#বাংলা_সাহিত্য_পোস্ট_০২
#হ্যান্ডনোট_প্রাচীন_যুগ_চর্যাপদ_১ম_অংশ

 প্রাচীন যুগ( ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর মতে ৬৫০-১২০০ খ্রি.কিন্তু ড. সুনীতি কুমারের মতে ৯৫০-১২০০ খ্রি.):

বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন যুগের একমাত্র নিদর্শন-চর্যাপদ। এটি মূলত মাত্রাবৃত্ত ছন্দে, পাল আমলে অর্থাৎ ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর মতে (৬৫০-১২০০ খ্রি.) কিন্তু ড. সুনীতি কুমারের মতে (৯৫০-১২০০ খ্রি.) সময়ে রচিত হয়।

 আবিষ্কারক ও আবিষ্কারের ইতিহাস:
🖌 ১৮৮২ সালে রাজা রাজেন্দ্রলাল মিত্র তার ‘ The Sanskrit Buddhist Literature In Nepal’ গ্রন্থে নেপালে প্রাপ্ত সংস্কৃত ভাষায় রচিত বিভিন্ন বৌদ্ধ পুঁথির তালিকা প্রকাশ করেন।
🖌 তার মৃত্যুর পর ব্রিটিশ সরকার মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রীকে বাংলা,বিহার ও আসাম এলাকার পুঁথি সংগ্রহের দায়িত্ব দেন। তিনি রাজেন্দ্রলালের তালিকার সূত্র ধরে ১৮৯৭ ও ১৮৯৮ সালে দুইবার নেপালে যান এবং কিছু পুঁথির কপি সংগ্রহ করেন।

১৯০৭ সালে তিনি পুনরায় (৩য় বার) নেপালে যান এবং নেপালের রাজদরবার সম্বলিত রয়েল লাইব্রেরি বা পুঁথিশালা থেকে থেকে চারটি পুঁথি আবিষ্কার করেন। সেগুলো হল:
১. চর্য্যাচর্যবিনিশ্চয়
২. সরহপাদের দোহা
৩. কাহ্নপাদের /কৃষ্ণপাদের দোহা ও
০৪. ডাকার্ণব
এর মধ্যে চর্য্যাচর্যবিনিশ্চয় ছিল প্রাচীন বাংলা ভাষায় রচিত, আবিষ্কারক যার নাম দিয়েছিল চর্যাপদ।আর বাকি তিনটি সংস্কৃত অপভ্রংশ ভাষায় রচিত।
🖌 প্রথমে আবিষ্কারক মনে করেছিলেন তিনি চর্যাপদের মূলকপি উদ্ধার করেছেন। কিন্তু পরবর্তীতে সকল পণ্ডিতগণ এটা প্রমাণ করেছেন যে, আবিষ্কৃত পুঁথিটি মূলত টীকাকার মুনিদত্তের সম্পাদনায় মূল চর্যাপদ ও চর্যাপদের টীকাভাষ্যের অনুলিপিমাত্র।
✏️নোট: হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বাংলা ও সংস্কৃত’ বিভাগের প্রথম ও প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি বা চেয়ারম্যান (১৮জুন, ১৯২১)।
তার আসল নাম হরপ্রসাদ ভট্টাচার্য। তার উপাধি মহামহোপাধ্যায় ও শাস্ত্রী। চর্যাপদের পুঁথি আবিষ্কারের সময় তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণারত ছিলেন। তিনি পুঁথি সংগ্রহের জন্য নেপাল ও তিব্বতে ভ্রমণ করেন কলকাতার এশিয়াটিক সোসাইটির অর্থায়নে।

 চর্যাপদ বাংলার বাহিরে নেপালে পাওয়ার কারণ:
বাংলার পাল রাজারা ছিলেন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। তাদের আমলেই চর্যাপদ রচিত হয় বৌদ্ধ সহজিয়া সাধকগণ কর্তৃক। কিন্তু পরবর্তীতে পাল রাজাদের হটিয়ে বাংলায় শাসন প্রতিষ্ঠা করেন হিন্দু ধর্মাবিলম্বী ব্রাহ্মণ সেন রাজারা এবং রাজধর্ম হিসেবে স্বীকৃতিলাভ করে হিন্দু ও ব্রাহ্মণ্যসংস্কার ধর্ম। ফলে
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীগণ বাংলা থেকে বিতারিত হন। এমনকি ব্রাহ্মণদের প্রতাপে বৌদ্ধ সাধকগণ নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার্থে বাংলার বাহিরে নেপাল, ভূটান ও তিব্বতসহ অন্যান্য এলাকায় চলে যায়। বৌদ্ধ সাধকগণ তখন অন্যত্র চলে যাওয়ার সময় তাদের ধর্মীয় আধ্যাত্মিক গানের সংকলন চর্যাপদ সাথে নিয়ে চলে যায় বলে চর্যাপদ বাংলার বাহিরে নেপালে পাওয়া যায়।

 প্রকাশকাল:
পুঁথি চারটি আবিষ্কারের পর হরপ্রসাদ শাস্ত্রী দীর্ঘ ৯ বছর গবেষণা করেন এবং ১৯১৬ সালে কলকাতার ‘বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ’ থেকে তার সম্পাদনায় প্রকাশ করেন। প্রকাশকালে তিনি এ চারটি পুঁথির একত্রে নাম দিয়েছিলেন ‘হাজার বছরের পুরান বাঙালা ভাষার বৌদ্ধগান ও দোহা’ ।

 নামকরণ ও ধর্মীয় সংশ্লিষ্টতা:
গৌতম বৌদ্ধের মৃত্যুর পর বৌদ্ধধর্ম ২ ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। যথা:
১. মহাযান ও
২. হীনযান
এখানকার মহাযান থেকে কালক্রমে উৎপন্ন হয় যথাক্রমে-
১. বজ্রযান ও
২. কালচক্রযান
এখানকার বজ্রযান থেকে সহজযানের উৎপত্তি।আর সহজযান পন্থিরা সহজিয়া নামে পরিচিত।
প্রসঙ্গত চর্যাপদ মূলত বৌদ্ধ সহজিয়া সম্প্রদায়ের আধ্যাত্মিক গানের সংকলন যা রচনা করা হয় কমপক্ষে ১২০০ সালে আগে। কিন্তু আমরা দেখলাম এটি আবিষ্কৃত হয় ১৯০৭ সালে অর্থাৎ রচিত হওয়ার কমপক্ষে ৭০০ বছর পরে। এ দীর্ঘ সময় পরে পাওয়ার কারণে এই পুঁথির প্রথম ও মাঝের কিছু পাতা ছেড়া ছিল। এ জন্যই চর্যাপদের আসল নাম পাওয়া যায়না বলে এর আসল নাম নিয়ে মতনৈক্য দেখা দেয়।

🖌 হরপ্রসাদ শাস্ত্রী কর্তৃক প্রাপ্ত পুঁথির নাম- চর্য্যাচর্যবিনিশ্চয় যার শাব্দিক অর্থ কোনটি আচরণীয় আর কোনটি আচরণীয় নহে। কিন্তু তিনি এর নাম দিয়েছিলেন ‘চর্যাপদ’।

কারণ তিনি তার সম্পাদিত গ্রন্থের ভূমিকার লেখেছেন, “১৯০৭ সালে আবার নেপালে গিয়ে আমি কতকগুলি পুঁথি দেখিতে পাইলাম।একখানির নাম চর্য্যাচর্যবিনিশ্চয় ।উহাতে কতকগুলি কীর্তনের গান আছে ও তাহার সংস্কৃত টীকা আছে। গানগুলি বৈষ্ণবদের কীর্তনের মতো, গানের নাম চর্যাপদ।”
🖌 সংস্কৃত টীকাকারক মুনিদত্তের মতে- আশ্চর্যচর্যাচয়
🖌 তিব্বতি অনুবাদের আবিষ্কারক প্রবোধচন্দ্র বাগচী পরিকল্পনা করেন- ‘চর্যাশ্চর্যবিনিশ্চয়’ নাম দেয়ার
🖌 তিব্বতি অনুবাদক কীর্তিচন্দ্রের মতে- চর্যাগীতিকোষবৃত্তি
🖌 আধুনিক পণ্ডিত গণের মতে পুঁথিটির আসল নাম- চর্যাগীতিকোষ আর সংস্কৃত টীকার নাম- চর্যাশ্চর্যবিনিশ্চয়
🖌 সর্বজন গৃহিত ও পরিচিত- চর্যাপদ নামটি।

 রচনকাল:
চর্যাপদের রচনা শুরু হয় পাল আমলে। কিন্তু এর মূল রচনাকাল নিয়ে মতবিরোধ আছে। যেমন:
🖌 ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে- ৬৫০ থেকে ১২০০ সালের মধ্যে (সপ্তম-ত্রয়োদশ শতক)।
🖌 ড. সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে- ৯৫০ থেকে ১২০০ সালের মধ্যে (দশম থেকে ত্রয়োদশ শতক)।
🖌 ড. সুকুমার সেনের মতে-৯০০ থেকে ১৩৫০ সালের মধ্যে রচিত
🖌 রাহুল সাংকৃত্যায়নের মতে- অষ্টম থেকে একাদশ শতকের মধ্যে চর্যাপদ রচিত হয়।

চর্যাপদের বাকি অংশ থাকবে পরবর্তী পোস্টে। অনুধাবন-এর সঙ্গে থাকুন। বাসায় থাকুন, পরিবার পরিজনসহ নিরাপদে থাকুন। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন, আমীন।

ধন্যবাদান্তে
তারিফুল ইসলাম (তারিফ)
বিএসএস, এমএসএস (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)
লেকচারার- অ্যাচিভমেন্ট ক্যারিয়ার কেয়ার
লেখক- অনুধাবন (বাংলা ব্যাকরণ ও সাহিত্য)।

AliDropship is the best solution for drop shipping

________________________________________

শেয়ার করতে পারেন।
ধন্যবাদ
www.compuartsdigital.com
________________________________________

ডিজিটাল কন্টেন্ট ফ্রী সংগ্রহ করতে চাইলে যোগাযোগ করুন- 01711 353 363

এ্যাডভান্সড আইসিটি প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য টিপস / সমাধান সহ 418 পৃষ্ঠার প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল- 1

এ্যাডভান্সড আইসিটি প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য টিপস / সমাধান সহ 418 পৃষ্ঠার প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল- 2


header-2আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য ওয়েব সাইটটি পূর্ণাঙ্গরূপে তৈরি করতে
যোগাযোগ করতে পারেন উপরের ঠিকানায ক্লিক করে।


====================================================================
সকল সংবাদপত্রগুলির লিংক
====================================================================
প্রয়োজনীয়, জরুরি, গুরুত্বপূর্ণ কিছু যোগাযোগ নম্বরের লিংক
====================================================================
শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য, পুরষরা উঁকি দিতে চেষ্টা করবেন না . . . ২
====================================================================
অভ্র বা বিজয় সফটওয়্যার ব্যবহার করে ইন্টারনেট জগতে অতি সহজে বাংলা লেখার উপায় . . .
====================================================================
যারা অভ্রতে লেখেন তারা ক্লিক করতে পারেন লিংকটিতে
====================================================================
একহাজার . . . একটি টিপস
====================================================================
ঘুরে আসুন ইন্টারনেটের অন্ধকার দুনিয়ার ডীপ ওয়েব, ডার্ক ওয়েব সাইটগুলো থেকে।
====================================================================
ইংরেজি বিষয় সহ জেনে নিন প্রয়োজনীয়, গুরুত্বপূর্ণ, মজার কিছু তথ্য . . . ১
====================================================================
ইংরেজি বিষয় সহ জেনে নিন প্রয়োজনীয়, গুরুত্বপূর্ণ, মজার কিছু তথ্য . . . ২
====================================================================
জেনে নিন ইংরেজি সহ প্রয়োজনীয়, গুরুত্বপূর্ণ, মজার কিছু তথ্য . . . ৩
====================================================================
জেনে নিন ইংরেজি সহ প্রয়োজনীয়, গুরুত্বপূর্ণ, মজার কিছু তথ্য . . . ৪
====================================================================