আহা, আমার সাধের ট্রেনিং . . .

যেই ক’দিনই এখানে আছি- আজ পর্যন্ত কাউরো কাছে শুনিনি এই ফেসবুক চালানো কেউ কাউরো কাছ থেকে সিরিয়াসলী শিখেছে, এই যেমনঃ কিছু লেখা পোস্ট করা মানে স্ট্যাটাস আপডেট করা, ছবি আপলোড করে প্রকাশ করা, ভিডিও করে আপলোড দে’য়া, লাইক মারা, মন্তব্য জুড়ে দে’য়া, শেয়ার করা ইত্যাদি ইত্যাদি . . .

কিন্তু সামাজিক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে আকাশচুম্বী জনপ্রিয় অপ্রতিদ্বন্দী এই সাইটটি যে Alexa র‌্যাংকিংয়ে গোটা বিশ্বের ইন্টারনেট জগতে 3 নম্বর অবস্থানে আছে তা বোধকরি ইন্টারনেট ব্যবহারকারি মাত্রই অজানা নয়-

এলেক্সা টপ সাইট

এলেক্সাতে ফেসবুক

ইন্টারনেট জগতে এতবড় একটা মাধ্যম ব্যবহার করতে যেখানে আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা, শিক্ষিত-অশিক্ষিত কাউকেই যেখানে এতটুকু প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয়নি- হয়না। এমনকী কম্পিউটার বিষয়ে আমার মতো একজন গণ্ডমূর্খও ফেসবুকের বাইরেও দু’চারটি সাইট ব্যবহার করতে পারি সেখানে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয়ে নির্মিত একটা সাইট ব্যবহার করতে কোচিং করতে ধর্না দিতে হয় ঐ সাইটেই রেজিস্ট্রেশন করে। নূন্যতম একজন গ্র্যাজুট / মাস্টার্স হয়ে সেখানে আবার ব্রাউজ বা রেজিস্ট্রেশনইবা করব কীভাবে, লগইন- লগঅফ করব কীভাবে, কোথায় ব্রাউজ করে কী এলিমেন্টসগুলো কোথায় কীভাবে খুঁজে পাব তাও আবার আমাকে শিখতে হয় কোন কোচিং সেণ্টারের কৃপায় তাঁদের মহাযজ্ঞানুষ্ঠানের মাধ্যমে।

একটা সাইটে রেজিস্ট্রেশন, লগইন- লগঅফ শিখতে কোচিং করতে সারাদেশে- গোটা ফেসবুকে ঢাকঢোল পিটিয়ে যেই আমি অংশ নিই কোন কোচিং সেণ্টারে- পাওয়ার পয়েন্ট শিখতে দুই-চার-পাঁচ দিনের কয়েকটা কোচিং ক্লাস না পেয়ে গ্রাজুয়েট / মাস্টার্স যেই আমি হায়হুতাস করি, সেই আমিই কিন্তু জাতিকে ইলাস্ট্রেটর, ফটোশপ, পাওয়ার পয়েন্ট শিখানোর ব্রত নিয়ে ওস্তাদ বণে আছি !!! আর আমিই সেই ওস্তাদ সেগুলো শিখিয়েই বইয়ে দিচ্ছি এ প্লাসের বন্যা !!!

আহা, ধন্য ধন্য, আমার ওস্তাদ ধর্ম ধন্য ধন্য . . .

তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারে আমার অগাধ জ্ঞান-গরিমা, আমার নিরলস প্রচেষ্টা সর্বোপরি আমার সুযোগ্য ওস্তাদির কল্যাণেই এ প্লাসের বন্যা বয়। এ প্লাসের বন্যা বইলেও আমি কিন্তু এখনোও পাওয়ার শিখার লাইনেই আছি। আহা, এখনোও পাওয়ার পয়েন্ট শিখতেই দুই-চার-পাঁচ দিনের কয়েকটা কোচিং ক্লাস বগলদাবা করতে আমি কী-ই না করছি। অথচ আমি কিন্তু এগুলো শিখানোর শর্তেই চাকরীটা পেয়েছিলাম !!!

এখানে শেখার মাধ্যমগুলোর মধ্যে অন্যতম প্রধান মাধ্যমটিই দেখি ভিডিও প্রদর্শন। জগতের শিক্ষামূলক প্রায় সকল ভিডিওগুলোই উন্মুক্ত- ফ্রী। কিছু কিছুযে পয়সার বিনিময়ে কিনতে হয়না তা বলছিনা। যেখানে যে ভিডিও / টিপসগুলো যেখান থেকে দেখে কম্পিউটার বিষয়ে আমার মতো একজন গণ্ডমূর্খও ফেসবুকের বাইরে দু’চারটি সাইট ব্যবহার করতে পারি সেখানে শিক্ষামূলক ঐ ভিডিওগুলো ঐ ইউটিউবেই একটা চ্যানেল ওপেন করে দিলেই কি হতোনা ??? গোটা পৃথিবীর শিক্ষামূলক কী এমন বিষয় আছে যা ইউটিউব বা গুগলে নাই ??? তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারন্ধ আমার মতো একজন মূর্খও যদি ইউটিউব থেকে যাবতীয় সকল উপকরণ সংগ্রহ করতে পারি তাহলে ইউটিউবে প্রকাশযোগ্য শিক্ষামূলক ভিডিওগুলো দেখার পদ্ধতি তালিম দিতেই এত আয়োজন ???

হায় আল্লাহ আমাদের সবাইকে ক্ষমা কর (আমীন)।