আমাকে বিশ্বাস করতে পেরেছেন। যার জন্য তিনি আমাকে বলেছেন তোমার মত প্রত্যেক বিভাগে ২/৪ জন শিক্ষক আমার পাশে থাকলে ১ম শ্রেণীর মর্যাদা ৬ মাসের মধ্যে এনে দিতে পারবো। তাঁর এই আত্মবিশ্বাসী কথায় আমার পাল্টা প্রশ্ন ছিল প্রক্রিয়াটা কী, তা কি একটু বুঝিয়ে বলবেন ? তিনি তখন আমাকে বুঝিয়ে বলেন টিচার্স ট্রেনিং কলেজের শিক্ষকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে পারলে আমি প্রথমে কয়েকটা সাংবাদিক সম্মেলন করে সরকারের নিকট আমাদের যৌক্তিক দাবি তুলে ধরবো। এরপর শুরু করব জেলা পর্যায়ের মিটিং, তখনও মিডিয়ার মাধ্যমে আমাদের দাবিগুলো তুলে ধরবো। এরপর বিভাগীয় পর্যায়ে সরকারের মাননীয় সাংসদ ও মন্ত্রীদের নিয়ে মিটিং করে তাদের মাধ্যমে তুলে ধরব। অতপরঃ সরকারের বুদ্ধিজীবিদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীকে বিষয়টা অবহিত করবো। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী বরাবর প্রত্যেক জেলা থেকে একই সাথে স্মারক লিপি দিয়ে আমাদের প্রতি বৈষম্যের চিত্র তুলে ধরবো। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়ে দিব, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদেরকে ২য় শ্রেণির পদমর্যাদা দেওয়ার কাজ প্রায় শেষ করেছিলেন। তারপর তাঁর অকাল মৃত্যুতে আমরা ৪০ বছরে এ দাবি পূরণ করতে পারি নাই। তারপরও যদি না হয়, আমরা মানববন্ধন, কর্মবিরতী পরিশেষে অনশনের মত কঠিন কর্মসূচীর মাধ্যমে আমাদের যৌক্তিক দাবি সরকারের কাছে তুলে ধরবো এছাড়া আমাদের কোন বিকল্প নেই। কারণ কলেজ শিক্ষকরা ৩০ বছর ধরে আমাদের সাথে গেম খেলেছে। তাদের নেতা নির্বাচনের সময় হলে দাবি পূরণ হবে এমন একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। আমাদের সহজ সরল শিক্ষকগণ তা বিশ্বাস করে তাদের মত করে নেতা তৈরি করে দেন। পরক্ষণেই ঐ নেতাদের দিয়ে তাদের স্বার্থ হাসিল করে। নেতারা সুবিধাভোগী হয়ে ওঠেন। এদিকে সাধারণ শিক্ষকদের ভাগ্য যে তিমিরে ছিল সে তিমিরেই থেকে যায়। এখানে তারা একটা মজার খেলা খেলে থাকেন। সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে সু-কৌশলে ২/৩ টা গ্রুপ তৈরি করে ফেলেন। তারপর এদের উপর দোষ চাপিয়ে দেন। তোমাদের কারণেই ১ম শ্রেণী হয় নাই। এরপর তিনি একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেন, তোমাদের দাবি ২টা পদ্ধতিতে পূরণ হতে পারে, তা হলো উপর থেকে অথবা নিচের থেকে। এ কথা শুনে নেতার দিকে আমি অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম। তিনি বুঝলেন আমি উপর ও নিচের অর্থ কী তা বুঝিনাই। তাই তিনি বললেন বুঝলে না ? এর অর্থ হচ্ছে- তোমরা আন্দোলন করে যেভাবে আমি বলেছি, সেই ভাবে করতে পারলে প্রধানমন্ত্রী তোমাদের দাবি মানতে বাধ্য হবেন। কারণ শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড আর মাধ্যমিক শিক্ষা হচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থার মেরুদণ্ড । তখন প্রধানমন্ত্রী ঘোষনা করলে আমলারা এ প্রক্রিয়ায় উপরে নির্দেশ পালন করবে। এটা হচ্ছে উপরের পদ্ধতি। আর নিচের থেকে বলতে ফাইল ওয়ার্ক করে অর্থাৎ মাউশি থেকে প্রস্তাব মন্ত্রণায়ে যাবে, তারপর মন্ত্রণালয় থেকে বের করে আনতে হবে, এই হলো নিচের পদ্ধতি। এখন তোমরা সিদ্ধান্ত নাও কোন পদ্ধতিতে সামনে এগুবে। তবে তোমাকে একটা কথা স্মরণ করিয়ে দেই, তাহলো মাউশি কখনো স্বেচ্ছায় এ প্রস্তাব পাঠাবে না। কারণ কলেজের লোকেরা আমাদের সব পদগুলো দখল করে আছেন। আমরা ১ম শ্রেণি হয়ে গেলে ঐ পদগুলো তাদের হারাতে হবে। ফলে তারা আত্মঘাতী প্রস্তাব পাঠাবে না। আর তোমাদেরকেও না বলবে না। অর্থাৎ তোমাদেরকে নিয়ে যেভাবে ৪০ বছর ধরে গেম খেলেছে যতদিন সম্ভব এভাবে গেম খেলে যেতে থাকবে। তাঁর কথা শুনে আমি ৩/৪ সপ্তাহ ধরে ভাবলাম। অতপরঃ নেতাকে জানালাম আমি উপরের পথটা বেছে নেব, নেতা খুশি হয়ে বললেন শুরু কর। এরপর আল্লাহর নামে শুরু করলাম। পরিকল্পনা নিয়ে সামনের দিকে এগুতে থাকলাম। এ আন্দোলনে আপনারা প্রত্যেক জেলায়, অঞ্চলে আমার মত শত শত শিক্ষক অংশগ্রহণ করলেন। যারা স্বনামে পরিচিত তাদের নামের বহর এতো বিশাল যে, আমি বাদ পড়ার ভয়ে এবং তাদের নিরাপত্তাজনিত কারণে তাদের সকলের নাম উল্লেখ করলাম না; তবে যাঁদের নাম উল্লেখ না করলেই নয়, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন দেওয়ান এনামুল হক স্যার, ডবিউ স্যার, সাইফুদ্দিন স্যার, মুজিব স্যার, মোজ্জাম্মেল স্যার, মোস্তাফিজ স্যার, হেলাল স্যার, শাহানেওয়াজ স্যার, জেসমিন স্যার, সাইফুল ইসলাম স্যার, রোকন স্যার, মঞ্জু স্যার, আকরাম স্যার আরো অনেকেই যাঁদের প্রত্যেক জেলা ও অঞ্চল নেতাদের আপনারা সবাই চিনেন। প্রেসক্লাব, রিপোটার্স ইউনিটি, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারস ইনস্টিটিউট, ইঞ্জিনিয়ারস ইনস্টিটিউটে ৩০ টিরও বেশি প্রেস কনফারেন্স করে আমরা আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো সরকারের কাছে পেশ করলাম। এরপর জেলা ও বিভাগীয় পর্যায় মিটিং করলাম, মানব-বন্ধন করলাম, সরকারের বুদ্ধিজীবী (ড. আলাউদ্দিন স্যার, ড. আ.আ.ম.স. আরিফিন সিদ্দিকী স্যার, (ঢাবি), ড. আনোয়ার হোসেন স্যার, (জাবি) ড. আনিসুজ্জামান স্যার, (ঢাবি) প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, ভোরের কাগজের সম্পাদক, শ্যামল দত্ত, এটিএন বাংলার চীফ এ্যাডভাইজার জনাব সাইফুল বারী -এর মাধ্যমে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীকে অবহিত করালাম।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনশন করলাম। প্রধানমন্ত্রী বরাবর এক যোগে ৬৪টি জেলা থেকে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি দিয়ে আমাদের দাবি উপস্থাপন করলাম। এ কর্মসূচীগুলোতে সাধারণ শিক্ষকগণ কীযে শতস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছেন তাতে আমি অভিভূত এবং উজ্জীবিত। আমি তাদের মধ্যে একটি তীব্র না পাওয়ার বেদনা অনুভব করলাম।
মোফাজ্জল স্যারও আমার চেয়ে বেশি শিক্ষকদের বুঝতে পেরেছেন। মোফাজ্জল স্যার -এর কঠিন পরিশ্রম করার ধৈর্য, অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছার দৃঢ়তায় আমি সত্যিই আন্দোলিত এবং পূলকিত। আমরা প্রতিনিয়ত উল্লেখীত বুদ্ধিজীবীদের নিকট যেতাম। তখন তারা ৫ম ও ৬ষ্ঠ বারের সময় বিরক্ত হয়ে বলতেন, আপনারা কেন বার বার আসেন ? বললামতো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রীপরিষদে তার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছেন। আপনাদের দাবি তিনি মেনে নিয়েছেন। অচিরেই আপনাদেরকে ডাকবে এবং সংসদীয় কমিটির সুপারিশ ইতোমধ্যে হাতে পেয়েছেন। এরপর আমরা আপনাদের জন্য কী করতে পারি ? বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে একটা নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ব্যাপার। যান আপনাদের দাবি পূরণ হয়ে যাবে ! আমরা খুশিমনে আরো উজ্জীবিত হয়ে তাঁদের কাছ থেকে ফেরতাম। তাদের বক্ত্যব্যের প্রমাণ মেলে কিছুদিনের মধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে মাউশিকে জানানো হয়। প্রধানমন্ত্রী শিক্ষকদের দাবী পূরণ ঘোষণা করবেন। শিক্ষক প্রতিনিধীদের নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। ঠিক তখনই মাউশি আমাদের নাম না দিয়ে তাদের অনুসারী তাদের চাটুকার এবং তাদের বানানো নেতাদের নাম প্রেরণ করেন। আমাদের (বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষক সমিতি) পক্ষ থেকে শুধু মোফাজ্জল স্যারের নাম রাখেন। সেই সময় কথা হয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সভায় মোফাজ্জল স্যারের জন্য একটা চেয়ার থাকবে। কিন্তু পরক্ষণে তারা তাকে বিএনপি’র দালাল বানিয়ে তাকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে নিজেরা সম্পূর্ণ ক্রেডিট ছিনিয়ে নেয়। এতে আমাদের নেতাদের কোন দুঃখ বা পরিতাপের কিছু ছিলনা। কারণ আমরা ১ম শ্রেণি চেয়েছি, ১ম শ্রেণী পাবো এটাই আমাদের বড় পাওয়া। নেতা হওয়ার জন্য আন্দোলন করিনি। কিন্তু দুঃখটা পেলাম যখন প্রধানমন্ত্রী ২য় শ্রেণির পদ ঘোষণা করেন তখন। আর এই দুঃখের তীব্রতা বেড়ে যায় যখন ২য় শ্রেণীর কথা শুনে আমাদের শিক্ষকরা লাফিয়ে উঠেন। আমি নিশ্চিত সেই শিক্ষকগণ আমাদের আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন না, যারা লাফিয়ে উঠলেন। যারা সম্পৃক্ত ছিলেন তারা কেউ লাফিয়ে উঠে নাই। আমরা যারা এই কঠিন পরিশ্রম করলাম তারা বিষয়টা মনের দিক থেকে মেনে নিতে পারলাম না। অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে সেখান থেকে বাড়ি ফেরলাম। বাধ্য হয়ে যখন বুদ্ধিজীবীদের সাথে আলাপ করি তখন তারা বলেন তোমরাইতো ১ম শ্রেণী নাওনি। আবার মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষকদের সাথে মত বিনিময় সভায় বলে থাকেন তোমরা ১ম শ্রেণী নাওনি, এ কথা শুনলে আমাদের মনের অবস্থা কী হওয়া উচিত তা আপনারাই বলেন। মাননীয় মন্ত্রীর কথার প্রমাণ মেলে বাসমাশিসের তথাকথিত বহিস্কৃত নেতা যখন গেল মাসে প্রধান শিক্ষকদের নিয়ে এক সভায় নিজেই স্বীকার করেন, আমার বহিস্কারাদেশ উইথড্র করাতে আমি পূলকিতও না অভিভূতও না। কারণ কলেজ শিক্ষকরাই এবং এই ডিজি, ডিডিরাই আমাকে ১ম শ্রেণী এবং আলাদা অধিদপ্তরের কথা বলতে নিষেধ করেছেন। এখন আপনিই বলুন আমরা এত পরিশ্রম করলাম অথচ উনারা কলেজ শিক্ষকদের চাপে আমাদের প্রাণের দাবি উত্থাপন করলেন না। করলে কী হতো ? হয়তো তারা ঢাকাতে বড় বড় স্কুলে থাকতে পারতেন না। দালালী করে সুবিধাভোগী হতে পারতেন না। এই ত্যাগটুকু কবুল করতে পারলেই আমরা ১ম শ্রেণির মর্যাদা সেই দিনই পেতাম। আপনারা যারা সরাসরি আমাদের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন তাদের কষ্টটা আমাদের মতই আর যারা সম্পৃক্ত ছিলেন না তারা কখনো আমাদের এ কষ্টটা বুঝতে পারবেন না, এটা পারা যায় না- পারার কথাও না।
এই নেতার এমন বক্তব্য শোনার পরও এই নেতার বক্তব্য শোনার জন্য আমাদের সহকর্মীরা উপস্থিত হন। প্রধান শিক্ষকগণ তাদেরকে সহায়তা করেন। এ পদ্ধতিটাই আমাদের বঞ্চনার কারণ, এ পদ্ধতি ভাঙ্গতে না পারলে আমরা চিরদিন বঞ্চিত হতে থাকবো। ঘুমিয়ে থাকলে চলবে না, একটু জাগতে হবে এবং জাগাতে হবে।
এই হল আমাদের দ্বিতীয় শ্রেণীর মর্যাদা অর্জনের আমাদের ইতিহাস। আর তাদের ইতিহসাটা নিশ্চয়ই আপনাদের জানা দরকার তা না হলে চিরদিন আপনারা ভুল করতে থাকবেন আর ভুলের সুবিধাটা ভোগ করবে সুবিধাবাদীরা ।
প্রিয় সহযোদ্ধারা,
আপনারা নিশ্চয়ই আমার সাথে একমত পোষণ করবেন যে, পেশাজীবী সংগঠনের মূল্য উদ্দেশ্য হচ্ছে পেশার মানোন্নয়নের জন্য কাজ করা। বাসমাশিস -এর কাছে আমাদের প্রত্যাশাটাও তাই। কিন্তু এই সংগঠনটি আজ পর্যন্ত কোন কর্মসূচী দিয়েছে কি-না এমন নজীর তাঁদের সংগঠনের ইতিহাসে নাই। যদিও অন্যান্য পেশাজীবী সংগঠনগুলো যেমন- নার্সদের, ডাক্তারদের, রেজিস্ট্রার প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির, সমবায়, সাবরেজিস্ট্রার, পুলিশ সবাই তাঁদের মানোন্নয়ন করেছে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে। আমরা যখন দেখলাম তারা কোন কর্মসূচী দেওয়ার মত কোন সাহস রাখে না, ডিজি, ডিডি স্যারদের রোশানলে পড়ার ভয়ে। বাধ্য হয়ে আমরা আপনাদের সমর্থন নিয়ে ২০১০ সালে এসে আলাদা রেজিস্ট্রেশন করে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন যখন শুরু করি, তখনই ঐ সংগঠনের নেতাদের চরিত্র সূর্যোদয়ের মত আমাদের কাছে আরোও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে । যা ছিল এত বছর পর্দার আড়ালে। আমরা যখন খুলনায় বিভাগীয় সম্মেলন করি তখন মাননীয় শ্রমপ্রতিমন্ত্রী মুন্নীজান সুফিয়ান আমাদের সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন। তিনি বক্তৃতায় বলেন, আপনাদের মিটিং-এ না আসার জন্য ঢাকা থেকে আপনাদরে কোন এক শিক্ষক নেতা আমাকে বারণ করেছেন। আপনারা নাকি বিএনপির দালাল। আমরা যখন ব্রাহ্মনবাড়িয়ায় মিটিং করি সেখানকার মাননীয় সাংসদ উপস্থিত ছিলেন। তিনিও একই কথা বলেছেন। এভাবে আমরা যখন প্রেসক্লাবে কনফারেন্স করি মাননীয় সাংসদ, মন্ত্রীদের নিয়ে তখন তারা তাদেরকে ভুল বুঝিয়ে আমাদের সভা মিস করতে বাধ্য করেছেন। আমরা দাবী উত্থাপনের জন্য গভঃল্যাবেরটরী স্কুলের প্রধান শিক্ষক মহোদয়ের লিখিত অনুমোতি সাপেক্ষে স্থান নির্ধারন করি। তখন তথাকথিত ঐ নেতারা ঐ একই তারিখে মিটিং আহবান করে, ফলে বাধ্য হয়ে প্রধান শিক্ষক তাঁর লিখিত অনুমোতি প্রত্যাহার করেন। যদিও এটা একজন প্রধান শিক্ষকের কাছে প্রত্যাশা ছিল না। কারণ উনি প্রথমে আমাদেরকে অনুমোতি দিয়েছিলেন। বাধ্য হয়ে আমরা টিচার্স ট্রেনিং কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ মহোদয়ের অনুমোতি নিয়ে মিটিং -এর স্থানকে স্থানান্তর করি। এই খবর পেয়ে তারা এখানে এসেও আমাদেরকে বিএনপির দালাল বানিয়ে তৎকালীন অধ্যক্ষ তাসলিমা বেগমকে বাধ্য করেন তার লিখিত অনুমোতি প্রত্যাহার করাতে। অধ্যক্ষ মহোদয় অত্যন্ত বিনয়ের সাথে ক্ষমা প্রার্থনা করে তার অনুমোতি প্রত্যাহার করেন। আপনারাই বলুন, আমরা কি আমাদের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে এগুলো করেছি। তাদের সাথে আমাদের কোন ব্যক্তিগত পর্যায়ের কোন সম্পর্ক আছে, না কি কোন শত্রুতা আছে ? তাহলে কেন তারা সহযোগীতা না করে প্রত্যেক জায়গায় বিরোধীতা করলেন ? এর কারণ একটাই। কলেজ শিক্ষকগণ যখন বুঝলেন এভাবে আন্দোলন চলতে থাকলে শিক্ষকগণকে আর দমিয়ে রাখা যাবে না আর তখনই তারা তাদের চাটুকার নেতাদেরকে আমাদের পিছনে লেলিয়ে দিলেন, আর তারা তাদের স্বার্থপরতার উর্দ্ধে উঠতে পারলেন না বলেই তারা তাই করলেন। এটা হল তাদের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের ইতিহাস। তবে তাদের কিছু ইতিবাচক কর্মকাণ্ড আছে তা না বলা হলে অন্যায় হবে। তা হল তারা প্রায়শঃই আমাদের প্রেস কনফারেন্সে, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আসতেন আর বলতেন- আমরা যে এসেছি, এ কথা কোথাও বলা দরকার নেই অর্থাৎ কলেজ শিক্ষকরা জানতে পারলে তাদেরকে খাগড়াছড়ি-বান্দরবান পাঠানোর ভয় আছে !
আমি নেতাকে একদিন জিজ্ঞাসা করলাম, তারা আমাদের মিটিং-এ আসেন কেন ? তারা নতুন করে কোন ষড়যন্ত্র করেন নাকি ? নেতা বললেন, এখানেও উপরের আর নীচের ব্যাপার আছে ! এবারও আমি তার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলাম। তিনি বুঝলেন আমি এখানেও উপর নীচের কাহিনী বুঝিনি, তাই তিনি বললেন, তুমি যেমন শিক্ষকদের দাবী পূরণের জন্য উপরের পদ্ধতি বেছে নিয়েছ অর্থ্যাৎ প্রধানমন্ত্রী বলবেন তারপর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় তা করতে বাধ্য থাকবে এটা বেছে নিয়েছে। আর ওরা নেতা হওয়ার জন্য এই উপরের পদ্ধতি বেছে নিয়েছে। ওদেরকে নেতা হওয়ার জন্য সাধারণ শিক্ষকদের কাছে যেতে হয় না। ডিজি, ডিডি, এডি এবং প্রধান শিক্ষকরা তাদেরকে নেতা বানিয়ে দেন। সহকারী শিক্ষকরা তাদের কথা না শুনলে তাদেরকে ট্রান্সফারের ভয় দেখান। ফলে তাদেরকে বেশির ভাগ সহকারী শিক্ষক চিনে না, শুধুমাত্র সুবিধাভোগীরা ছাড়া। এখানে এসে তারা পরিচিত হয়। ফলে তাদের ব্যবসা ভাল হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। আমি নেতার ব্যবসার কথা শুনে হতবাক হই। পা ল্টা প্রশ্ন করি, এখানে ব্যবসার কথা আসছে কেন স্যার ? তিনি বললেন, আরে বোকা তোমাদের মধ্য থেকে কেউ যদি ঢাকায় আসতে চাও তাহলে এই নেতাদের কাছে আসতে হবে। এখানে এসে পরিচিত হলে বিষয়টা তাদের জন্য সহজ হয়ে যাবে। বিনাচালানে লাভ অর্থ্যাৎ পরিশ্রম করলাম আমরা অর্থ ব্যয় করলাম আমরা ওরা এক ঢিলে দুই পাখি মারল। ব্য বসাও করল আর পরিচিতও হল। বেশ মজার বিষয়তো ! ঠিক তাই ! -তিনি বললেন।
প্রিয় বন্ধুরা,
এখন সময় হয়েছে আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার। আমাদের দায়িত্ব ছিল আপনাদের সত্য কাহিনী জানানো। অনেক সিনিয়র শিক্ষক স্যাররা এই সত্যটা অনেক আগেই উপলব্ধি করতে পেরেছেন। কিন্তু তারা সাহস করে বলতে পারেননি, আমরা পেরেছি। আপনারাই বলবেন, ওদেরকে আর ব্যবসার সুযোগ দিবেন কিনা ? আমাদের তথাকথিত এই নেতাদের স্বার্থপরতার সুযোগ নিয়ে শিশুদের মত বোকা বানিয়ে আমাদেরকে নিয়ে খেলা করার সুযোগ দিবেন কিনা ? সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখনই সময়, এমনিতেই অনেক দেরি হয়ে গেছে। বাসমাশিস -এর দাবী তারাই কাজটা করেছে। তারা দাবী করতেই পারে। কারণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে যে অনুষ্ঠান হয়েছিল তারাই স্টেজে ছিল। এখন আপনাদেরকে মেধা খাটিয়ে বিবেক দিয়ে বিচার করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠান করার দায়িত্ব শিক্ষা মন্ত্রণালয় কাকে দিবে ? অবশ্যই মাউশিকে। মাউশি কাদেরকে দিবে ? অবশ্যই তাদের তৈরীকৃত চাটুকার নেতাদেরকে, নিশ্চয়ই আমাদেরকে না। এখানেই মূলত শুভঙ্করের ফাঁকি, এখানে ছিনতাই। আমাদেরকে না দেওয়ার কারণ, আমরা তাদেরকে উপেক্ষা করে আমাদের মত করে সরকারের কাছে আমাদের যৌক্তিক দাবী উপস্থাপন করেছি। যার জন্য তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে দাবী মানতে হচ্ছে। এই সরল সহজ হিসাবটা অবশ্যই আপনাদেরকে বুঝতে হবে। না বুঝতে পারলে আমাদের স্বপ্ন মাধ্যমিক শিক্ষা ক্যাডার, মাধ্যমিকের জন্য আলাদা অধিদপ্তর, পরিশেষে আলাদা মন্ত্রণালয় আদায় করা সম্ভব হবে না।
প্রিয় সহকর্মীবৃন্দ, এখন নিজেই দুটি প্রশ্ন করে বিষয়টি পরিস্কার করতে পারবেন। প্রথমতঃ প্রশ্ন- দীর্ঘ ৪০ বছর যাবৎ এ দাবী পূরণ হয়নাই কেন ? উত্তর আমাদের বাসমাশিস নেতাদের চরম স্বার্থপরতার সুযোগে শিশুদের মত করে সহকারী শিক্ষকদেরকে নিয়ে গেম খেলার সুযোগ ছিল বলে। অর্থ্যাৎ গ্রাম্য ভাষায় চোঙ্গা দিয়ে গাছের ওঠার সুযোগ করে দিয়ে পরবর্তীতে চোঙ্গা সরিয়ে নেওয়া। দ্বিতীয়তঃ প্রশ্ন এখন হল কেন ? উত্তর সিদ্ধান্তটা মাননীয় প্রধামন্ত্রীর নিকট থেকে আসছে বলে এবং এ সিদ্ধান্ত পাল্টানোর সুযোগ ছিল না বলে। তারপরও যতটুকু সম্ভব তা তারা করেছেন অর্থাৎ ৮ বছর পূর্তিতে প্রথম শ্রেণে দেওয়ার ঘোষণাটা বাতিল করতে পেরেছেন। এছাড়া বাসমাশিস নেতারা দাবী করেন বাই নেমে গেজেটের কাজটা তারা করেছেন। চাকুরী স্থায়ীকরণ তারা করেছেন। এ কাজগুলো বাসমাশিসের পক্ষ থেকে করা হয়নি হয়েছে কতিপয় শিক্ষকের ব্যক্তিগত উদ্দ্যোগে। তাদের মধ্যে আমাদের সহকারী শিক্ষক সমিতির অনেক নেতাও জড়িত ছিলেন। এ কাজগুলো করতে মাউশির সহযোগীতা দরকার ছিল। মাউশি কখনোই আমাদেরকে মেনে নেয়নি। কাজেই এ কাজগুলো করার সুযোগ তাদের চাটুকার নেতাদেরকে দিয়ে করিয়ে নিয়ে এ অর্জনটাকে তাদেরকে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
অথ্যার্ৎ আমদের অর্জনটা তারা ছিনতাই করেছেন। তারা ছিনতাইকারী নেতা। এখানেও একটা গভীর ষড়যন্ত্র আছে তারা একমাসের কাজ করতে ২৭ মাস সময় নিয়েছে। আর আমরা ২৪ মাসে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বের করেছি।
বাই নেমে গেজেট করার জন্য মূলতঃ কাজটা কি ছিল ? কাজটা ছিল সকল শিক্ষকদের একটা তালিকা প্রস্তুত করে সুপারিশ আকারে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা।
সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ আপনারাই বলুন,
এই কাজটা করতে কি ২৭ মাস সময় নেওয়ার কথা ? নিশ্চয়ই না। কিন্তু তবুও এতট সময় নেওয়ার পিছনে যে গভীর ষড়যন্ত্র ছিল। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা কার্যকর করতে ক্লারিকাল বা দাপ্তরিক কাজগুলো সম্পূর্ণ করতে মাউশির সহযোগীতা প্রয়োজন ছিল । মাউশি এই সুযোগে তাদের চাটুকার নেতাদের ব্যবহার করে সময় নিয়ে এ অর্জনটা ছিনতাই করে এবং মোফাজ্জাল স্যার সর্ম্পকে নানা কুৎসা ছড়িয়ে সাধারণ শিক্ষকদের কাছে তাকে ছোট করার চেষ্টা করে। সাধারণ শিক্ষকদের মাঝে স্যারের একটা শক্তভীত থাকার কারণে কাজটা করতে এসময় লেগেছে। তারা ব্রিটিশদের মত করে গভীর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আমাদের মধ্যে একাট ভাঙ্গনের সৃষ্টি করে। এই ষড়যন্ত্রে আমাদের অনেক নেতা তাদের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে ভুল করেন। অবশেষে তারা সফল হয়। আমাদের নেতা যখনই আমাদের সমিতির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় কমিটি বিলুপ্তির ঘোষণা করেন, তখনই তারা অট্ট হাসি দিয়ে নির্বাচনের জন্য খালি মাঠে নেমে পড়েন। নির্বাচনের পিছনে কলেজ শিক্ষকদের একটা গভীর ষড়যন্ত্র আছে। তাহল তারা চাটুকার নেতাদেরকে নিয়োগ বিধি তৈরীর পূর্বে নির্বাচিত করতে পারলেই এই নির্বাচিত নেতাদের দিয়ে ৫০% প্রথম শ্রেণীর মর্যাদা দেওয়া আটকাতে পারবে। অপরদিকে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার যারা চাকুরী পেয়েছে উপবৃত্তি কর্মকর্তা হিসেবে। তাদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়ে প্রধান শিক্ষক পদে জেলা শিক্ষা অফিসার পদে প্রমোশনের সুযোগ দিয়ে হাতিয়ে নিতে পারবেন। মাধ্যমিকের অধিকাংশ প্রসাশনিক পদে কলেজ শিক্ষকদেরকে বসাতে পারবেন যেহেতু তারা নির্বাচিত। এক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় না বুঝে নিয়োগ বিধিটি সম্পন্ন করে ফেলবে। এই গভীর ষড়যন্ত্র নিয়ে তারা নির্বাচনের জন্য মাঠে নেমেছে।
আপনারাই বলেন,
যে নেতা প্রকাশ্যে হেডস্যারদের সভায় বলেন, ডিজি ডাইরক্টেরদের চাপে প্রথম শ্রেণির কথা বা আলাদা অধিদপ্তরের কথা বলতে পারেন নাই। তারাই আবার তাদেরকে সহায়তা করছে নির্বাচিত নেতা হওয়ার জন্য। আপনারা প্রতিবাদ না করলে হয়তো তারা নির্বাচিত হয়েও যাবে। যদি তাই হয় তাহলে আবার আমরা ২০ বছর পিছিয়ে যাব। আমি নির্বাচনের বিরোধীতা করি না। আমি বিরোধীতা করি নির্বাচনের নামে শঠতার, ভণ্ডামীর, প্রতারণার। আমি জানি নির্বাচিত নেতাদের গুরুত্ব সরকারের কাছে অনেক। কিন্তু এ প্রক্রিয়ার নির্বাচন না। ডিডি স্যাররা সরাসরি একটা গ্রুপের পক্ষ অবলম্বন করতে পারেন না। এটা চাকুরীর শৃঙ্খলা বিধির সু-স্পস্ট লঙ্ঘণ। তা জেনেও তারা সহযোগীতা করছেন সেই পূর্বের মত ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের জন্য। নির্বাচনের জন্য আমাদের মতামত হচ্ছে নিয়োগবিধি সম্পূর্ণ সম্পন্ন হওয়ার পর এবং ৫০% প্রথম শ্রেণি ঘোষণা করার পর আমরা নির্বাচনে যেতে রাজী। এ ব্যাপারে আমাদের সু-স্পষ্ট দাবী আছে। আমাদের সহকারী শিক্ষকদেরকে যে কোন স্কুলে যখনিই চাইব মিটিং করার সুযোগ দিতে হবে। অবশ্য ক্লাস টাইম শেষে। এ ধরনের আরো অনেক কিছু। তারপর আমরা নির্বাচনে যাব। এর পূর্বে তাদেরকে যদি নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ দেই, তবে তা হবে সহকারী শিক্ষকদের জন্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত, তখন তারা পূর্বের মত আমাদের ভাগ্য নিয়ে পাশা খেলবে।
এই ছিনতাইকারী নেতাদের আমি বিশ্বাস করতে পারি না। যে কারণে আজ এই দীর্ঘ চিঠির অবতারণা, তা হল আমি নতুন করে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছি। দীর্ঘ ৫ বছর ধরে আন্দোলন করতে গিয়ে যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তা হল বাসমাশিস নেতাদের স্বার্থপরতা, কাপুরুষতা ও চাটুকারিতা আমাকে গভীরভাবে আহত করেছে।
চিন্তা ও চেতনায় তারা দাসদের মানসিকতাকেও হার মানায়। তাদের কারণে আমি নিজেকে শিক্ষক হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি না। কাজেই তাদের এই মিষ্টি কথায় যাতে সহজ সরল শিক্ষকগণ আবারও ভুল পথে পা না বাড়ায়। তাদের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সবাই যাতে ঐক্যবদ্ধভাবে একই সুরে কথা বলে। নির্বাচন হবে নিয়োগবিধি সম্পন্ন এবং ৫০% শিক্ষক প্রথম শ্রেণীর মর্যাদা পাওয়ার পর এর পূর্বে কোন নির্বাচন নয়। এ দুটি কাজ করতে নির্বাচনের কোন শর্ত নাই। যেমন- দ্বিতীয় শ্রেণি পেতে আমাদের নির্বাচনের শর্ত ছিল না। আমি দাবী বাস্তবায়নের আন্দোলনের সাথে ঐক্যমতে আসার জন্য পূর্বে তাদেরকে আহবান করেছি এখনও করছি। কিন্তু তারা সে পথে যাবেন না। কেন যাবেন না তা নিশ্চয়ই আপনারা এতক্ষনে বুঝতে পেরেছেন। কাজেই নতুন করে যাতে আমরা ভুল না করি তার জন্যই আজ এ বক্তব্য।
পরিশেষে মহানেতা সম্পর্কে কিছু বলেই শেষ করব। মোফাজ্জল স্যারই একমাত্র বীর পুরুষ যিনি মাউশির দালালি না করে সহকারী শিক্ষকদেরকে নিয়ে মাঠে ছিলেন যার জন্য আমাদের এই অর্জন। অবশ্য আমি এটাকে কোন অর্জন মনে করি না। যদি ৫০% প্রথম শ্রেণি হয় তাহলে এটাকে কিছুটা অর্জন বলা যাবে। তা সম্ভব হবে নির্বাচনের পূর্বে তা নিশ্চিত করতে পারলে। মোফাজ্জল স্যারের সাথে আমি ২০টিরও বেশি জেলা সফর করেছি। দেখেছি তার কষ্ট যন্ত্রণ, সাহস, দৃঢ়তা, শিক্ষকদের প্রতি তার দরদ। শিক্ষকদেরকে যখনই কোচিংবাজ বলা হল তখনই তার হৃদয়ে আঘাত করল। তিনি টাকা হাওলাদ করে প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে -এর প্রতিবাদ করলেন। প্রতিবাদ করলেন ৫১৯ জন শিক্ষকের শোকজ বা বদলি করার হুমকি দেওয়ার জন্য। সব কিছু ঐ কলেজ শিক্ষকদের ষড়যন্ত্র। কিন্তু দুঃখের বিষয় যাদের জন্য তিনি তা করলেন মাউশির বিরুদ্ধে কথা বললেন, সে শিক্ষকরা তাকে একটু ধন্যবাদ পর্যন্ত দিলেন না- দে’য়ার প্রয়োজন মনে করলেননা। এরপর থেকে তার কিছুটা মন দুর্বল হতে শুরু করে। আমাকে বলেন, আমি আর পারছি না প্রস্তুত হও। আমি তোমাদের উপর দায়িত্ব ছেড়ে দিব। নেতাকে বললাম, আপনার সিকি পরিমান যোগ্যতা আমাদের কারও নেই। তিনি বললেন আমি তোমাদের সাথে সব সময় থাকব। কিন্তু ওরা যে আমাকে রাজাকার বানিয়ে দিয়েছে এটা আমি মোকাবেলা করতে পারব না, এজন্য তোমাদের মত মুক্তিযোদ্ধাদের দরকার।
প্রিয় সাথীরা,
আমাদের একটা বিষয় জানা দরকার পেশাজীবী সংগঠন হয় সমপদী লোকজন নিয়ে। সহকারী প্রধান শিক্ষক থেকে উপরের দিকে সবপদ গুলো প্রথম শ্রেণী কাজেই সমিতি করলে সহকারি প্রধান শিক্ষক থেকে উপরের দিকে যারা আছেন তাদেরকে নিয়ে একটা সমিতি হবে। আর আমরা সহকারী শিক্ষক দ্বিতীয় শ্রেণি তাই আমাদের সহকারী শিক্ষকদের নিয়ে একটা আলাদা সমিতি হবে যেটা আমরা করেছি। আমাদেরকে জোর করে তাদের সদস্য করানো অনুচিৎ। এখানেই ষড়যন্ত্রের গন্ধ। আপনাদের আমি কথা দিচ্ছি যদি তারা আলাদা ভাবে থাকে এবং আমাদেরকে আলাদা ভাবে থাকতে দেয়। তাহলে আমরা তাদেরকে পেশা এবং শিক্ষার মানোন্নয়নে যে কোন সময় সর্বাত্মক সহযোগীতা করব। তারা সহকারী শিক্ষকদের বাদ দিয়ে তাদের সমিতির সদস্য অর্থ্যাৎ প্রথম শ্রেণীর সকল কর্মকর্তাদের নিয়ে নির্বাচন দেওয়া হউক তাতে আমাদের কোন আপত্তি থাকবে না। আর সহকারী শিক্ষকদের নিয়ে নির্বাচন করতে হলে তাদের ৫০% প্রথম শ্রেণী করে তারপর তাদেরকে নিয়ে নির্বাচন করতে হবে। এর ব্যতিক্রম হলে নির্বাচন যাতে না করতে পারে তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে। আপনারা যদি বলেন, আমি থাকবো আপনাদের সাথে। আমার প্রস্তাব কার্যকর করা হলে সুন্দর একটা পরিবেশ হবে। ৫০% প্রথম শ্রেণী তাদের জন্য আলাদা সমিতি ৫০% দ্বিতীয় শ্রেণী তাদের জন্য আলাদা সমিতি। পরক্ষণেই ৫০% যখন শুরুতেই তাদের প্রথম শ্রেণি দেওয়ার জন্য আন্দোলন করবে তখন, প্রথম শ্রেণী সমিতি তাদেরকে সমর্থন দিবে। তখনই আমাদের সম্ভব হবে আলাদা অধিদপ্তর ও আলাদা মন্ত্রণালয় এবং মাধ্যমিক শিক্ষা ক্যাডার বাস্তবায়ন করা এবং এটা খুব অল্প সময়েরমধ্যে করা সম্ভব যদি আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকেন।
আমাদের মধ্যে স্বার্থের ভিন্নতা থাকতে পারে। কিন্তু আমাদের পেশার মানোন্নয়নে সবাই একই নীতেতে ঐক্যদ্ধ হওয়ার বিকল্প কোন সুযোগ নাই।
১। দুর্নীতিতে শীর্ষস্থান অধিকার করে (বিভিন্ন পত্রিকার রির্পোর্ট তার প্রমাণ মেলে) কিন্তু তারা থাকেন পর্দার আড়ালে এবং ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এখানে বাহক হিসাবে কাজ করে তাদের বানানো তথাকথিত বাসমাশিস নেতারা। তারাও সামান্য চুক্তিভিত্তিক বকশীষ পান এবং এর পরিমাণ একজন সাধারন শিক্ষকের চাহিদার চেয়ে এত বেশী যে, তারা তা পেয়ে অসাধারণ হয়ে যান। অল্প সময়ের মধ্যে রাজধানী শহরে গাড়ী বাড়ীর মালিক বনে যান। তখন এ অসাধারণ শিক্ষক নেতাদের চলনে বলনে কথনে অবয়বে একটা অভিজাত ভাব চলে আসে। ফলে তারা আর সাধারন শিক্ষক, শিক্ষা, দেশ ও দেশের প্রতি দায়িত্ব এবং তাদের জায়গায় থেকে মাধ্যমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে তথা জাতীয় জীবনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখার সুযোগের কথা ভুলে যান। তাদের মাথায় থাকে ধান্দা একটাই- কীভাবে স্বল্প সমেয়র মধ্যে বিলগেটসের মত টাকার মালিক হওয়া যায়। শিক্ষক হওয়ার কারণে এ বিষয়টা তারা সমাজ থেকে সহজেই শিক্ষা নিতে পেরেছে যে, টাকার মালিক হতে পারলে গাড়ী, বাড়ী ও ক্ষমতা হাতের মুঠোয় চলে আসবে। বাস্তবে তারা তা করেও দেখিয়েছেন। তথা কথিত কলেজ শিক্ষক সমিতির নেতারা এমন লোভী, স্বার্থপর, ভীরু, কাপুরুষ নেতাদের চাটুকারিতার সুযোগে তাদেরকে দিয়ে নানাভাবে সাধারণ শিক্ষকদেরকে নির্যাতন করতে থাকেন। এ ক্ষেত্রে তাদের প্রধান অস্ত্র হচ্ছে টান্সফার করা। ট্রান্সফার চাকুরীর একটা অপরিহার্য অংশ। এ কাজ সকল মন্ত্রণালয়ে একটা সুনির্দিষ্ট নীতিমালার আলোকে হয়। কিন্তু এখানে কোন নীতিমালা নেই। এখানে শুধু যে সকল শিক্ষক একটু বিদ্রোহী হয়ে উঠে অথবা অতি উৎসাহী হয়ে দাবির কথা উপস্থাপন করে। তাদেরকে ট্রন্সফার করা হয়। আর টাকার বিনিময়ে ট্রান্সফার করা হয় এবং তথাকথিত নেতাদের খায়েস অনুযায়ী ট্রান্সফার করা হয়। এর ফলে সাধারণ শিক্ষকদের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয়না। তাদের ভাগ্য যে তিমিরে ছিল সে তিমিরেই থেকে যায়। মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার মান নিম্নমূখী। এভাবে চলতে থাকলে ১৭ কোটি জনসংখ্যার এ উন্নয়নশীল ক্ষুদ্র দেশটি একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় যে দক্ষ কর্মবীর দেশপ্রেমিক দায়িত্বশীল তারুণ্যদৃপ্ত সুনাগরিক দরকার তা তৈরি করতে আমরা চরমভাবে ব্যর্থ হব। আমরা মানে মাধ্যমিক স্তর ব্যর্থ হলে গোটা শিক্ষা ব্যবস্থা ব্যর্থ হবে। তখন জাতি হিসাবে আমরা ব্যর্থ হব। কাজেই এখান থেকে আমাদেরকে দেশাত্ববোধক মানষিকতা নিয়ে বেরিয়ে আসতে হবে। তা করতে হলে আমাদেরকে প্রখ্যাত দার্শনিক সক্রেটিসের সেই বিখ্যাত উক্তি know thyself বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
৩। মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার মানোন্নয়নে যত প্রকল্প আছে সকল প্রকল্পে প্রধান হিসাবে কলেজ শিক্ষকরা বসে আছেন। যাদের মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পর্কে বাস্তব কোন অভিজ্ঞতাই নেই। বিষয়টা এরকম- বাংলাদেশের ক্রিকেট খেলা উন্নয়নের জন্য বিশ্বখ্যাত ফুটবলার মেসিকে কোচ হিসাবে নিয়োগ করা।
৪। গত ২০/০৮/২০০৯ তারিখে ইঞ্জিনিয়ারস ইনস্টিটিউট -এ আমাদের এক সভায় তৎকালীন শিক্ষা বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন (এমপি) এবং পানি সম্পদ মন্ত্রী রমেশ চন্দ্র উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল। তারা অনুষ্ঠানের দিন আসার জন্য প্রস্তুতও ছিলেন। অনুষ্ঠান যথারীতি শুরু হল। সারা বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৩/৪ হাজার শিক্ষক আসলেন। কিন্তু প্রধান অতিথী ও বিশেষ অতিথী আসলেন না। সেদিন শিক্ষকরা অনেক আশা নিয়ে এসেছিলেন। তারা সেদিন মন্ত্রীদ্বয়ের নিকট আশাব্যাঞ্জক কিছু একটা শুনতে চেয়েছিলেন। তারা ভুলে গিয়েছিলেন যেখানে মুসা সেখানে ফেরাউন, যেখানে সিরাজ-উ-দ্দৌলাহ সেখানে মীরজাফর, যেখানে বঙ্গবন্ধু সেখানে মোশতাক আহমেদ। ইতিহাসের এই নিন্দিত খল নায়কদের পদাংক অনুসরন কারী বাসমাশিশ নেতাদের বিরোধীতার কারণে সেদিন শিক্ষকরা সন্তুষ্ট হতে পারেননি। আমি তখন একেবারেই নতুন মোফাজ্জল স্যারের স্নেহধন্য সহযোদ্ধা। আমি একটু বেশি আশাবাদী ছিলাম কাজেই আশাহতের কারণে আমি সেদিন অনেকটা উত্তেজিত হয়ে এলোমেলো বক্তৃতা দিয়েছিলাম। সম্মানীত সহকর্মী শিক্ষকবৃন্দ কোন কিছুতেই সেইদিন সন্তুষ্ট হতে পারলেন না। না প্রধান অতিথীকে পেয়ে না আমাদের বক্তব্য শুনে। সেই দিনে শিক্ষকদের আশাহতের কথা মনে পড়লে এখনো আমার মনে অনেক কষ্ট হয়। সে সময় আমন্ত্রিত অতিথীবৃন্দের না আসার কারণ খুঁজতে গিয়ে যা পেলাম তা অবিশ্বাস করতে পারলে আমাদের দাবি পূরণে এত দেরি হত না। বাসমাশিস -এর জনৈক নেতার বাড়ী টাঙ্গাইল হওয়ার সুযোগে তৎকালীন প্রভাবশালী মাননীয় মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী -এর মাধ্যমে আমাদের আমন্ত্রিত অতিথীদেরকে সভায় আসতে বারণ করেন। এই বে-ইনসানের কাজটি নাকি কোন এক ইনসান করিয়েছেন। ইনসান যে করিয়েছেন তাতে আমার কোন সন্দেহ নেই। কারণ অন্য কোন প্রাণীর আমাদের বিরোধীতা করার কোন যুক্তি খুজে পাইনি। আমার মেধা অতটা প্রখর না হলেও এ বিষয়টা অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসের সাথে বুঝতে পেরেছি যে, বে-ইনসানের কাজ কেবল ইনসানই করতে পারে।
মতিঝিল গভর্নমেন্ট হাই স্কুলে আমরা যখন মিটিং করার জন্য যাই, তৎকালীন প্রধান শিক্ষক অনুমতি না দিলেও আমাদেরকে নিয়ে একটু চা খেয়েছিলেন। এ চা চক্রের সময় কথার বেড়াজালে জড়িয়ে আমাদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছিলেন। আপনারা কার অনুমতি নিয়ে সহকারী শিক্ষক সমিতি করলেন ?
তাঁর প্রশ্ন শুনে আমার সমস্ত শরীরে বিদ্যুৎ চমকে যায়। আমি নেতার চোখের দিকে তাকালাম। তিনি আমাকে শান্ত থাকতে বললেন। নেতার নির্দেশের প্রতি সম্মান দেখিয়ে নিজেকে সংযত করে তাঁর কথার সারমর্ম বুঝার চেষ্টা করলাম। তাতে তিনি যা বুঝানোর চেষ্টা করলেন সহকারী শিক্ষকদের দাবি দাওয়া নিয়ে কোন কথা বলার দরকার নেই। কখন কী করতে হবে তা বাসমাশিস করবে। অর্থাৎ সহকারী শিক্ষকরা হচ্ছেন খাঁচার বন্দি পাখির মত। অনেক আগে ঢাকার চিড়িয়াখানায় গিয়েছিলাম। হঠাৎ নানা প্রজাতির পশু পাখিদের কথা মনে পড়ে গেল। আমি নিজেকে ঐ রকম কিছু ভাবতে শুরু করলাম, কিন্তু মেনে নিতে পারলাম না। কাজেই ঐ হেড স্যারের সুরের সাথে তাল মিলিয়ে বাসমাশিস নেতারা যখন দম্ভ করে বলেন অন্য কোন সমিতি করতে দেয়া হবে না। তখন সাহস সঞ্চয় করার জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ৭ ই মার্চের ভাষন শুনি। একটু শক্তি সঞ্চয় করি। নিজের অধীকার আদায় ও জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য অঙ্গিকার করি। সেই শক্তি দিয়ে দাবি আদায়ের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করতে গিয়ে তথাকথিত বাসমাশিস নেতাদের ন্যাক্কারজনক বিরোধীতা যুক্তিহীন দূর্ব্যহারের কাহিনী আপনাদের কাছে তুলে ধরেছি দু’টি কারণে প্রথমতঃ তাদের চরিত্র ও সামর্থ্য তুলে ধরা। দ্বিতীয়তঃ আপনাদের সমর্থন নিয়ে মোফাজ্জল স্যারকে সামনের দিকে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায়ে সাহস দেওয়া।
৫। এখানেই শেষ না, কত জায়গায় যে তারা আমাদের বিরোধীতা করেছে তার বিবরণ দিতে গেলে এর কলেবর অনেক দীর্ঘ হয়ে যাবে। তারপরও আর দু’টি ঘটনার কথা না বললে তাদের দালালীগিরী পরিষ্কার হবে না। আমাদের প্রধান তিন দফা দাবি সম্বলিত পোস্টার ঢাকা ধানমন্ডি বয়েজ স্কুলে সাঁটাতে গিয়ে আমরা বিব্রতকর অবস্থায় পড়ি। সহকারী প্রধান শিক্ষক অত্যন্ত তুচ্ছ তাচ্ছিল্যের সাথে কমেন্ট করে পিয়নকে আদেশ করে পোস্টার লাগানো বন্ধ করতে। পিয়ন বেচারা প্রথমেই আমাদেরকে সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দাবি সম্বলিত পোস্টার দেখে কিছুই বলেন নি। বসের আদেশে আমাদেরকে পোস্টার লাগাতে নিষেধ করে। তখন আমরা তাকে জিজ্ঞাস করি ‘‘তুমি আমাদের কথা বলনি’’ সে বলল বলেছি, কিন্তু তারপর ও বন্ধ করতে বলেছেন। বাধ্য হয়ে হেড স্যারের রুমে প্রবেশ করে অনুমতি চাইলে তিনি না বলতে পারেনি। পোস্টার সাঁটানো শেষ করে ঐ সহকারী প্রধান শিক্ষক স্যারের রুমে প্রবেশ করে যথাযথ সম্মানের সাথে পোস্টার লাগাতে নিষেধ করার কারণ জিজ্ঞেস করি। স্যার কিছুটা বিচলিত হয়ে পড়েন ইতস্ততঃ বলতে থাকেন স্যরি, আমি মনে করেছিলাম কোন বই প্রকাশনীর পোস্টার। আমি বললাম যদি তাই হয় তাহলে আমাদের কোন দুঃখ নেই। পরে জানতে পারলাম বাসমাশিস নেতারা ফোন করে পোস্টার লাগাতে নিষেধ করেছিল। আমরা যখন সিলেটে যাই ডঃ জাফর ইকবাল স্যারকে আমাদের একটা অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেওয়ার জন্য দাওয়াত শেষ করে যখন ফিরছিলাম তখন স্যারকে বললাম সিলেট জেলা স্কুল থেকে একটু ঘুরে আসি। স্যার বললেন বেশ চল। ডঃ ইকবাল স্যার কোন এক স্যারকে বললেন আমরা আপনাদের স্কুল আসতেছি। আমরা যেতে যেতে তারা ঢাকা যোগাযোগ করেন। ঢাকার নেতারা তাদেরকে আমরা যাতে স্কুলে যেতে না পারি তার ব্যবস্থা নিতে বললেন। সিলেটের সহকর্মীরা এতটা নিচে না নামতে পারলেও আলাপ চারিতায় বুঝিয়ে দেন প্রথম শ্রেণি পাওয়ার জন্য কাউকে ঢাকা হতে আসতে হবে না, প্রথম শ্রেনী আদায়ের জন্য তারাই যতেষ্ট। কিন্তু তিন বছর পরেও প্রথম শ্রেণির মর্যাদা পেলাম না। ঐ স্যারদের গলার টোন এখনও আমার কানে ভাসে। যদি পেতাম তাহলে তাদেরকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করতাম !
৬। আর ঐক্যের ব্যপারে তথাকথিত নেতারা বরাবর মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে আসছে। অবশ্য আমাদের সাথে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার মত যোগ্যতা বা সাহস তাদের কারোরই নেই। কারন আমাদের সাথে ঐক্য করতে হলে ত্যাগ স্বীকার করতে হবে এবং স্বার্থ বিসর্জন দিতে হবে। এবার আপনারাই বলেন এদু’টি গুণের একটিও কি ওনাদের আছে ? এর সঠিক উত্তর পেতে হলে ওনাদের নেতা হওয়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে হবে। এরপর ঐ নেতাদের কর্মকাণ্ড বুঝতে হবে। এক্ষেত্রে আমার অভিজ্ঞটুকু আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই।
বাসমাশিস -এর নেতা হওয়ার প্রক্রিয়া ও তাদের কর্মকাণ্ডঃ
আপনারা সিনিয়র স্যাররা জানেন সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে তাদের নেতা ও পরিবর্তন হয়ে যায়। এক্ষেত্রে ডিজি, ডাইরেকটর স্যারদের সহায়তায় পূর্ববর্তী সরকারের সময়ের নেতারা একটা বিশেষ সভার আহবান করেন। সে সভায় বর্তমান সরকারের সময় কারা নেতা হবেন বা কাদেরকে নেতা বানাবেন ঐ সকল নেতাদের ডাকা হয়। এর পর সকলের সম্মতিক্রমে বর্তমান সরকারের ঘরানার নাম করে নতুন নেতা দিয়ে সমিতির কমিটি ঘোষণা করেন। ঐ সকল নেতাদের গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ার জন্য একটা কার্যকর প্রথা বা পদ্ধতি মেনে চলেন। তা হলো ডিডি ও হেড স্যারদের সহায়তায় সাধারন শিক্ষকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করে সরকারের একজন ভি.আই.পি এমপি বা মন্ত্রির উপস্থিতিতে কমিটি ঘোষণ করে নেন। সেই সভায় ডিজি অফিসের সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তা উপস্থিত থাকেন। যদিও ঐসকল নেতারা ভিতরে এ সরকারের আদর্শ লালন করেন কি না আমার সন্দেহ রয়েছে। কারণ আমি দেখেছি ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চার মত তিন নাম্বার নেতা উভয় আমলেই লাফা লাফি করে,ছে এখনও করছে এবং ভবিষ্যতেও করবে বলে আষ্ফালন ছড়াচ্ছে। আমি দেখেছি বিএনপি আমলের নেতা ছিলেন রেহানা বেগম এবং এমারত হোসেন। আওয়ামিলীগ আসার পর নেতা হয়ে গেলেন সামছুল হক এবং ইনসান স্যার। আবার বিএনপি আসলে আগের নেতাই বহাল থাকেন। পরবর্তীতে আবার আওয়ামীলীগ আসলে পূর্বের নেতারাই পদ দখল করেন। এক্ষেত্রে নেতা পরিবর্তন হয় দুই ভাবে প্রথমতঃ অবসরজনিত কারণে এবং দ্বিতীয়তঃ কোন নেতা ঘোড়াডিঙ্গিয়ে ঘাস খাওয়ার চেষ্টা করলে অর্থাৎ যদি সত্যিকার অর্থে সাধারন শিক্ষকদের ভাগ্যোন্নয়নে বা দাবি আদায়ে কোন ভূমিকা রাখার চেষ্টা করে আর তা যদি হয় ডিজি ডাইরেকটর স্যারদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তবেই তার নাম বাদ যায় এবং তার জায়গা হয় জাহান্নামে। এই হলো নেতা হওয়ার প্রত্রিয়া। আর তাদের কর্মকাণ্ড হলো নেতা হওয়ার পর তারা বড় শপিং মলে যান। কিছু দামি পোশাক পরিচ্ছেদ ক্রয় করেন। অতপর যান ফুলের দোকানে কয়েকটা ফুলের তোড়া সংগ্রহ করে নির্ধারিত দিনে সদলবলে ডিজি ও ডাইরেকটর স্যারদের সাথে সক্ষাত দেন এবং তাদের করণীয় সম্পর্কে দিক নির্দেশনা চান।
তখন স্যাররা যে ছবক দেন তা সংক্ষিপ্তাকারে তুলে ধরা হলো। ছবকটা আমার অনুমান নির্ভর।
১। যে সকল শিক্ষকরা তাদের সুবিধাজনক জায়গায় যেতে ইচ্ছুক তাদের একটা তালিকা প্রস্তুত করবে। তাদের কাছ থেকে অফিস বা চা পানি খরচ গ্রহণ করবে এর রেট সিটির নামকরা স্কুলের জন্য এক রকম, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের জন্য আরেক রকম রেট। বশ্যই তোমাদের জন্য নির্দিষ্ট পার্সেনটেজ থাকবে। জি স্যার ! জি স্যার! জি স্যার ! . . .
২। সিটি, বিভাগ জেলা পর্যায়ে পূর্বের কোন নেতাকে বাদ দেওয়া যাবে না। তাদেরকে কোন রকম হয়রানি করা চলবে না। তাদের সকল সুযোগ সুবিধা বহাল রাখতে হবে। জি স্যার ! জি স্যার ! . . .
৩। কোন শিক্ষক প্রথম শ্রেণির দাবি অথবা আলাদা অধিদপ্তরের ব্যাপারে বেশী বাড়াবাড়ী করলে আমাদেরকে জানাবে। আমরা তার প্রথম শ্রেণির সাধ মিটিয়ে দেব। যেভাবে মোফাজ্জলকে বুঝিয়ে দিয়েছি। তার সকল যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও বাইনেমে গেজেটে তার নাম আসেনি। ট্রান্সফার যে কতবার করেছি তার ইয়ত্তা নেই। জি স্যার ! জি স্যার !
৪। তোমরা প্রথম শ্রেণির জন্য কাজ করছ এবং প্রথম শ্রেণির দাবি কিছু দিনের মধ্যেই পূরণ হয়ে যাবে। একথা যেখানে যাবে সেখানেই বলবে। তবে কোন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় একথা আসতে পারবে না। প্রয়োজনে তাদেরকে দু’একটা কাগজ ও দেখাবে। এটা হবে একটা নাটক। কাজের কাজ কিছুই হবে না। জি স্যার ! জি স্যার! যদি এর ব্যতিক্রম হয় তাহলে নেতার খাতা থেকে তোমার নাম কাটা যাবে। জি স্যার ! জি স্যার !
৫। তোমাদের সমিতির বাইরে অন্য কোন সমিতি কেউ দাঁড় করাতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখবে। জি স্যার ! জি স্যার !
৬। মাধ্যমিক শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য যত প্রকল্প তৈরি করা হবে প্রয়োজনে সব জায়গায় কোন প্রশ্ন ছাড়া স্বাক্ষর করতে হবে। কোন প্রকল্পের কর্মকর্তা হওয়ার দাবি করতে পারবে না। জি স্যার ! জি স্যার !
৭। ছবক শেষে স্যাররা জানতে চান-
কর্মকর্তাঃ বলতো এতে তোমাদের আমাদের কী লাভ হবে ?
নেতৃবৃন্দঃ কী যে বলেন স্যার এইটুকু বুঝবো না আবার !!! আপনারা যে পার্সেন্টেজ দেবেন তাতে আমরা অল্প সময়ে গাড়ী বাড়ীর মালিক হতে পারব। পছন্দমত স্কুলে থেকে সব রকম ব্যবসা করতে পারব। নিয়মিত বউ/স্বামী -এর আদর পাব।
কর্মকর্তাঃ কী বললে হাদারাম !
নেতৃবৃন্দঃ সরি স্যার, বউয়ের সেবা পাব আর বাচ্চাদের সেবা যত্ন করতে পারব। এ পৃথিবীতে স্বর্গের সুখ অনুভব করতে পারব।
কর্মকর্তাঃ আমাদের লাভটা কী, বলতো ?
নেতৃবৃন্দঃ আপনাদের লাভ স্যার ! আপনাদের কথাতো বলাই বাহুল্য। আমরা হচ্ছি গিয়ে আপনাদের তুলনায় পিঁপড়া। জানেনতো স্যার, পিঁপড়ার কাছে পেয়ালাই সমুদ্র। সামান্য পার্সেন্টেজ পেয়ে আমরা কীভাবে দিক বিদিক হয়ে পেয়ালার মধ্যে হাবু ডুবু খাচ্ছি। হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছি । এ পরিস্থিতিতে আপনাদের মত রাঘববোয়ালদের সুবিধার কথা কি স্যার আমাদের মাথায় ঢুকবার কথা ! তবে স্যার আপনাদের জন্য আমাদের একটা দুঃখ আছে।
কর্মকর্তাঃ দুঃখটা কী?
নেতৃবৃন্দঃ বলছি স্যার। স্যার আমাদের সাথে মানে মাধ্যমিকের সকল শিক্ষকদের সাথে আপনাদের আচরণে চলনে বলনে পোশাকে আশাকে এমন একটা বাড়িক্কি ভাব থাকে স্যার, যা সমসের বিন মুসাকেও হার মানায়। মনে হয় আপনাদের টাকার পরিমাণ তাদের চেয়ে কম হবে না। কিন্তু এ কথাটা জাতি জানতে পারে না এটা ভেবেই আমাদের দুঃখ লাগে।
কর্মকর্তাঃ তুমি বেশি কথা বলছ দেখছি! এই মাস্টার কী লাগে বললে?
নেতৃবৃন্দঃ স্যার আনন্দ লাগে !
কর্মকর্তাঃ কেন আনন্দ লাগে ?
নেতৃবৃন্দঃ স্যার আপনাদের সকল আকাম কুকামের যোগ্য ও বিশ্বস্ত বাহক হিসাবে কাজ করতে পেরে, স্যার !
কর্মকর্তাঃ তোমরা ঠিকই বলছ। তোমাদের মত শিক্ষকরা আছ বলেই এখন পর্যন্ত আমাদেরকে কেউ ধরতে পারছে না। তোমাদেরকে দিয়েই তো শিক্ষকদেরকে দমন করতে পেরেছি- পারছি। প্রথম শ্রেণির মর্যাদা ও আলাদা অধিদপ্তর ঠেকাতে পারছি এবং সহকারী শিক্ষক সমিতির মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দিতে পেরেছি। চিটাগাং ও রাজশাহীতে সহকারী শিক্ষক সমিতির সকল নেতাকে আমাদের আয়ত্বে আনতে পেরেছি। এজন্য তোমাদের কাছে আমরা সত্যিই কৃতজ্ঞ।
নেতৃবৃন্দঃ কী যে বলেন স্যার ! আমরা কি এর জন্য কম পেয়েছি স্যার ? . . .
প্রথম শ্রেণির মর্যাদা যেভাবে পাওয়া যেতে পারেঃ
উপরের আলোচনায় আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি যে, ডিজি ও ডাইরেকটর স্যাররা সত্যিকার অর্থে আমাদের দাবি পূরণ হোক চান না। কাজেই তাদের সহযোগীতায় যারা নেতা হন তাদের নিজস্ব কোন ক্ষমতা থাকে না। সুতরাং আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো পূরণ করতে হলে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের বলয়ের বাহিরে এসে পূর্বের মত কর্মসূচি দিয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার থেকে দাবি আদায় করে নিতে হবে। এর কোন বিকল্প নাই। কেননা আমাদের আন্দোলনের ফলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তৎকালীন সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জনাব রাশেদ খান মেনন সুপারিশ করেন আমাদেরকে প্রথম শ্রেণি করার। এছাড়াও সচিব পর্যায়ে বিভিন্ন সময় আমাদের সহকারী শিক্ষক পদটিকে ক্যাডর পদ ঘোষণ করে মাধ্যমিকের জন্য আলাদা ক্যাডার ও আলাদা অধিদপ্তর করার সুপারিশ রয়েছে। কজেই ফাইলওয়ার্ক করে দাবি পূরণ করা সম্ভব হলে অনেক পূর্বেই তা হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। হয়নি শুধু ডিজি ও ডাইরেকটর স্যারদের আন্তরিকতার অভাবে। আপনাদের সহযোগীতা ও সমর্থন পেলে আমরা পূর্বের মত আন্দোলন শুরু করব। এক্ষেত্রে আপনাদের মতামত জানা আমাদের একান্ত প্রয়োজন। আশা করি লেখাটা পড়ে আপনারা আপনাদের সুচিন্তিত মতামত জানাবেন।
পরিশেষে প্রিয় সহকর্মী বৃন্দ,
আপনাদেরকে একটা মনের কষ্টের কথা বলে শেষ করবো। যে নেতা আমাদের জন্য এত ত্যাগ স্বীকার করলেন, স্ত্রী, সন্তান ছেড়ে জেলায় জেলায় ঘুরে বেড়ালেন বুদ্ধিজীবীদের নিকট গিয়ে সময় ব্যয় করলেন। নিজের অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা কখনোই ভাবলেন না। ভাবলে তো মাউশির দালালি করতেন। আর এটা বেছে নিলে তিনিই চ্যাম্পিয়ন হতেন তখন তিনিও ঢাকাতে গাড়ি-বাড়ির মালিক হতেন। যেমন এখন মাউশির অনেক নেতারা গাড়ি-বাড়ির মালিক। চিন্তা করতে পারেন ? মাউশির নেতারা ৬০ লক্ষ টাকার গাড়ীতে চলেন। যিনি শিক্ষকের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য সব ত্যাগ স্বীকার করলেন তাকে মাউশির সহযোগীতার মাধ্যমে সব রকমের যোগ্যতা থাকার পরও তার নাম গেজেটে প্রকাশ করতে দেয়নি। এখন আবার তার বেতন বন্ধ করার ষড়যন্ত্র করছে। এই নেতার এই ত্যাগের ঋণ আমরা কীভাবে পরিশোধ করবো আপনারাই বলুন। যদি আমার দীর্ঘ চিঠির ভাষায় কোন আঘাত পেয়ে থাকেন আমাকে ক্ষমা করে দিবেন। আর যদি মনে করেন ৫০% প্রথম শ্রেণির মর্যাদা এবং নিয়োগবিধি সম্পন্ন করার জন্য নির্বাচন এই মুহুর্তে বন্ধ করা উচিত তাহলে আমাকে বলবেন এবং নির্বাচন করতে দিলেও বলবেন। আপনারা যা চাইবেন আমি আপনাদের সাথে থাকতে চেষ্টা করবো সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আপনাদের সোনালী ভবিষ্যৎ কামনা করি।
লেখকঃ
মোহাম্মদ আলী বেলাল
যুগ্ম আহবায়ক
বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষক সমিতি
(বাসমাসশিস)
ফোনঃ ০১৭৫৭ ৮২০ ৬৪৮
ই-মেইলঃ malibelal175@gmail.com
====================================================================
হায়রে সরকারি মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষক !!!
====================================================================
ইন্টারনেট, ওয়েবসাইট ডিজাইন, ডেভেলপিং, ডোমেইন, হোস্টিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন
কম্পিউটার, ল্যাপটপ, হার্ডওয়্যার, সার্ভিসিং, ট্রেনিং
ড্রাইভার, সফটওয়্যার, এ্যান্টিভাইরাস, কালেকশন
সহ
Leave A Comment